Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Ramadan and Fasting => Topic started by: ishaquemijee on July 21, 2014, 09:50:31 AM

Title: রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমযান
Post by: ishaquemijee on July 21, 2014, 09:50:31 AM
সকল ধর্মেই রোজা রাখা বা উপবাস থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু ইসলাম ধর্মে অন্যান্য ধর্মের ন্যায় সূর্যের সময় হিসেবে রোজার সময় নির্দিষ্ট করা হয়নি। চাঁদের সময়ের হিসেবে রোজার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। যাতে মানুষ সহজে সারা বছর পরিবর্তিত সময়ে রোযা রাখতে পারে। সৌর মাস অনুযায়ী রোযা রাখার নির্দেশ হলে কোন কোন অঞ্চলে দিন বড় হবার কারণে মানুষের জন্য রোজা রাখা অত্যন্ত কষ্টকর হতো। আবার কোন কোন অঞ্চলের মানুষ দিন ছোট হবার কারণে সহজেই রোজা রাখতে পারতো। চান্দ্র মাসের হিসেবে রোজা রাখার দরুন এই অসাম্যের কোন অবকাশ নেই।

হযরত হাফেজ আবদুল কায়্যিম (রঃ) বলেছেন যে, রোজার যতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় ফরয করা হয়নি। বরং মাধ্যমিক অবস্থায় ফরয করা হয়েছে। কেননা সাহাবায়ে কেরাম ততদিনে তাওহীদ ও নামায ইত্যাদি ইবাদত পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করেছিলেন।” (যাদুন মাআদ)

রোজার মাধ্যমে মানুষ নিজের নাফসের বাড়াবাড়িকে সুনিয়ন্ত্রণ করতে শিখে। তাই সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে, প্রত্যেক জিনিসের যাকাত আছে আর দেহের যাকাত হলো রোযা।” মানুষের স্বভাবে দুই ধরনের শক্তি নিহিত আছে। একটি হলো ফেরেশতাসুলভ শক্তি আর অপরটি হলো পশুসুলভ শক্তি। ফেরেশতাসুলভ শক্তি মানুষকে আল্লাহর মারেফাত অর্জনে সহায়তা করে। আর পশুসুলভ শক্তি আল্লাহর পরিচিতি লাভে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাকওয়া বা খোদাভীতি রূহানী শক্তিকে প্রবল করে।

প্রকৃতপক্ষে মানুষের অন্তরই হলো তাকওয়ার স্থান। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, “ফা আলহামাহা ফুযূরাহা ওয়া তাকওয়াহা”- অর্থাৎ তিনি তাকে তার দুষ্কর্ম ও তার সংযমশীলতা এলহাম করিয়েছেন। যাবতীয় ইবাদত ও নেক আমল তাকওয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয় আর যাবতীয় পাপাচার ফুযুরের আওতাধীন। এ দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তি আদিকাল থেকে মানুষের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “ শোন, দেহের মধ্যে একটি মাংসের টুকরা রয়েছে, যতক্ষণ ওটা ভালো থাকবে, সমস্ত দেহ ততক্ষণ ভালো থাকবে। আর যখন সেটা খারাপ হয়ে যাবে তখন সারা দেহই খারাপ হয়ে যাবে। জেনে রাখ সেটা হলো কালব বা হৃদপি-।” অন্য হাদীসে তিনি সাহাবায়ে কেরামদের (রাঃ) লক্ষ্য করে বলেন, “তোমরা জেনে রাখ তাকওয়ার স্থান এইখানে, অতঃপর তিনি দিলের দিকে ইঙ্গিত করলেন।”

রোজার মাধ্যমে একজন মুসলিম লেবাসী মুসলমান না হয়ে সর্বক্ষেত্রে তাকওয়ার পাবন্দি হতে হবে। একজন মুত্তাকী মুসলিমের ঈমানিয়াত বা বিশ্বাস সম্পর্কীয় বিষয়সমূহ, ইবাদত বা উপাসনা সম্পর্কিত বিষয়াদি, মুআমিলাত বা সাংসারিক সম্পর্কীয় বিষয়াদি, মুআশরাত বা সামাজিক ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়াদি। তামাদ্দুন বা কৃষ্টি সভ্যতা, ইকতেসাদিয়াত বা অর্থনীতি সম্পর্কীয় বিষয়াদি এবং সিয়াসিয়াত বা রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়াদি ইসলামের আদর্শে বাস্তবায়িত ও প্রতিফলিত করা অপরিহার্য। এটাই হলো মানব সমাজের জন্য তাকওয়ার দাবি।