Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: maruppharm on July 20, 2014, 04:05:40 PM
-
রক্ত হয়ে উঠেছে ভয়ঙ্কর বিষ! আনাচে-কানাচে নয় বরং শহরের প্রাণকেন্দ্রগুলোতেই চলছে বিষের মতো ভেজাল রক্তের বিকিকিনি।
হেরোইনসেবীর কাছ থেকে রক্ত নিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ক্যান্সারের রোগীকে।
মহাখালী ফ্লাইওভারের শেষপ্রান্তে আমতলীতে এইচ ৬১ ও ৬১/১ এ গড়ে উঠেছে ‘রোগী কল্যাণ ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ডে-কেয়ার সেন্টার’।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইসেন্স নিয়ে ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ ব্লাড ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। তবে দিনে-দুপুরে রক্তের বদলে মানুষের দেহে বিষ প্রবেশ করায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঠিক বিপরীত পাশে অবস্থানরত এ ব্লাড ব্যাংক।
ভবনে বিশাল অফিস স্পেস নিয়ে ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন পাঁচজন। তারা নিজেরাই এখানে বসেন। রয়েছে মেডিকেল অফিসারের কক্ষ, রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র, ক্রসচেকিং কক্ষ। সেন্টারে রয়েছে চারটি বেড।
বৃহস্পতিবার র্যাবের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত মহাখালীর এ ব্লাড ব্যাংকে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে ৩৫ ব্যাগ রক্ত। কোনো রক্তেরই নেই সঠিক পরিচয়। রক্তের বিশুদ্ধতা নির্ণয়ে করা হয়নি হেপাটাইটিস ও এইচআইভিসহ পাঁচটি পরীক্ষা।
অভিযানে অংশ নেওয়া স্বাস্থ্য অধিদতফরের সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. যোগেশ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের রক্ত বহন করে রোগীর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে। এছাড়াও কিডনি ও হার্ট ড্যামেজের (ক্ষতিগ্রস্ত) পাশাপাশি এইচআইভি পজিটিভ, হেপাটাইটিস-বিসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ হতে পারে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দল ব্লাড ব্যাংকে প্রবেশ করলে দেখা যায়, কালু নামে একজন টেকনিশিয়ান এক হিরোইনসেবীর শরীর থেকে রক্ত নিচ্ছেন। এর আগে গত মঙ্গলবারও এই ব্লাড ব্যাংকে টাকার বিনিময়ে রক্ত বিক্রি করেছেন এই মাদকাসক্ত ব্যক্তি।
অন্য আরেকটি কক্ষে তাজুল শেখ নামে এক বৃদ্ধ ক্যান্সার রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হচ্ছে।
তাজুলের ছেলে মজনু শেখ বাংলানিউজকে জানান, তার বাবা ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিন মাস ধরে। রেডিওথেরাপি দেওয়ার জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। এক ব্যাগ তার বড়ভাই দেন এখানেই এসে। আরেক ব্যাগ এক হাজার পাঁচশ টাকার বিনিময়ে কেনা হয় ‘রোগী কল্যাণ ব্লাড ব্যাংক’ থেকে।
তাজুল শেখকে যে রক্ত দেওয়া হচ্ছে, তার ডেনার নম্বর হচ্ছে, ২৭৯৭। তবে গত সোমবারও একই আইডির রক্ত দেওয়া হয়েছে আরেকজনকে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আনোয়ার পাশা বলেন, মাদকসেবী ব্যক্তির কাছ থেকেই এ রক্ত নেওয়া হয়েছিল; যিনি দুইদিনের ব্যবধানে দুইবার রক্ত দিয়েছেন।
মজনু বলেন, ক্যান্সার হাসপাতালে এক দালাল তাদের এ ব্লাড ব্যাংকের ঠিকানা দিয়েছেন। তার বাবাকে রক্ত দেওয়ার আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা করা হয়নি।
আদালত তাৎক্ষণিক পাঁচ মালিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।
ঘটনাস্থলে গ্রেফতার হওয়া রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মাদকাসক্তরা মাত্র দুই থেকে আড়াইশ টাকার বিনিময়ে তাদের কাছে প্রতি ব্যাগ রক্ত বিক্রি করেন। এ রক্ত বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে দেড় থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়াও এক ব্যাগ রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে দুই ব্যাগ রক্ত তৈরি করার কথাও জানান তারা।
এর আগে গত ২২ মার্চ অবৈধ রক্তের ব্যবসার অভিযোগে রাজধানীর বকশিবাজার এলাকার ঢাকা ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সমিশন সেন্টারের মালিকসহ তিনজনকে জেল-জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৈধ লাইসেন্স নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করে আসছিল ‘ঢাকা ব্লাড ব্যাংক’ কর্তৃপক্ষ। র্যাব সদস্যরা ওই ব্লাড ব্যাংকে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন। এ সময় সেখান থেকে ৬৪ ব্যাগ দূষিত রক্ত জব্দ করা হয়। পরে সিলগালা করে দেওয়া হয় ব্লাড ব্যাংকটি।
চার কক্ষের একটি ফ্ল্যাটে পরিচালিত হতো এ ব্লাড ব্যাংক। কোনো চিকিৎসক, টেকনেশিয়ান কিংবা নার্স কেউই নেই। রোগী কল্যাণ ব্লাড ব্যাংকের মতো এখানেও পিয়নরাই চিকিৎসকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতেন।
আনোয়ার পাশা বলেন, এ পর্যন্ত ৩০টির বেশি এ ধরনের ব্লাড ব্যাংক সিলগালা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের ২০১৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের শতকরা ৮১ ভাগ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র অনুমোদনহীন। রক্ত সংগ্রহের সময় বাধ্যতামূলক পাঁচটি পরিসঞ্চালন সংক্রমণ পরীক্ষা করা হয় না শতকরা ৫০ ভাগ কেন্দ্রে। রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের কাজে নিয়োজিত লোকদের শতকরা ৭৪ ভাগ নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিষয়ে ন্যূনতম জ্ঞান রাখেন না।
এ সব কেন্দ্র থেকে সরবরাহ রক্তগ্রহণে সব সময় ঝুঁকি রয়ে যায়। আশঙ্কা থাকে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার। আর বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা ব্লাড ব্যাংকগুলোতে রক্ত পরিসঞ্চালন হয় এমন অধিকাংশ রক্তই মাদকসেবীদের।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। সংগৃহীত রক্তের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। প্রতিনিয়ত অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা, গর্ভবতী মায়ের প্রসবজনিত জটিলতা, ক্যান্সার, লিউকিমিয়া এবং থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর জীবন রক্ষার্থে রক্তের প্রয়োজন হয়।
যোগেশ চন্দ্র বলেন, রক্ত যেমন একদিকে জীবন রক্ষা করে, অন্যদিকে অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে এইডস, হেপাটাইটিস-সি, হেপাটাইটিস-বি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া ছড়ায়। এ সব জটিল রোগ থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে, পেশাদার রক্তদাতা থেকে রক্ত গ্রহণে বিরত থাকা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে রক্ত গ্রহণ করা। - See more at: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/308083.html#sthash.BHddFFdF.dpuf
-
always go for the blood collection of your relatives and known friend.