Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Topic started by: maruppharm on May 26, 2014, 12:12:30 PM

Title: ইতিহাসের দুই নায়ক
Post by: maruppharm on May 26, 2014, 12:12:30 PM
কালো স্যুটের কেতাদুরস্ত লোকটা বারবার অস্থির পায়চারি করছিলেন ডাগ-আউটে। চুইংগাম চিবাতে চিবাতে মাঝে মাঝে সময়টা দেখে নিচ্ছিলেন। সময় ফুরিয়ে আসছে, আর কিছুক্ষণ পরই বেজে উঠবে হৃদয় ভেঙে দেওয়া ‘ডাকাতিয়া বাঁশি’। মুখে জমেছে রাজ্যের বিষণ্নতা। এমন সময় গোল করলেন সার্জিও রামোস। সঙ্গে সঙ্গে মুষ্টিবদ্ধ হাতের উদযাপনে স্বস্তি-উচ্ছ্বাস একাকার। শেষ হলো কার্লো আনচেলত্তির জীবনের সবচেয়ে উৎকণ্ঠার কিছু মুহূর্তের।
নির্ধারিত সময়ের পরও এগিয়ে ছিল অ্যাটলেটিকো। যোগ করা সময়টা পেরোতে পারলেই লা প্রিমেরা তাদের। শেষ মুহূর্তে রামোসের সেই গোল। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ এমন কিছুই আশা করেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করেছিলাম শেষ মুহূর্তে হলেও গোল করতে পারব। সেটা আমরা পেরেছি। গোলটা কি আমরা সৌভাগ্যবশত পেয়েছি? মনে হয় না। ওটা আমাদের প্রাপ্যই ছিল।’
পরশুর ফাইনালে রিয়াল যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে। লা ডেসিমার জিয়নকাঠি এনে ইতালিয়ান এই কোচ নিজেও নতুন এক পঙ্ক্তিতে বসেছেন। ২০০৩ ও ২০০৭ সালে এসি মিলানকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন। কাল রিয়ালকে জিতিয়ে ছুঁয়ে ফেললেন লিভারপুল কোচ বব পেইসলির তিনটি ইউরোপীয় শিরোপা (ইউরোপিয়ান কাপ) জেতার রেকর্ড।
এমনিতে মুখে গাম্ভীর্যের মুখোশ আঁটা থাকে। কিন্তু খেলোয়াড়দের মধ্যে আনচেলত্তি কতটা জনপ্রিয় সেই প্রমাণ পাওয়া গেল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে। রিয়াল কোচ যখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, হুড়মুড় করে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ঢুকে পড়লেন মার্সেলো, ডি মারিয়ারা। নেচে-গেয়ে, টেবিল চাপড়ে মুহূর্তেই সেখানে উৎসবের আবহ আনলেন। আনচেলত্তিও রাশভারী ভাবটা ঝেড়ে ফেলে যোগ দিলেন তাঁদের সঙ্গে। ছাত্রদের কেউ কেউ তাঁকে চুমুও খেলেন । বোঝা গেল, দলটাকে কী দারুণভাবেই না একসূত্রে গেঁথেছেন!
অথচ দায়িত্ব নিয়েছিলেন দলটা যখন মাঝদরিয়ায় বেদিশা । মৌসুমের অর্ধেক যাওয়ার আগেই লা লিগা হারিয়ে ফেলেছিল রিয়াল,
চ্যাম্পিয়নস লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে সেই সেমিফাইনাল-দুঃস্বপ্ন। বড় কোনো শিরোপা ছাড়াই মৌসুম শেষ করার পর হোসে মরিনহোকে নিয়ে উঠে গেল প্রশ্নচিহ্ন। দলে বাজছিল বিভেদের সুর, মরিনহোর বিরুদ্ধে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা ঠারেঠোরে অসন্তোষও জানিয়ে দিয়েছিলেন। মরিনহোর বিদায়টা ছিল অবশ্যম্ভাবী।
উত্তরসূরি আনচেলত্তির ওপর প্রত্যাশা ছিল পর্বতপ্রমাণ। আরাধ্য ‘লা ডেসিমা’ কি এনে দিতে পারবেন? কিন্তু শিরোপাই শুধু এনে দেননি, দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসও সঞ্চারিত করেছেন। তাঁর অধীনেই ডি মারিয়া, মডরিচ, বেনজেমা নিজেদের নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন। ডিয়েগো লোপেজ ও ইকার ক্যাসিয়াসকে ব্যবহার করেছেন কৌশলে। গ্যারেথ বেলের দামটা যে অমূলক নয়, সেটা প্রমাণের জন্য মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সেই লা ডেসিমা এনে দিয়ে বলতে পেরেছেন, ‘এটা কঠিন ছিল, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাদের। আমি খুশি। রিয়াল মাদ্রিদ যেটা খুব করে চাইছিল সেটা জেতাতে পেরেছি।’
অথচ আনচেলত্তির মুখ থেকে হাসিটা প্রায় কেড়েই নিচ্ছিলেন ডিয়েগো সিমিওনে । শেষ পর্যন্ত তাঁকে মাঠ ছাড়তে হলো পরাজয়ের হতাশা নিয়ে । তবে অ্যাটলেটিকো কোচের কাছে প্রাপ্তিই বেশি, ‘এই ম্যাচ থেকে অশ্রু প্রাপ্য নয়। আপনি যখন নিজের সেরাটা ঢেলে দেন আর কিছু আপনি চাইতে পারেন না।’ সত্যিই তো, আড়াই বছর ধরে কম বাজেটের একটা দলকে তিল তিল করে কী লড়াকু করেই না গড়ে তুলেছেন ৪৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন। দলকে লা লিগা জিতিয়েছেন, চ্যািম্পয়নস লিগের ফাইনালে তুলেছেন—মৌসুমের শুরুতে এসব নিশ্চয়ই কল্পনাও করেননি। রয়টার্স, ওয়েবসাইট।
Title: Re: ইতিহাসের দুই নায়ক
Post by: kwnafi on July 16, 2014, 10:22:57 PM
Excellent Post  :) :)