Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: Mafruha Akter on July 05, 2014, 12:02:20 PM

Title: মাংসখেকো গাছ
Post by: Mafruha Akter on July 05, 2014, 12:02:20 PM
তোমার বাসার এককোণে মন খারাপ করে টবের উপর বসে থাকা ছোট্ট ফুলের গাছটা থেকে শুরু করে রাস্তার পাশে ইয়া বড় বড় হাত-পা মেলে দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছ-- সবগুলোই আমাদের জন্য অনেক উপকারী।


ওরা নিজেদের খাবার বানানোর জন্য যে অক্সিজেন বাতাসে ছেড়ে দেয় সেটা নিয়েই তো আমরা বেঁচে থাকি। এছাড়া ঘরের দরজা, আসবাবপত্র, তোমার লেখার কাগজসহ অনেক অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা গাছ থেকে পাই। ওরা আমাদের ছায়া দেয়। আর যে ছোট গাছগুলো ছায়া দিতে পারে না, তারা দেয় টক-মিষ্টি স্বাদের ফল। সুন্দর সুন্দর ফুল। সময় পেলেই ওদের ডালে বসে পাখিরা খানিকটা জিরিয়ে নেয়। গান গায়। আর সেই গান শুনে আমাদের মনটা খুব ভালো হয়ে যায়। এই তো? এসব কথাই তো আজঅব্দি শুনে এসেছ মা-বাবা আর স্কুলের মাস্টারমশাইদের কাছ থেকে?

কিন্তু আজ আমি তোমাদের আর এই জানা কথাগুলো শোনাব না। আজ তোমাদের শোনাব একেবারে অন্যরকম কিছু গাছের কথা। ওরা দেখতে অনেক সুন্দর।

কিন্তু ভয়ের কথা হল ওরা আর সব সাধারণ গাছের মতন সূর্যের আলো, বাতাস আর পানি খেয়ে বেঁচে থাকে না। বেঁচে থাকার জন্য ওরা খায় মাংস। সে মাংস হতে পারে ছোট পোকামাকড়ের অথবা বড় জীবজন্তুর। পৃথিবীতে এমন গাছ আছে মোট ৬৩০ রকমের। আর তাদেরই মধ্যে ৫টি মাংসখেকো গাছের কথা নিচে দেওয়া হল--

১. সারাসেনিয়া

উত্তর আমেরিকার এই মাংসখেকো গাছগুলোকে টেক্সাস, কানাডাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলেই বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এরা দেখতে অনেকটা ফানেলের মতন। আর এই ফানেলের মধ্যেই এরা লুকিয়ে রাখে শিকারের মোক্ষম অস্ত্র-- এক ধরনের তরল পদার্থ। এই তরল পদার্থের মাধ্যমেই নিজেদের সব শিকারকে হজম করে সারাসানিয়া। এদের লম্বামতন মুখটার বাইরের দিকে রয়েছে একটা লম্বা ঢাকনি। বৃষ্টির পানি থেকে নিজেদের ভেতরের তরল পদার্থকে বাঁচাতেই এই ঢাকনি ব্যবহার করে ওরা।

সারাসানিয়ারা দেখতে বেশ সুন্দর হয়। ওদের গন্ধটাও খুব ভালো। আর তাই রং ও গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে খুব সহজেই পোকারা ওদের গায়ে এসে বসে। আর একবার বসলেই হল। ওদের গায়ে লেগে থাকা পিচ্ছিল পদার্থে পা ফসকে পোকাগুলো সোজা চলে যায় সারাসানিয়ার পেটের ভেতরে।

তারপরে আর কী! শিকারের কাজ শেষে বেশ আরাম করে নিজেদের ধরা পোকাগুলো হজম করে নেয় ওরা।

 

২. নেপেনথেস

মাংসখেকো এই গাছটিকে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশে। ওদের আরেকটা নাম হচ্ছে মাঙ্কি কাপ বা বাঁদরপাত্র। প্রায় সময়ই বাঁদররা এসে ওদের ভেতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানি খেয়ে যায়। আর তাই ওদের এই নাম।

নেপেনথেসরা খানিকটা লম্বা আর ঢাকনাওয়ালা হয়। আর ওদের এই ঢাকনার ভেতরে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে তলোয়ারের মতন দেখতে লালচে কিছু পাতা। খুব সুন্দর দেখতে এই গাছগুলোর ভেতরে থাকে খাবার হজম করার জন্য এক ধরনের তরল। শুধু পোকামাকড়ই না, নিজেদের শরীরে জমে থাকা এই তরলের মাধ্যমে নেপেনথেস হজম করে ফেলতে পারে ইঁদুরের মতন ছোট ছোট প্রাণীও। মাঝখানে মানুষখেকো হিসেবেও বেশ নাম কুড়িয়েছিল এরা। তবে কথাটা কতটা সত্যি সেটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি।

৩. জেনলিসা

আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় জন্মানেো এই মাংসোখেকো সবুজ গাছগুলোর কোনো শিকড় থাকে না। ওদের শরীরে থাকে দুই ধরনের পাতা। তাদের মধ্যে কিছু পাতা শিকারকে আকর্ষণ করে আর কিছু গাছের শিকড়ের কাজগুলো করে। পানিতে জন্ম নেওয়া এই গাছগুলোর শরীরের নিচের দিকে থাকে কতগুলো টিউব। আর ঢেউএর সঙ্গে ভেসে কোনো সামুদ্রিক প্রাণী যদি এসে পড়ে ওই টিউবের ভেতরে, তবে সেগুলোকে আটকে ফেলে জেনলিসা আর পরিণত করে খাবারে।

৪.  ডার্লিংটোনিয়া ক্যালিফোর্নিকা

ক্যালিফোর্নিয়া ও ওরিগনে জন্ম নেওয়া এই গাছগুলো বাস করে ঠান্ডা ও ময়লাপূর্ণ পানিতে। এদের আরেক নাম কোবরা লিলি। অন্যান্য মাংসখেকো গাছের মতন এতে কোনো চোরা গর্ত থাকে না। বরং এর ভেতরে থাকে চোখ ধাঁধানো আলো। কোনো পোকা এর ভেতরে গেলে গাছটির নিজস্ব তৈরি উজ্জ্বল আলোর কারণে প্রথমে দিশেহারা হয়ে পড়ে। আর তারপর সামনে এগিয়ে খুঁজে পায় কিছু চুলের মতন পদার্থ। আর সেটা ধরে একবার ভেতরে গেলেই আর ফেরার পথ খুঁজে পায় না প্রাণীরা। ফেরার রাস্তা খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে একসময় ওরা পরিণত হয় মাংসখেকো গাছের খাবারে।

৫. ইউট্রিকুলারিয়া

হলুদ দেখতে এই গাছগুলো জন্মায় পরিষ্কার পানি আর ভেজা মাটিতে। ওদের মূল বাসস্থান তাই অ্যান্টার্কটিকায়। এদের শিকারের জায়গা অন্যসব মাংসখেকো গাছের চাইতে কম হওয়ায় খুব ছোট ছোট প্রাণীই খেতে পারে এই গাছেরা। তবে ইচ্ছেমতন নিজেদের শিকারের ঢাকনা উঁচু-নিচু করতে পারে ইউট্রিকুলারিয়া।
Title: Re: মাংসখেকো গাছ
Post by: fatema_diu on August 04, 2014, 05:36:27 PM
there is a wonderful short story of Shattojit Roy on this tree