Daffodil International University

General Category => Common Forum => Topic started by: BRE SALAM SONY on July 25, 2010, 12:06:28 PM

Title: REPLACE NURVUSNESS TAKE KATHAL-টেনশন এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল
Post by: BRE SALAM SONY on July 25, 2010, 12:06:28 PM

সবজি এবং ফল এই দুইভাবে গ্রহণকৃত খাদ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাঁঠাল। কাঁচা কাঁঠাল সবজি এবং পাকা কাঁঠাল ফল হিসেবে অনেক সমাদৃত। অনেক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী কাঁচা কাঁঠালকে অন্যতম বা প্রধান সবজি হিসেবে নিয়মিত গ্রহণ করে থাকে। সবজি বা ফল যাই হোক না কেন পুষ্টিমানের দিক থেকে এদের গুরুত্ব অনেক বেশি। এরপরও দেখা যায় কাঁঠালের পুষ্টিমানের সঠিক ধারণার অভাবে অনেকেই অন্যান্য ফলের তুলনায় কাঁঠালকে কম গ্রহণ করে থাকেন। আবার অনেকে ফলের তুলনায় সবজি হিসেবে কাঁঠালকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বেশি।

কাঁঠাল মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, শ্রীলংকা, ফিলিপাইনে কাঁঠাল জন্মে। যদিও বেশিরভাগ লোকই স্বাদের জন্য সুস্বাদু এই ফল খেতে পছন্দ করে কিন্তু এর স্বাস্থ্যউপযোগিতা সম্পর্কে খুব কমসংখ্যক লোকই অবগত। কাঁঠাল প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ উপাদানসহ নানা ধরনের পুষ্টিগুণে ভরপুর। কাঁঠালে ক্যালরি থাকে খুব অল্প পরিমাণে। কাঁচা কাঁঠাল বা এ্যঁচোড় দিয়ে তৈরি করা হয় চমৎকার মজাদার সবজি তরকারি।

কাঁঠালের বীচিতে আছে প্রচুর পুষ্টি, আর খেতেও সুস্বাদু।

কাঁঠাল একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে উৎপাদিত হয় বলে সবসময় এর সহজলভ্যতা থাকে না তবে বাণিজ্যিকভাবে বা পারিবারিক পর্যায়ে সবজি এবং ফল হিসেবে কাঁঠালকে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

অনেক পুষ্টিসমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও যারা কাঁঠালকে ফল হিসেবে গ্রহণ করতে ততটা অভ্যস্ত নয় তাদের জন্য কাঁঠাল দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা খাবার যেমন-জুস, জ্যাম, জেলি, পিঠা ইত্যাদি হতে পারে অন্যতম বিকল্প। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কাঁঠাল হতে পারে আদর্শ ফল।

(http://www.rannabanna.com/archive/2010.06/images/current_vol_03.jpg)

কাঁঠাল কেন উপকারীঃ

    * কাঁঠাল পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। যারা উচ্চ রক্তচাপ (high blood pressure) এ ভুগছেন তাদের জন্য সুখবর হল পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। আর কাঁঠাল খেলে আপনি এ সুফল ভোগ করতে পারবেন।
    * কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হল ভিটামিন “সি”। প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন “সি” তৈরি হয় না। কেবলমাত্র যেসব খাবারে ভিটামিন “সি” আছে, সেসব খাবার গ্রহণের মাধ্যমেই আমরা ভিটামিন “সি” পেয়ে থাকি। কাঁঠালে আপনি পাবেন খুব ভাল পরিমাণে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আমাদেরকে সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন “সি”।
    * কাঁঠালে চর্বি বা ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম। শক্তি দানকারী এই ফল তাই নিশ্চিন্তে খাওয়া যায়।
    * টেনশন এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল বেশ কার্যকরী। বদহজম রোধ করে কাঁঠাল।
    * কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস- আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
    * আমিষ, শর্করা ও ভিটামিনের যোগান দেয় কাঁঠাল যা দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
    * কাঁঠালের শেকড় অ্যাজমা নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। শেকড় সেদ্ধ করলে যে উৎকৃষ্ট পুষ্টি উপাদান নিষ্কাশিত হয় তা অ্যাজমা নিয়ন্ত্রনে সক্ষম। চর্মরোগের সমস্যা সমাধানেও কাঁঠালের শেকড় কার্যকরী। জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় করে কাঁঠালের শেকড়।
    * কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ। প্রয়োজনীয় এই খনিজ উপাদানের অভাবে রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এই রোগ প্রতিরোধে কাঁঠালের উপকারিতা অনস্বীকার্য।
    * কাঁঠালে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মত হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী গঠনে ভূমিকা পালন করে।
    * ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
    * প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়।গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
    * খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ কাঁঠাল কোষ্ঠকাঠিণ্যের সমস্যা দূর করে ও প্রতিরোধে সাহায্য করে।
    * কাঁঠাল চোখের জন্য বেশ উপকারী। কাঁঠালে আছে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
    * কাঁঠালে আছে ভিটামিন বি৬ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
    * কাঁঠালে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম কেবল হাড়ের জন্য উপকারী নয় রক্ত সংকোচন প্রক্রিয়া সমাধানেও ভূমিকা রাখে।
    * পুষ্টি সমৃদ্ধ কাঁঠালে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ আরও পুষ্টি উপাদান।
    * কাঁঠালে বিদ্যমান প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান আয়রন দেহের এনিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কাঁঠালের বীচির ঔষধি গুন

    * কাঁঠাল শরীর স্নিগ্ধ করে। ত্বকের সমস্যা যেমন - ব্রণ, মেছতা ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা সারাতে কাঁঠাল বেশ উপকারী।
    * পাকা কাঁঠাল বেশি খাওয়ার ফলে যে বদহজম হয় কাঁঠালের বীচি খেলে তা কমে যায়।


কাঁঠালের ব্যবহার

    * কাঁচা কাঁঠাল বা এ্যাঁচোড় দিয়ে তৈরি রেসিপি কেবল মুখরোচকই নয় এর থেকে প্রাপ্ত পুষ্টি উপাদান দেহের জন্য প্রযোজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
    * পাকা কাঁঠালের রস দিয়ে তৈরি আইসক্রীম কুলফি ও জুস বেশ পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু।
    * পাকা ফলের কোষের রস নিংড়ে বের করে তা শুকিয়ে আমসত্বের মত “কাঁঠালসত্ব” তৈরি করা হয়।
    * কাঁঠালের বীচি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। ভেজে খাওয়া ছাড়াও তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁঠালের বীচি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী অনেক তরকারি রান্না করা হয়।
    * কাঁঠালের পোড়া পাতার ছাইয়ের সাথে ভূট্টা ও নারিকেলের খোসা একত্রে পুড়িয়ে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ঘা বা ক্ষত স্থানে ব্যবহার করলে ঘা শুকিয়ে যায়।
    * কোষ খাওয়ার পর যে অংশ উচ্ছিষ্ট থাকে সেটিতে যথেষ্ট পরিমাণে পেকটিন থাকায় তা থেকে জেলি তৈরি করা যায়। এছাড়াও এটি গবাদি পশু বিশেষ করে গরুর অন্যতম প্রিয় খাবার। কাঁঠালের পাতাও গবাদি পশুর প্রিয় খাদ্য।

সবজি হিসেবে কাঁচা কাঁঠাল সংরক্ষণের নিয়মঃ
ডিপ ফ্রিজে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে বা নির্দিষ্ট পরিমাণ লবণ পানির দ্রবণে ডুবিয়ে অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। এছাড়াও কাঁচা কাঁঠাল স্লাইস করে শুকিয়েও (dry) অনেকদিন সংরক্ষণ করতে পারেন।



প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের পুষ্টি উপযোগিতা

পুষ্টি উপকরণ    পরিমাণ
খাদ্যআঁশ (Dietary Fiber)    ২ গ্রাম
আমিষ (Protein)    ১ গ্রাম
শর্করা (Carbohydrate)    ২৪ গ্রাম
চর্বি (Fat)    ০.৩ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম (Calcium)    ৩৪ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেশিয়াম (Magnesium)    ৩৭ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম (potassium)    ৩০৩ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ (Manganese)    ০.১৯৭ মিলিগ্রাম
লৌহ (Iron)    ০.৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ (Vitamin A)    ২৯৭ আই.ইউ
ভিটামিন সি (Vitamin- C)    ৬.৭ মিলিগ্রাম
থায়ামিন (ভিটামিন বি১) (Vitamin –B1)    ০.০৩ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেবিন (ভিটা বি২) (Vitamin –B2)    ০.১১ মিলিগ্রাম
নায়াসিন (ভিটা বি৩) (Vitamin –B3)    ০.৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬(Vitamin B6)    ০.১০৮ মিলিগ্রাম