Daffodil International University

Health Tips => Food and Nutrition Science => Topic started by: taslima on August 10, 2014, 10:53:44 AM

Title: Omega-3 fatty acids, one of the wonders of food ingredients
Post by: taslima on August 10, 2014, 10:53:44 AM
ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। মস্তিষ্কের শতকরা ৬০ ভাগই ফ্যাটি বস্তু। আমাদের সেলমেমব্রেন, হরমোন, সিগনাল ম্যাসেঞ্জার প্রভৃতি তৈরিতে ফ্যাটি এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ফ্যাটি এসিড প্রধানত দুই প্রকার: এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড ও নন-এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড । এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড হলো সেই সমস্ত ফ্যাটি এসিড যা আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না এবং আমরা খাবারের মাধ্যমে তা পেয়ে থাকি।

অন্যদিকে নন-এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীর প্রস্তুত করে থাকে। ফ্যাটি এসিডগুলোর মধ্যে আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড। 

একটি গবেষণায় দেখা যায় অষ্টাদশ শতাব্দীর চেয়ে একবিংশ শতাব্দীতে খাদ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গ্রহণ প্রায় ছয় ভাগের ১ ভাগে নেমে এসেছে, অন্য আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে আমরা আমাদের প্রয়োজনের এক দশমাংশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খাচ্ছি এবং শতকরা ২০ ভাগ লোকের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গ্রহণমাত্রা আশঙ্কাজনক ভাবে কম।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় এমন খাবারের মধ্যে আছে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ (স্যামন, হ্যালিবাট, টুনা, সারডিন্যাস, ম্যাকেরেল, হেরিং), ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিম ও বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি। ইলিশ, রুপচাঁদা ও পাঙ্গাশ মাছে খুব অল্প পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়ার প্রমাণ মেলে। ওমেগা-৬ সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে আছে তিল, তিশি, বাদাম, মিষ্টিকুমরা, দুগ্ধজাত পণ্য, শস্য জাতীয় খাদ্য, সূর্য্যমুখীর তেল প্রভৃতি। আমাদের  খাদ্য তালিকায় যে পরিমাণ এবং যে প্রজাতির মাছ থাকে তা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাবার আশা করা যায় না । এবার দেখা যাক শরীরে ওমেগা-৩ এর কী কী উপকারিতা আছে।

হাইপারট্রাইগ্লাইসেরাইডেমিয়া: ৮৪ জন হাইপারট্রাইগ্লাইসেরাইডেমিয়ার (উচ্চমাত্রার টিজি) রোগীর উপর ১৬ সপ্তাহ ধরে পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় রোজ ৪ গ্রাম করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সেবনকারীদের ট্রাইগ্লাইসেরাইড বেসলাইন থেকে শতকরা ৪৪.৯ ভাগ কমে গিয়েছিল। এই রোগীদের সকলেরই  এইচডিএল (ভালো কোলস্টেরল) )-এর পরিমাণ প্রায় ৯% বেড়েছিলো। ২৫৪ জন রোগীর উপর পরিচালিত আরেক গবেষণায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এর সঙ্গে স্ট্যাটিন গ্রপ-এর ড্রাগ এবং শুধু স্ট্যাটিন গ্রপ-এর  ড্রাগের ব্যবহার করা হয়েছিল। ৮ সপ্তাহ পরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড-এর সাথে স্ট্যাটিন গ্রপ-এর ড্রাগ ব্যবহারকারীদের ট্রাইগ্লাইসেরাইড শতকরা ৪৩.৬ ভাগ কমে গিয়েছিল।

অস্বাভাবিক হৃদকম্পন: করোনারী আর্টারি বাইপাস সার্জারির কিছু রোগীর উপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড দৈনিক ২ গ্রাম ডোজ-এ শতকরা ৫৪ ভাগ রোগীর অস্বাভাবিক হৃদকম্পন কমিয়ে দিয়েছিলো ।

করোনারি আর্টারি ডিজিজ:  এক স্টাডির ফলাফলে দেখা যায় দৈনিক ১ গ্রাম করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড  খেলে হঠাৎ করে হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি শতকরা ৫৪ ভাগ হ্রাস পায়।

স্তন ক্যান্সার: ৩৫,০০০ মধ্যবয়সী নারীর উপর পরিচালিত গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় যারা নিয়মিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গ্রহণ করেন তাদের স্তন ক্যান্সারের হার শতকরা ৩২ ভাগ কমে যায়।

ডিপ ভেইন থ্রোম্বোসিস: ১৫,০০০ রোগীর উপর ১২ বছর ধরে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায় যারা সপ্তাহে অন্তত ১ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খান তাদের ডিপ ভেইন থ্রোম্বোসিসের ঝুঁকি শতকরা ৩০-৪৫ ভাগ কমে যায়।

হার্ট এ্যাটাক:  জাপানে ৮০-৬০ বছরের  ৪১ হাজার ৪৭৮ জন পুরুষের উপর ১৯৯০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায় যারা সপ্তাহে অন্তত ১ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খান তাদের হার্ট এ্যাটাক এর হার শতকরা ৫৬ ভাগ কমে যায়। তবে ডোজ বাড়িয়ে দৈনিক ২ গ্রাম করলে  হার্ট এ্যাটাক এর হার শতকরা ৬৫ ভাগ কমে যায়।

স্ট্রোক:  যারা নিয়মিত সপ্তাহে ৫ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খায় তাদের ইসকেমিক স্ট্রোক এর ঝুঁকি শতকরা ৩১ ভাগ কমে যায়।

এ্যাথেরোস্কে¬রোসিস ইন পোস্ট মেনোপোজাল উইমেন: আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রেশন এ প্রকাশিত স্টাডি হতে জানা যায় ডায়াবেটিস আছে এমন পোস্ট মেনোপোজাল উইমেনরা সপ্তাহে  অন্তত ২ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেলে তাদের এ্যাথেরোস্কে¬রোসিস  হওয়ার সম্ভাবনা  বহুলাংশে হ্রাস পায়।

ওজন হ্রাস ও ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ানো: ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড লেপটিন নামক হরমোন নিঃসরণের  মাধ্যমে আমাদের ক্ষুধা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সেবনে ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি বাড়ে ফলে অল্প ডোজে ইনসুলিন বেশি কাজ করে।

আথ্রাইটিস: ৫শ’ জন রোগীর উপর ১৩টি গবেষণায় দেখা যায়, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস-এ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অত্যন্ত আশাপ্রদ ফলাফল দেয়।

পিরিয়ডের পেইন:  ৪২ জন নারীর উপর পরিচালিত গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় যে সব মহিলা প্লাসিবো খেয়েছিলেন তাদের তুলনায় যারা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেয়েছিলেন তাদের পিরিয়ডের পেইন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

চোখে ছানি পড়া: আরকাইভস অব অফথেলমোলজিতে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বয়সের কারণে বা নির্দিষ্ট বয়সের আগেই চোখে ছানি পড়ার হার কমিয়ে দেয়।  উল্লেখ্য ৫০ বছরের অধিক বয়সী মানুষের অন্ধত্বের প্রধান কারণ চোখে  ছানি পড়া এবং বিশ্বের প্রায় ৩০ মিলিয়ন লোক এ সমস্যায় আক্রান্ত। আরকাইভস-টি থেকে আরও জানা যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেলে বয়সজনিত ছানি পড়া শতকরা ৭৫ ভাগ কমে যায়।

মনোযোগহীনতা: ১০০ বালকের উপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায় যাদের শরীরে  ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এর পরিমাণ কম তাদের পড়াশোনায়ও মনোযোগ কম, এরা খুব সহজেই ভুলে যায়। অন্যদিকে যাদের শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এর পরিমাণ বেশি তাদের কাজ/পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বেশ তীক্ষ্ণ এবং তাদের স্মরণশক্তিও বেশি।

রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা:  জার্নাল অব ইনভেস্টিগেশন ডার্মাটোলজি থেকে জানা যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ইপিডার্মাল ও ডার্মাল স্কিন সেলকে সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনী রশ্মি থেকে  রক্ষা করে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিঃ  আমাদের মস্তিষ্কের শতকরা ৬০ ভাগ ফ্যাটি বস্তু । মস্তিষ্কের কোষের কাজের এর জন্য ইপিএ (ইকোছাপেনটানোইক এসিড) বিশেষভাবে প্রয়োজন। তাই ওমেগা-৩ মস্তিষ্কের কার্য্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

কিশোর বয়সের উগ্রতা কমানো:  ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রেশন-এর এক স্টাডিতে দেখা যায় যে সমস্ত কিশোর নিয়মিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খায় তাদের উগ্রতার (হসটিলিটি) হার অন্য যারা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খায়না তাদের চাইতে শতকরা ১০ ভাগ কম। এই গবেষণায় ৩৫৮১ জন কিশোর-কিশোরীকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছিল।

স্মৃতিভ্রম: আরকাইভস্ অব নিউরোলজিতে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট-এ দেখা যায় যাদের শরীরে উচ্চ মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড আছে তাদের স্মৃতিভ্রম হওয়ার সম্ভাবনা যাদের শরীরে নিম্ন মাত্রার ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড আছে তাদের চাইতে শতকরা ৪৭ ভাগ কম।

প্রোস্টেট/কোলোরেকটাল ক্যান্সার: সুইডেনের ক্যারোলিনা ইন্সটিটিউট অব স্টকহোম কর্তৃক প্রকাশিত  জার্নাল থেকে জানা যায় সপ্তাহে ১-২গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার এর সম্ভাবনা  শতকরা ৪৩ ভাগ কমে যায়। আমেরিকান জার্নাল অব ইপিডেমিওলোজি থেকে জানা যায় যারা নিয়মিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সেবন করে তাদের কোলোরেকটাল ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্য যারা সেবন করে না তাদের চাইতে শতকরা ৪১ ভাগ কম।

ঐ গবেষণাটি ১৪৫৫ জনের উপর পরিচালিত এবং সেবন মাত্রা ছিল সপ্তাহে  ৩-৫ গ্রাম।

শিশুদের এ্যাজমা: ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি অন এ্যালার্জি এন্ড এ্যাজমা ইন চাইল্ডহুড কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বাচ্চা বয়সের এ্যাজমার ঝুঁকি শতকরা ৫০%  ভাগ কমায়।

কিভাবে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়: ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার যেমন, সামুদ্রিক মাছ, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিম (ও-৩ ডিম) বা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড (ও-৩ ক্যাপসুল) খাওয়ার মাধ্যমে ওমেগা-৩ পাওয়া যেতে পারে।

লেখক: মো. আবু জাফর সাদেক, ফার্মাসিস্ট ও সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার
রেনাটা লিমিটেড, বাংলাদেশ
azs_sohel@yahoo.com - See more at: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/313420.html#sthash.5N6n4BB6.dpuf
Title: Re: Omega-3 fatty acids, one of the wonders of food ingredients
Post by: Munni on August 14, 2014, 10:34:44 AM
Informative post.