Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: Mohammad Nazrul Islam on January 28, 2014, 03:29:12 PM
-
শিক্ষা/শিক্ষিতের সংজ্ঞা কি?
সভ্যতার এই উৎকর্ষন মানব জাতির বিশুদ্ধ ভাবনার উন্মুক্ত ফসল। জীবন যাত্রার ধাপ পরিক্রমায় এই উন্নতি বা অগ্রগতি; জীবন জিজ্ঞাসার কাছে অত্যাবশ্যকীয়, যা যুগ যুগ ধরে সমাজ-সভ্যতাকে প্রভাবিত করছে। মান, সময় ও নিরাপত্তা এই তিনটি শব্দই জীবনচক্রকে আবর্তিত করছে বিধায়, পরিশোধীত চিন্তার অধিকারী মানুষকে এই ‘চক্রাকার আর্বতন, ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করছে। জীবনচক্রের এই অন্তহীন পথে, সুশিক্ষাই-মানব মুক্তির একমাত্র পাথেয়; যা দেশ, কাল, জাতি ও মহাকালের স্বাক্ষী।
একথা সত্য যে, আজ অব্দি পৃথিবীতে কোন পন্ডিতই শিক্ষার সুষম সংজ্ঞা প্রদান করতে পারেন নাই। যত গুলো সংজ্ঞা সভ্যতার এই যুগকে প্রভাবিত করছে, তার অধিকাংশ সংজ্ঞাই আত্ম-কেন্দ্রীক-ও ব্যক্তিক অভিজ্ঞতার ধারনা মাত্র। অভিজাত পরিবারের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন শিক্ষিত ব্যক্তিকে ‘হিরার অংটির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘হিরার সু-দৃঢ়তা ও উজ্বলতা এই দু‘টিই একজন শিক্ষিত ব্যক্তির মাঝে দিদিব্যমান থাকা চাই। অনেকেই আরার এই সংজ্ঞাটিতেও তার পারিবারিক আভিজাত্যের ইন্দনের ইংগিত করেছেন।
আবার পাশ্চ্যের পন্ডিরা বলেছেন, Education is the harmonious development to body mind and soul । প্রশ্ন আসে, আত্মার সাথে দেহ ও মনের সমুন্বয়ের ধারনার ধরনের প্রকৃতি কি? অথবা আত্মার বাস্তব ভিত্তি কি? এ ক্ষেত্রে ভাব-বাদীদের মতে, আত্মা এক অদৃশ্য বস্তুু। যার বাস্তব ভিত্তি নাই। কিন্তু অস্তিত্ব আছে। নিদিষ্ট নিয়ম বা শৃংখলার মধ্যে তার অনুভব লক্ষণীয়। অনেকে মনে করেন, আত্মার সাথে দেহ ও মনের ধারনা অনেকটাই রীতি-নীতি ভাব-আদর্শের দ্বারা জীবন পরিচালনা ও সৃষ্টি জগতের কল্যাণমূলক ভাবনায় মুহিত থাকা। সেই অর্থে ধর্মীয় অনুশাসন ও বিশুদ্ধ চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই শিক্ষিত।
একথা সত্য যে, চিন্তার বিশুদ্ধতা শিক্ষিত সমাজকে সত্য প্রচারে ও প্রসারে বিধায়কের ভুমিকা পালনে সাহায্য করে বিধায়- অবশ্য অবশ্যই তাদেরকে চিন্তা বিশ্লেষনে মগ্ন থাকতে হবে এবং সেই সাথে যুগ যুগের ঘটনা-অভিজ্ঞতা ও তার সময় প্রেক্ষাপট বিশ্লেষনও প্রয়োজন।
বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ সৈয়দ মুস্তবা আলী বলেছেন, ‘শিক্ষার আশ্রয় অবশ্য অবশ্যই পুস্তকে; যাতে বহু কাল অব্দি শিক্ষামূলক বিশ্বসভ্যতার জীবন ও সমস্যা সর্ম্পকে সম্মক ধারনা বা বিশ্লেষন রয়েছে। যদিও একথা সত্য যে, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষা ও শিক্ষিত দুটি শব্দই মানুষকে দ্বিধান্বিত করছে। অধিক অথের্র সাথে জীবনের সর্ম্পক, মানুষকে সুশিক্ষার বদৌলতে আত্মকেন্দ্রীক ও সংকীর্ন মনোভাপন্ন করে তুলেছে। তাই শিক্ষিত সমাজও রীতি-নীতি বা বিশুদ্ধ-আদর্শে আটকীয়ে না থেকে, ভোগবাদী ও ক্ষনস্থায়ী ভাবনায় বিভোর রয়েছে। যা শিক্ষিত সমাজের জন্য অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এই জন্য মধ্য যুগের এক কবি অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলেছিলেন, এরা দুর্জন; শিক্ষিত হলেও পরিতাজ্য;।
মানব জীবনের এই সংর্কীন সময়ে শিক্ষিত সমাজকে, অবশ্য অবশ্যই রীতি-নীতি ও বিশুদ্ধ আদর্শভিত্তিক একটি সুনিদিষ্ট পথের দিকে আঙ্গুলী নিদের্শ করা প্রয়ো জন; যার বিশ্লেষন ও ভাবনা গোটা মানব জাতিকে যুগ যুগ ধরে প্রভাবিত করবে। একথা অতিব সত্য যে, গোটা বিশ্বের অধিকাংশ শিক্ষিত সমাজ আজ ভিলাষ- ভাবনা ও নান্দিক শিক্ষার খোলসে ডিম্বাকৃতির রুপ ধারন করেছে। যাতে সময় ও সুযোগ বুঝে অশুদ্ধ-বিশুদ্ধ দুই দিকেই ডিকবাজী খাওয়া যায়। ট্রেডিশন ও কমার্শিয়াল শিক্ষার কাছে তাত্ত্বিক ও বিশুদ্ধ আদর্শীক শিক্ষা আজ নিপীড়িত-নির্যাতিতও বলা যায়।
মুক্ত চিন্তার নামে অশুদ্ধতা মানুষকে গিলে খাচ্ছে। যার দরুন জীবনের কাছে জিজ্ঞাসার প্রশ্ন আজ ব্যতিকে পরিনত হচ্ছে। মর্ডান-ট্রেডিশনে, শিক্ষিত সমাজ ক্ষয়- প্রাপ্ত জীবন ভোগে ব্যতি-ব্যস্ত সময় পার করছে। তা‘হলে এহেন অবস্থায়, শিক্ষা আর শিক্ষিতের সংজ্ঞা প্রশ্নবোধন নয়কি???
-
তাহলে স্বশিক্ষাকে আপনি কিভাবে সজ্ঞায়িত করবেন.........?