Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: mshahadat on August 03, 2014, 01:11:50 PM
-
আমাদের মাঝেই অনেক জিনিয়াস আছে। তবে সেই সব জিনিয়াসদের কেউ কেউ ছোটবেলা থেকেই তাদের প্রতিভা দেখাতে শুরু করেন। আজ তোমাদের জন্য থাকছে তেমনই কয়েকজন শিশু-জিনিয়াসের গল্প।
১. কিম উং ইয়ং
১৯৬২ সালে অসাধারণ প্রতিভাবান এক শিশু জন্মগ্রহণ করে দক্ষিণ কোরিয়ায়। কয়েকবছরের মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবী শিশু হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করে সে। অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্যি যে মাত্র চার বছর বয়সেই শিশুটি জাপানিজ, কোরিয়ান, জার্মান এবং ইংরেজি ভাষা আয়ত্ব করে। পঞ্চম জন্মদিনের পরপরই সে জটিল সব ডিফারেনসিয়াল এবং ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস সমাধান করতে শুরু করে। সে সময় এক জাপানিজ টিভি অনুষ্ঠানে চাইনিজ, স্প্যানিশ, ভিয়েতনামিজ, টাগালগ, জার্মান, ইংরেজি, জাপানিজ ও কোরিয়ান ভাষায় সে পারফর্ম করে দেখায়। এরপর খু্ব দ্রুতই সে বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান শিশু হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম লেখায়। সেখানে তার আইকিউ লেভেল দেখানো হয় ২১০। যেখানে একজন গড়পরতা সাধারণ মানুষের আইকিউ লেভেল ৭০ থেকে ১৩০ এর মধ্যে।
কিম হ্যানইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে সে গেস্ট স্টুডেন্ট হিসেবে ৩ বছর বয়সে ভর্তি হয়। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানে লেখাপড়া করে। নাসা যখন তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানায় তখন তার বয়স মাত্র ৭। কলোরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইডি শেষ করার সময় তার বয়স ছিল ১৫ থেকে কিছুটা কম। এই লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সময়ই সে নাসাতে নানা গবেষণামূলক কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। পরবর্তীতে দেশে ফিরে সে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও পিএইচডি করে। বর্তমানে কিম চুমবাক ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় যুক্ত আছেন।
২. গ্রেগরি স্মিথ
‘মাত্র দুই বছর বয়সেই যে পড়তে শিখেছিল সে ১০ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকবে, তাতে অবাক হওয়ার কী আছে?’- এমন মন্তব্য ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া গ্রেগরি স্মিথের স্বজনদের। সত্যিই তাই। তবে অবাক হওয়ার পালা এখানেই শেষ নয়। গ্রেগরি মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিশ্ব শান্তি এবং শিশুদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে শু্রু করে এক বিশ্ব ভ্রমন। এর আওতায় সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, মিখাইল গর্ভাচেভ, নোবেল বিজয়ী আয়ারল্যান্ডের বেটি উইলিয়ামস, দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ ডেজমন্ড টুটু, পূর্ব তিমুরের জোসে রামোসসহ আরও অনেক বিশ্ব নেতার সঙ্গে সাক্ষাত করে। জাতিসংঘে শিশুদের অধিকার নিয়ে বক্তৃতাও করে গ্রেগরি। এছাড়াও সে আরও অসংখ্য কাজ করেছে, যা বলে শেষ করা যাবে না।
এ ধরনের সামাজিক কার্যকলাপের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার প্রাথমিক তালিকায় এ পর্যন্ত চারবার তার নাম উঠেছে। তবে শেষ পর্যন্ত পুরস্কারটা তার পাওয়া হয় নি। গ্রেগরি বলেন, ‘আমি কিন্তু পুরস্কার পাওয়ার জন্য কাজ করছি না।’ আসলেই তো, বিশ্বে যদি সত্যিই শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাই তো হবে গ্রেগরির জন্য সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
৩. অক্রিত জেসওয়াল
ভারতে জন্ম নেওয়া অক্রিতের আইকিউ লেভেল ১৪৬। সে কারণেই তাকে ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে সবচেয়ে বুদ্ধিমান শিশু হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
২০০০ সালে অক্রিত সবার নজরে আসে যখন তার বয়স মাত্র ৭ বছর। প্রতিবেশি এক মেয়ের হাত আগুনে মারাত্মকভাবে পুড়ে গিয়েছিল। চিকিৎসার খরচ না থাকার কারণে সে ডাক্তারের কাছে যেতে পারছিল না। আগুনে মেয়েটির হাতের আঙুল একটির সাথে অন্যটি জোড়া লেগে যাচ্ছিল। অক্রিতের কোনো চিকিৎসা সনদ কিংবা অভিজ্ঞতা না থাকার পরেও মেয়েটির হাতে সফল অস্ত্রোপচার করে আঙুলগুলো ঠিক করে দিতে পেরেছিল।
শুধু কী তাই? ১২ বছর বয়সে এক ধরনের ক্যান্সার প্রতিকারের পদ্ধতি আবিস্কার করে সে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। কিছুদিন আগে সে চন্ডিগড় কলেজে বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্স শেষ করেছে। সারা ভারতে অনার্স কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অক্রিতই ছিল সবচেয়ে কম বয়সী।
৪. ফ্যাবিয়ানো লুইগি ক্যারুয়ানা
১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় জন্ম নেওয়া এই বিস্ময় শিশু একইসঙ্গে ইতালিরও নাগরিক। ছোটবেলা থেকেই দাবাখেলায় আগ্রহ ছিলো তার। সুযোগ পেলেই দাবার বোর্ড নিয়ে বসে পড়ত বন্ধুদের সঙ্গে। ফ্যাবিয়ানোর কাছে বারবার হারার কারণে একসময় বন্ধুরাও আর খেলতে চাইত না। তখন ভরসা ছিল কম্পিউটারের দাবা সফটওয়্যারগুলো। সেখানেও অনায়াসেই জিতে যেত ফ্যাবিয়ানো।
এভাবে একে একে জিততে জিততে মাত্র ১৪ বছর ১১ মাস ২০ দিনে সে অর্জন করল গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাব। ইতালি এবং আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী গ্র্যান্ড মাস্টার বনে গেলেন ফ্যাবিয়ানো। ২০০৯ সালে ইলো রেটিংয়ে ২৬৪৯ নম্বর অর্জন করেন তিনি, যা ১৮ বছরের নীচে কারও অর্জন করা সবচেয়ে বেশি নম্বর।
৫. ক্লিওপেট্রা স্ট্রাটন
মলডেভার চিসিনাউয়ে ২০০২ সালের ৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করে ক্লিওপেট্রা। তার ঠিক ৩ বছর পরের কথা। রোমানিয়ায় লাইভ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। টানা দুই ঘন্টা গান গাইবে ক্লিওপেট্রা। প্রতি গানের জন্য আয়োজকদের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ক্লিওপেট্রা পাবে ১০০০ পাউন্ড, বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার টাকা!
সত্যিই তাই, এত কম বয়সে এত টাকা উপার্জনকারী বিশ্বের একমাত্র শিশু গায়িকা ক্লিওপেট্রা। তার বাবা মলডোভান রোমানিয়ান গায়ক পাভেল স্ট্রাটন। তিন বছর বয়সেই ক্লিওপেট্রা বাজারে আনে ‘লা ভার্সটা ডি ট্রি এ্যানি’ শিরোনামের এ্যালবাম-- যার অর্থ ‘তিন বছর বয়সে’। সবচেয়ে কম বয়সে এমটিভি মিউজিক এ্যাওয়ার্ড পাওয়া এই শিশু রোমানিয়ার সিংগার চার্ট অনুসারে এক সময় এ#১ স্কোর করেছিলেন।
৬. মাইকেল কেভিন
১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কেভিন মাত্র চার মাস বয়সেই তার বাবাকে ‘ড্যাডি’ ডেকে সবাইকে চমকে দেয়। ছয় মাসের সময় যখন সে অভিযোগ করে ‘আমার বাম কানে ইনফেকশন হয়েছে’ তখন উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে যান। কেভিন পড়তে শেখে ওর বয়স যখন মাত্র দশ মাস। চার বছর বয়সে কেভিন জন হপকিনস প্রিকোসিয়াস ম্যাথ প্রোগ্রামের জন্য পরীক্ষা দেয় এবং সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে নির্বাচিত হয়। ৬ বছর বয়সে হাইস্কুল এবং ১০ বছর বয়সে সান্তা রোজা জুনিয়র কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে সে। এ সময় সবচেয়ে কম বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম উঠে যায় তার।
এভাবে একের পর এক অর্জন করতে করতে শেষ পর্যন্ত কোটিপতি হয়ে গেছেন তিনি। ‘হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিওনিয়ার’ অনুষ্ঠানে সব প্রশ্নের সঠিক জবাব দিয়ে অর্জন করেন ১০ লাখ ডলার বা ৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
http://bangla.bdnews24.com/kidz/2014/08/02/