Daffodil International University

Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Latest Technology => Topic started by: maruppharm on August 05, 2014, 12:50:25 PM

Title: যে ভয় এখন সবচেয়ে বেশি
Post by: maruppharm on August 05, 2014, 12:50:25 PM
মোবাইল ফোনে কথা বলতে কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করতে ভয় পান? তাহলে আপনার মধ্যে ‘প্রযুক্তি-ভীতি’ রয়েছে। ‘ফোবিয়া’ শব্দটি যখন অনেকেই শোনেন তখন মাকড়সা কিংবা তেলাপোকা দেখে ভয়, উঁচু থেকে নিচের দিকে তাকালে যে ভয় লাগে তাকে বোঝেন । কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো জিনিস থেকেই ভীতি তৈরি হতে পারে। কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোন তার ব্যতিক্রম নয়।

কানাডার ফোবিয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি নিয়ে নানা ধরনের ভীতি ও উদ্বিগ্নতা মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত প্রযুক্তি-ভীতিকে অফিশিয়ালভাবে ক্লিনিক্যাল নীতিমালার মধ্যে ফেলেননি চিকিত্সকেরা।

কানাডার ফোবিয়া বিশেষজ্ঞ মার্টিন অ্যান্টনি প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলকে জানিয়েছেন, ‘কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা প্রযুক্তি ব্যবহারে ভয় পান। নির্দিষ্ট কোনো প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারে তাঁর মধ্যে ভীতি কাজ করতে দেখা যায়।’

সম্প্রতি পাঁচটি বিশেষ প্রযুক্তি-ভীতি বা টেক ফোবিয়া নিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

টেকনোফোবিয়া

প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করেগবেষকেদের মতে, মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি নিয়ে যে ভয় কাজ করে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভীতি হচ্ছে ‘টেকনোফোবিয়া’ বা পুরো প্রযুক্তি জগত্ নিয়েই ভয়। শিল্প বিপ্লবের শুরুর দিক থেকে এই ভীতি সম্পর্কে জানা যায় এবং পরবর্তীতে তা বাড়তেই থাকে। এই ফোবিয়ার সংজ্ঞায় বলা যায়, ‘প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে অস্বাভাবিক ভীতি বা দুশ্চিন্তা।’ কোনো ব্যক্তি বা দলগতভাবে যখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অস্বচ্ছন্দ ও দুর্ভাবনা বোধ করেন বা বিবেচনা করেন তখন তাকে টেকনোফোবিয়া হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

মোবাইল ফোন সব সময় ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে মন সব সময় সতর্ক থাকেনোমোফোবিয়া
মোবাইল ফোন সব সময় ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে মন সব সময় সতর্ক থাকে। মোবাইল হারানো ভয় থেকে মনের মধ্যে জন্ম নেয় এক সমস্যা। গবেষকেরা মোবাইল ফোনের সঙ্গে যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত সমস্যার নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া’; যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল-ফোন ফোবিয়া’। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ৫৩ শতাংশ এবং ২৯ শতাংশ ভারতীয় তরুণেরা এ রোগের শিকার। ৫ বছর আগেও যে রোগের অস্তিত্ব কল্পিত ছিল না, আধুনিকতার সে রোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে চিন্তিত মনোবিজ্ঞানী-মহল।

সাইবারফোবিয়াসাইবার ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির ধারণা হয়, যাঁরা কম্পিউটার ব্যবহার করেন না, তাঁদের কম্পিউটার আক্রমণ করবে
কম্পিউটার ভীতির আরেক নাম ‘সাইবারফোবিয়া’। অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য যে, অনেকেই কম্পিউটার চালাতে বা কম্পিউটারে বসে কাজ করতে মারাত্মক ভীতিতে ভোগেন। টেকনোফোবিয়ারই একটি রূপ হচ্ছে সাইবারফোবিয়া। যখন কেউ কম্পিউটার বা কম্পিউটার সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় ভোগেন বা বেশি ভীত হন তখন সাইবারফোবিয়া জন্ম নেয়। অন্যান্য ভীতির মতো সাইবারফোবিয়াও বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন রকম হতে পারে। এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির ধারণা হয়, যাঁরা কম্পিউটার ব্যবহার করেন না, তাঁদের কম্পিউটার আক্রমণ করবে।

টেলিফোনোফোবিয়া
টেলিফোনোফোবিয়া বলতে মোবাইল বা টেলিফোন নিয়ে ভয় বোঝায় না বরং ফোন কলের উত্তর দেওয়া ও কল গ্রহণ করার ভীতিকে বোঝায়। এই সমস্যাটি গ্লসোফিয়া বা জনসম্মুখে কথা বলার ভীতির মতোই অনেক মানুষের মধ্যে কাজ করে। ফোনের রিং টোন বাজলেই অনেকেই কুঁকড়ে যান এবং অনেক ক্ষেত্রে আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েন। কানাডার ফোবিয়া বিশেষজ্ঞ মারলা ডেবলার বলেন, ‘এটাকে সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার বলা যেতে পারে কারণ এটি সমালোচিত বা বোকা হওয়ার ভয় থেকে তৈরি হয়।’


সেলফিফোবিয়াসেলফিফোবিয়া
সেলফির জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেলফিফোবিয়া বেশি হওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু নয়। এখনও সেলফিফোবিয়াকে চিকিত্সকেরা রোগ বলে স্বীকৃতি দেননি। তবে, ইন্টারনেটের জগতে ইতিমধ্যে সেলফিফোবিয়ার বিষয়টি নানাভাবে এসেছে। সেলফি-ভীতির নানা রকম কারণ দেখা যেতে পারে। অনেকেই নিজের ছবি নিজে তোলাকে ফটোজেনিক বলে মনে করেন আবার অনেকেই একে মনোযোগ আকর্ষণের জন্য কৃত্রিম উপায় বলে ধারণা করেন। আধুনিককালে যেসব ফোবিয়া তৈরি হয়েছে তার মধ্যে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সেলফিফোবিয়া। এ ছাড়াও প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট এনপিআরের করা তালিকায় সাম্প্রতিককালের ফোবিয়ার মধ্যে স্থান পেয়েছে এক্সপায়ারোফোবিয়া (ডোমেইন নেম রিনিউ করতে ভুলে যাওয়ার দুশ্চিন্তা), স্ট্রেচোফোবিয়া (যোগ ব্যায়ামের ভীতি), ফোবিয়াকফোবিয়া (ফোবিয়ার হওয়ার দুশ্চিন্তা থেকে তৈরি ফোবিয়া) ও থ্রেডাফোবিয়া (অনলাইনে কোনো লেখায় কমেন্ট করার ভীতি)।