Daffodil International University
Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Children => Topic started by: tasnuva on May 28, 2014, 12:34:54 PM
-
যখন কোনো বস্তু, ব্যক্তি অথবা পরিস্থিতিকে শিশু-কিশোরেরা অহেতুক অনবরত ভয় পায়, যেগুলোকে ভয় পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সে ধরনের ভয়কে অহেতুক ভয় বলে। স্বাভাবিক বা সাধারণ ভয় এবং অহেতুক ভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। সাধারণ ভয় একটি স্বাভাবিক ও সাময়িক প্রতিক্রিয়া, যা নানা কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বয়সের শিশু-কিশোরের মধ্যে দেখা যায়। অহেতুক ভয়ে ভয়ের প্রতিক্রিয়া থাকে তীব্র, অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন ও দীর্ঘস্থায়ী।
অহেতুক ভয় এক ধরনের মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত শিশু-কিশোরেরা বুঝতে পারে যে তাদের ভয় অনেকটাই অমূলক কিন্তু সেটি কীভাবে দমন করবে অথবা ভীতির উদ্রেককারী বস্তুটির সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করবে, তা তারা বুঝতে পারে না। অনেক সময় অহেতুক ভয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তারা অস্বস্তি বোধ করে। তাদের দ্রুত কল্পনাশক্তি বেড়ে যায়, শ্বাস রোধ হয়ে আসে।
অহেতুক ভয়কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
১. বিশেষ অহেতুক ভয় (স্পেসিফিক)
২. সামাজিক ভয় (স্যোশাল ফোবিয়া)
৩· উন্মুক্ত স্থানের ভয়/সমাবেশের ভয় (অ্যাগোরা ফোবিয়া)
বিশেষ অহেতুক ভয়
এ ধরনের ভয়ে আক্রান্ত শিশু-কিশোর সাধারণত কোনো বিশেষ বস্তু বা পরিস্থিতির উপস্থিতিতে তীব্র ভয় অনুভব করে। উঁচু স্থানের ভয়, বন্ধ জায়গার ভয় (লিফট অথবা আন্ডারগ্রাউন্ড), নানা জীবজন্তুর ভয় (বিশেষ করে কুকুর, সাপ, তেলাপোকা, মাকড়সা), রক্তের ভয়, একা থাকার ভয়, ব্যথার ভয়, বজ্রপাতের ভয় ইত্যাদি হলো বিশেষ অহেতুক ভয়ের উদাহরণ। এ ধরনের ভয়ের সূচনা হয় শৈশবকাল থেকে। শতকরা ২·৪ থেকে ৩·৬ জন শিশু-কিশোরের মধ্যে এ ভয় দেখা যায়। বিভিন্ন বয়সে শুরু হয়, যেমন-অন্ধকার ও জীবজন্তুর ভয় শুরু হয় শৈশবকালে এবং যৌবনে পদার্পণের আগেই তা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
সামাজিক ভয়
সামাজিক ভয় অন্যের মাধ্যমে নেতিবাচক মূল্যায়নের ভয়। প্রত্যক্ষণের ভয় অথবা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় যখন কেউ অন্যের সামনে কথা বলা, খাওয়া অথবা অন্য কোনো সামাজিক কাজ ত্যাগ করে, তখন তাকে সামাজিক ভীতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বলা যায়। সামাজিক ভীতিকে মূল্যায়ন বা বিব্রতবোধের ভীতি বলা যেতে পারে। অন্যের উপস্থিতিতে অনেকে কোনো কাজ করতে সাময়িক অস্বস্তি বোধ করলেও তা তারা কাটিয়ে উঠতে পারে; কিন্তু সামাজিক ভীতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যের উপস্থিতিতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও অস্বস্তির অনুভূতি বোধ করে এবং এ ধরনের পরিস্থিতিকে এড়িয়ে চলতে সব সময় সচেষ্ট থাকে।
উন্মুক্ত স্থানের বা সমাবেশের ভয়
উন্মুক্ত স্থানের বা সমাবেশের ভয় জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থান, কোলাহলপূর্ণ জায়গা, দোকানপাট, সিনেমা হল, লোকালয় ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে এই ভয় গড়ে ওঠে। এ ভয়ে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের মনে হয়, এসব স্থানে যাওয়া তাদের জন্য নিরাপদ নয়।
বিশ্বস্ত বন্ধুর সঙ্গে বাইরে বের হলেও অস্পষ্ট একটা দুশ্চিন্তা তাদের মধ্যে থাকে। তাই বাড়িতে ফেরার জন্য খুব অস্থির হয়ে থাকে। তাদের বিচরণক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়ে। অহেতুক ভয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৬০ জন হলো এ ধরনের রোগী। অবাঞ্ছিত ও মাত্রাতিরিক্ত ভয় শিশু-কিশোরদের সুষ্ঠু মানসিক স্বাস্থ্যবিকাশের পরিপন্থী।
তাই এ ধরনের ভয় যেন শিশু-কিশোরদের মনে জন্ম নিতে না পারে, সেদিকে অবশ্যই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে অহেতুক ভয়ের লক্ষণ দেখা দিলে অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন।
Collected