Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Topic started by: maruppharm on May 16, 2014, 04:15:40 PM

Title: মাত্র একবারই হেরেছিলেন যিনি
Post by: maruppharm on May 16, 2014, 04:15:40 PM
দুয়ারে বিশ্বকাপ। এ উপলক্ষে বিশ্বকাপের সেরা ১০ কিংবদন্তির সঙ্গে পাঠকদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি আমরা। আজ থাকছে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি গারিঞ্চাকে নিয়ে বিশেষ রচনা—
পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল ম্যানুয়েল ফ্রান্সিসকো দস সান্তোস। কিন্তু ছোটখাটো গড়নের জন্য বোন রোসা আদর করে ছোট্ট পাখি গারিঞ্চার নামে ডাকতেন দস সান্তোসকে। সেই আদরের ছোট্ট পাখি গারিঞ্চাই এক সময় অনেক বড় আসন দখল করে নেন বিশ্ব ফুটবলে। গারিঞ্চাকে বলা হয়ে থাকে ফুটবল ইতিহাসের সেরা ড্রিবলার। উইঙ্গার পজিশনটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা গারিঞ্চা ফিফার শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় হন সপ্তম, নির্বাচিত হন বিংশ শতাব্দীর ‘ওয়ার্ল্ড ড্রিম টিম’-এর সদস্য।
বাঁকানো পায়ের পাতা আর এক পায়ের চেয়ে প্রায় ছয় সেন্টিমিটার ছোট আরেকটি পা নিয়ে জন্মেছিলেন। কিন্তু কিংবদন্তি ফুটবলার হওয়া তাঁর নিয়তি নির্ধারিতই ছিল। কোনো বাধাই তাই শেষ পর্যন্ত বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। তাঁর সময়ে পেলের চেয়েও অনেক বেশি জনপ্রিয় গারিঞ্চা বরং এই বাঁকানো পায়ের জাদুর জন্য পেয়েছিলেন ‘অ্যাঞ্জেল উইথ দ্য বেন্ট লেগস’ উপাধি। বিখ্যাত ‘ব্যানানা শট’ দিয়ে কর্নার থেকেও সরাসরি গোল করেছেন গারিঞ্চা।

১৯৫৪ বিশ্বকাপ আসতে আসতে তত দিনে পেশাদার ফুটবলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। ক্লাব বোটাফোগোর হয়ে খেলছিলেনও চমত্কার। কিন্তু একই পজিশনে খেলা জুলিনহো বা প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য ফুটবলের কারণে ১৯৫৪ বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত ডাক পাননি গারিঞ্চা। এই ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই যেন ১৯৫৮ এবং ১৯৬২—পর পর দুটি বিশ্বকাপ জয় করেন গারিঞ্চা। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮-এর ইতালির পর দ্বিতীয় দল হিসেবে গারিঞ্চার ব্রাজিল জয় করে টানা দুটি বিশ্বকাপ।

১৯৫৮-এর বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে দুজন খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপ অভিষেক হয়। একজনের নাম পেলে, অন্যজন পেলের চেয়ে বছর সাতেকের বড় গারিঞ্চা। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ দুই সন্তান। বরং কেউ কেউ মনে করেন, অসাধারণ ড্রিবলিং, দুরন্ত গতি, দুই পায়ের সমান দক্ষতা, জোরালো শট—সব মিলিয়ে পেলের চেয়ে অনেক বেশি ক্যারিশম্যাটিক ছিলেন গারিঞ্চা। গারিঞ্চা এবং পেলে একই সঙ্গে খেলেছেন এমন ম্যাচে কেউ কখনো হারাতে পারেনি ব্রাজিলকে।

অভিষেক ম্যাচের এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যেই গারিঞ্চা বিপক্ষ দলের তিনজন খেলোয়াড় কাটিয়ে যে শটটি নেন তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এক মুহূর্ত পরেই গারিঞ্চার বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে পেলের দুর্দান্ত শটটিও ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। গারিঞ্চা এর পরও একের পর এক ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন বিপক্ষের রক্ষণ। গারিঞ্চার অভিষেক ম্যাচের প্রথম তিন মিনিটকে বলা হয়ে থাকে ‘দি গ্রেটেস্ট থ্রি মিনিটস ইন ফুটবল হিস্ট্রি’।

শুধু প্রথম ম্যাচেই নয়। বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোতেও একইভাবে প্রতিপক্ষের ঘুম হারাম করে ছাড়েন গারিঞ্চা। ফাইনালে সুইডেনের সঙ্গে ১-০-তে পিছিয়ে থেকেও ব্রাজিল ২-১-এ জেতে। গারিঞ্চার বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকেই গোল দুটি করেন ভাভা। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসেই বিশ্বকাপ জয় করেন গারিঞ্চা। ব্রাজিলও জেতে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা, শুরু হয় বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সাফল্যগাথার।

তবে গারিঞ্চা তাঁর সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলেন ১৯৬২ চিলি বিশ্বকাপের জন্য। দ্বিতীয় ম্যাচেই ইনজুরির কারণে পেলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ায় গারিঞ্চার কাঁধে নতুন দায়িত্ব বর্তায়। কেবল গোল করালেই চলবে না, গোল করতেও হবে। বলাবাহুল্য দক্ষতার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করেন গারিঞ্চা। বিশেষত ইংল্যান্ড ও স্বাগতিক চিলির বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে অসাধারণ খেলেন। ৪ গোল করেন সেই দুই ম্যাচে। পুরো আসরে ভাভা, আমারিলদোদের দিয়ে করান একের পর এক গোল। চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে প্রচণ্ড জ্বর নিয়েও খেলা চালিয়ে যান গারিঞ্চা। ব্রাজিলকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। বিশ্বকাপ শিরোপার পাশাপাশি জিতে নেন আসরের সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল এবং সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুটও।

১৯৬৬-তে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও খেলতে গিয়েছিলেন। গোড়ালির ইনজুরিতে ভুগতে থাকা গারিঞ্চা তবুও প্রথম দুটি ম্যাচে খেলেন। বুলগেরিয়ার সঙ্গে ২-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে গোলও করেন একটি। কিন্তু পরের ম্যাচেই হাঙ্গেরির সঙ্গে ব্রাজিল ৩-১ গোলে হারে। ব্রাজিলের তৃতীয় ম্যাচটিতে মাঠে না নামায় হাঙ্গেরির সঙ্গে ম্যাচটিই হয়ে যায় গারিঞ্চার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে প্রথমবারেই শিরোপাজয়ী গারিঞ্চা ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ৫০ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতেই পরাজিত হন, সেটি ওই শেষ ম্যাচেই।
Title: Re: মাত্র একবারই হেরেছিলেন যিনি
Post by: kwnafi on July 16, 2014, 10:24:41 PM
Excellent Post  :) :)