Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: moonmoon on March 29, 2014, 10:21:10 PM
-
উপকারী সবজি কচুর লতি
ডিসেম্বর ২৮, ২০১২ খাদ্য ও পুষ্টি ১,০৭২ বার পঠিত মন্তব্য করুন
এই মৌসুমের সবজি কচুর লতি। প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে এই সবজিতে। প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গর্ভস্থ অবস্থা, খেলোয়াড়, বাড়ন্ত শিশু, কেমোথেরাপি পাচ্ছে—এমন রোগীদের জন্য কচুর লতি ভীষণ উপকারী। এতে ক্যালসিয়াম রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে ও চুলের ভঙ্গুরতা রোধ করে। এই সবজিতে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ খুব বেশি। এই আঁশ খাবার হজমে সাহায্য করে, দীর্ঘ বছরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, যেকোনো বড় অপারেশনের পর খাবার হজমে উপকারী পথ্য হিসেবে কাজ করে এটি। দেহের বর্জ্য বের করার জন্য চাপ দিলে যেকোনো অপারেশনের পর সেলাইয়ের স্থান দুর্বল হতে পারে। এর জন্য খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে পানি, শাক-সবজি, বিশেষত কচুর লতি। তবে খেয়াল রাখুন যাঁদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করবেন। বিশেষত যাঁদের কিডনিতে ডায়ালাইসিস হচ্ছে তাঁরা পানি খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হবেন।
ভিটামিন ‘সি’ও রয়েছে কচুর লতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে, যা সংক্রামক রোগ থেকে আমাদের দূরে রাখে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী। ভিটামিন ‘সি’ চর্মরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। কিছু পরিমাণ ভিটামিন ‘বি’ হাত, পা, মাথার উপরিভাগে গরম হয়ে যাওয়া, হাত-পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরা বা অবশ ভাব—এ সমস্যাগুলো দূর করে। মস্তিষ্কে সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচলের জন্য ভিটামিন ‘বি’ ভীষণ জরুরি। এতে কোলেস্টেরল বা চর্বি নেয়। তাই ওজন কমানোর জন্য কচুর লতি খেতে বারণ নেই। খাবার হজমের পর বর্জ্য দেহ থেকে সঠিকভাবে বের হতে সাহায্য করে। তাই কচুর লতি খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে খুব কম। আয়োডিনও বসতি গড়েছে কচুর লতিতে। আয়োডিন দাঁত, হাড় ও চুল মজবুত করে। অনেকেই কচুর লতি খান চিংড়ি মাছ দিয়ে। চিংড়ি মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল। তাই যাঁরা হূদেরাগী, ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলজনিত সমস্যায় আক্রান্ত বা উচ্চ রক্তচাপে (হাই ব্লাড প্রেশারের) ভুগছেন তাঁরা চিংড়ি মাছ শুঁটকি মাছ বর্জন করুন। ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকলে অল্প পরিমাণে চিংড়ি মাছ খেতে পারেন কচুর লতিতে। তবে মাসে এক দিন অবশ্য ছোট চিংড়ি মাছ দিয়ে খেতে পারেন। বড় চিংড়িতে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি, তাই পরিহার করা ভালো। কচুর লতি বাড়ায় না রক্তে চিনির মাত্রা। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা নিঃসংকোচে খেতে পারেন কচুর লতি। তবে কচুতে (যেটা মাটির নিচে থাকে) রয়েছে শর্করার পরিমাণ বেশি, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য পরিমাণে অল্প খাওয়াই উচিত। মাটির নিচে জন্মানো সবজিতে শর্করা ও চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। যেমন: আলু, গাজর, মুলা, ওল, মিষ্টি আলু, কচু ইত্যাদি। কিন্তু কচুর লতিতে চিনির পরিমাণ থাকে খুব সামান্য, তাই কচুর লতি সুস্থ-অসুস্থ সবার জন্যই উপকারী।
ডা. ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ১৭, ২০১২
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/4354#sthash.j14zwmeN.dpuf