Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Ramadan and Fasting => Topic started by: ishaquemijee on July 19, 2014, 06:19:57 PM

Title: রোজা গোপন ইবাদত
Post by: ishaquemijee on July 19, 2014, 06:19:57 PM
রোজা ছাড়া অন্যান্য ইবাদত প্রকাশ্যে পালন করতে হয়। কিন্তু রোজা গোপন ইবাদত। রোজার কথা আল্লাহ ও রোজাদার ভিন্ন অন্য কোনো লোক জানতে পারে না।
দীর্ঘ সময়ের একটানা ইবাদত : রোজা প্রত্যেক বছর একটানা এক মাস আল্লাহর হুকুম মতো পালন করতে হয়। একটানা প্রত্যেক ঘণ্টা, প্রত্যেক মিনিট প্রত্যেক সেকেন্ড আল্লাহর ইবাদতে কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ। রোজার এই প্রশিক্ষণ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের অনুরূপ। এই দীর্ঘ সময় ইবাদতের ফলে একদল ঈমানদার তাকওয়াবান মুমিন বান্দা তৈরি হয়, যারা বাতিলের মোকাবিলায় যোগ্য হতে পারে।
দারিদ্র্যবিমোচন করে : রোজা ধনী ও বিত্তবানদের মনে সহানুভূতির ভাব সৃষ্টি করে। কারণ তারা বুঝতে পারে ুধার যন্ত্রণা। রোজা গরিবকে সাহায্য করার জন্য উৎসাহিত করে। ধনীরা এই মাসেই সাধারণত জাকাত আদায় করে, ফিতরা দান করে, সেহরি ও ইফতারি নিয়ে গরিবদের কাছে এগিয়ে যায়। তাই রমজান মাসকে সহানুভূতির মাস বলা হয়।
অন্তরের রোজাই প্রকৃত রোজা : অন্তর রোজা রাখার অর্থ হলো অন্তরে শিরক স্থান পাবে না, বাতিল আকিদা বিশ্বাস স্থান পাবে না। মনে গর্ব অহঙ্কার, হিংসা-বিদ্বেষ ও লোক দেখানোর মনোবৃত্তি থাকবে না, গোনাহর কাজের প্রতি কোনো আগ্রহ উদ্দীপনা থাকবে না। মনকে এ সব খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখলেই অন্তরের রোজা হয়ে যায়।
পেটের রোজা : পেটের রোজা বলতে বোঝায় পেটকে হারাম খাদ্য ও পানীয় থেকে বাঁচানো। পরীক্ষিত খাবার খাওয়া অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া।
জিহবার রোজা : জিহবার রোজা সম্পর্কে নবী করিম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ ত্যাগ করে না, তার খানাপিনা বন্ধ রেখে রোজা রাখা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নাই।’ (বুখারি)
জিহবা দ্বারা যে অন্যায়গুলো হয় রোজার শিক্ষা অনুযায়ী এগুলো ত্যাগ করতে হবে। যেমন : ১. মিথ্যা বলা ২. ঠাট্টা বিদ্রƒপ করা ৩. গালি দেয়া ৪. অশ্লীল ও খারাপ কথা বলা ৫. নিন্দা করা ৬. চোগলখুরি করা ৭. অপবাদ দেয়া ৮. মোনাফেকি করা ও দু’মুখো কথা বলা ৯. বিনা প্রয়োজনে গোপনীয়তা ফাঁস করে দেয়া ১০. ঝগড়া-ঝাটি করা ১১. হিংসা করা ১২. বেহুদা ও অতিরিক্ত কথা বলা ১৩. বাতিল বা হারাম জিনিস নিয়ে আলোচনা করে আনন্দ লাভ করা ১৪. অভিশাপ দেয়া ১৫. সামনা-সামনি প্রশংসা করা। রোজা রেখে এ সব ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে দূরে থাকাই জিহ্বার রোজা।
চোখের রোজা : চোখের রোজা হচ্ছে হারাম অশ্লীল জিনিস থেকে চোখকে ফিরিয়ে রাখা। রমজান হচ্ছে চোখের প্রশিক্ষণের মাস। এই মাসে চোখকে ঠিক করতে পারলে তা মুমিনের পরবর্তী মাসগুলোতে দিশারী হিসেবে কাজ করবে।
কানের রোজা : কানের রোজার গুরুত্ব অপরীসিম। কান যা শোনে তার জন্য আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। কানের রোজা হচ্ছে গানবাজনা না শোনা এবং মন্দ, খারাপ অশ্লীল কাজ যেন কানে প্রবেশ না করে সেজন্য চেষ্টা করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তরকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’ (সূরা বনী ইসরাইল-৩৬)
রোজার উদ্দেশ্য শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকা নয়। রোজার আসল উদ্দেশ্য আল্লাহর হুকুম মানার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করা। কিন্তু রোজা রেখে যখন মানুষ সুদ খায়, ঘুষ খায়, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সা: নাফরমানি করে, তখন রোজার সুফল পাওয়া সেই রোজাদারের পক্ষে সম্ভব নয়।
এক কথায়, রোজাদার নিজের জিহ্বার হেফাজত করবে, দৃষ্টির হেফাজত করবে, কানের হেফাজত করবে, দেহের অপরাপর অঙ্গগুলো অবৈধ কাজে ব্যবহার না করবে, পেটকে হারাম খাদ্য থেকে মুক্ত রাখবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সার্বক্ষণিক তার স্মরণে নিমগ্ন থাকা আবশ্যক।