Daffodil International University

Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Topic started by: maruppharm on March 14, 2014, 03:01:54 PM

Title: বার্সেলোনায় চোখ ধাঁধানো প্রযুক্তি
Post by: maruppharm on March 14, 2014, 03:01:54 PM
ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসকে বার্সেলোনা কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তার প্রমাণ মিলল স্পেনে ঢুকেই। বার্সেলোনা বিমানবন্দরের বিভিন্ন জায়গা মোবাইল কংগ্রেসের স্বাগত বার্তা, পোস্টার, ব্যানারে সাজানো হয়েছে। আলাদা একটি স্থান বরাদ্দ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা অতিথিদের নিবন্ধনের জন্য। স্বেচ্ছাসেবকেরা বললেন, সম্মেলনে যোগ দিতে বাস-ট্রেনযোগে বার্সেলোনার যেকোনো জায়গায় যাতায়াতের জন্য পরিবহনে কোনো টিকিট কিনতে হবে না। ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে আমিও ছিলাম। স্পেনের বার্সেলোনাতে মোবাইল কংগ্রেস হয়েছিল ২৪ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি।

বর্ণিল আয়োজন: মোবাইল কংগ্রেসের আয়োজন ছিল বর্ণিল। প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্থানে ছিল টাচস্ক্রিন। এতে মোবাইল কংগ্রেসের একটি অ্যাপলিকেশন দেওয়া ছিল। দর্শনার্থীরা কোথায় যেতে চান, সেখানে কোন পথ দিয়ে যেতে হবে এমন নানা বিষয়ের নির্দেশনা ছিল তাতে।
প্রায় ৯৪ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে আয়োজিত এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৮৫ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। মোবাইল ফোন সংযোগদাতা, মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, অ্যাপ, অবকাঠামো, নেটওয়ার্কিং ও ইন্টারনেট সেবাদাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা তাঁদের পণ্য, সেবা ও প্রযুক্তির বিভিন্ন ব্যবহার ও সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছেন।

সম্মেলন কেন্দ্রে নকিয়া, স্যামসাং, এলজি, হুওয়াই, এইচটিসির মতো বিশ্বের যেমন বড় বড় মোবাইল ফোনসেট নির্মাতাদের প্যাভিলিয়ন ছিল, তেমনি টেলিনর, সিংটেলের মতো আন্তর্জাতিক মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নও ছিল। সফটওয়্যারকেন্দ্রিক সেবা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিরাপত্তাদাতা প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নও এতে ছিল। রঙিন প্যাভিলিয়নগুলো ছিল দেখার মতো। তাতে ছিল রংবেরঙের আলোর খেলা। ২২০টি দেশের প্রায় এক হাজার ৭০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

ছিলেন জাকারবার্গ: সম্মেলনের প্রথম দিনের সবচেয়ে বড় চমক ছিল ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বক্তৃতা। সন্ধ্যা ছয়টায় সম্মেলনের ৪ নম্বর হলে তিনি বক্তব্য দেন। বিকেল চারটা থেকেই হলের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। বক্তব্য শুরুর আগেই ওই হলের অবস্থা ‘তিল ঠাঁই নাই’! অনেকে জায়গা না পেয়ে সম্মেলনের বিভিন্ন স্থানে থাকা টিভি পর্দার সামনে দাঁড়িয়ে থেকেই বক্তব্য শুনলেন। জাকারবার্গ বললেন, ফেসবুক হারিয়ে যাবে না, বরং এটিকে মানুষের সঙ্গে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত করা হবে। সঙ্গে তিনি হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষে যুক্তি দিলেন। এটি চালু হলে বিনা মূল্যে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো, চ্যাট করাসহ আরও নানা ধরনের কাজ করা যাবে ফেসবুক থেকে। হোয়াটসঅ্যাপ যে মোবাইল ফোন সংযোগদাতাদের ভাবিয়ে তুলছে, সেটাও বোঝা গেল সম্মেলনের বিভিন্ন আলোচনায়।

প্রসঙ্গ বাংলাদেশ: টেলিনরের প্রধান নির্বাহী ও মোবাইল কংগ্রেসের মহাসচিব জন ফ্রেডরিক বাকসাস বাংলাদেশকে বাতিঘর (লাইট হাউস) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জিএসএমএ গ্লোবাল মোবাইল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পেয়েছে গ্রিন অ্যাওয়ার্ড। গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী বিবেক সুদ ওই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশি মালিকানাধীন বহুজাতিক ভিওআইপি সমাধানদাতা প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস তাদের প্যাভিলিয়নে এনেছিল তাক লাগানো এক প্রযুক্তি। এতে ল্যান্ড ফোন থেকে মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো, ইন্টারনেট ব্যবহার করে কথা বলার সুবিধা পাওয়া যাবে। রিভ সিস্টেমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল হাসান জানান, এখন মুঠোফোনের যুগে অনেকে বাসার ল্যান্ড ফোনটি ব্যবহার করতে চান না। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কল প্রথমে ল্যান্ড ফোনে আসবে। দুইবার কল হওয়ার পর কেউ রিসিভ না করলে সেই কল মুঠোফোনে চলে আসবে।

নতুন নতুন প্রযুক্তির চমক: প্রতি বছরের কংগ্রেসেই থাকে নতুন প্রযুক্তির চমক। আর নিকট ভবিষ্যতের প্রযুক্তিধারা কেমন হতে পারে সে আভাস। এবারও সে ধারা অব্যাহত ছিল। এখানে দেখানো প্রযুক্তিই কিছু দিনের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে গোটা দুনিয়ায়।