Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: shan_chydiu on August 27, 2014, 10:42:46 AM
-
ভাইরাস ইবোলা ও এর দ্বারা প্রভাবিত রোগের বর্তমান প্রাদুর্ভাব ইদানীং খবরের প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং অবশ্যই অনেক গুজব ও অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। তবে নিজেকে ও আপনজনদের নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বিভ্রান্তি এড়িয়ে সঠিক তথ্য জানা। এই ফিচারে ইবোলা ভাইরাস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য দেওয়া হল যাতে করে আপনি একে শনাক্ত করতে পারেন এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন।
ভাইরাস ইবোলা রোগটি আসলে কী?
ভাইরাস ইবোলা রোগ Ebola virus disease (EVD) রক্তপ্রদাহজনিত জ্বর হিসাবে পরিচিত যা একটি তীব্র ভাইরাসঘটিত অসুস্থতা । এটি মূলত একটি আরএনএ ভাইরাস । কঙ্গোর ইবোলা নদীর নাম থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে । এটা ইবোলা ভাইরাস Ebolavirus গোত্রের মধ্যে পাঁচটি প্রজাতির তিনটির কারণে হয়ে থাকে। বাকি দুইটি মানুষকে সংক্রমন করতে সক্ষম নয়। দুর্ভাগ্যবশত, জায়ারে ভাইরাস ইবোলা সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতি এবং বর্তমানে এই রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসাবে একে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভয়াবহ এই ভাইরাসটি মানবদেহে রক্তপাত ঘটায়। লিভার, কিডনিকে অকেজো করে দেয়, রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কমিয়ে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত করে। পূর্বে প্রকাশিত তথ্যানুসারে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল ৯০ শতাংশ ।
কোথায় EVD এর আবির্ভাব ঘটে?
বাদুড়ের অন্ত্রের নালীর মধ্যে এই ভাইরাস আশ্রয় গ্রহণ করে বলে মনে করা হয়, যদিও এটি সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার নয়। প্রথম যে মানুষটি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি সম্ভবত শিকারে গিয়েছিলেন এবং একটি সংক্রমিত পশু খেয়ে ফেলায় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেন।সুদানে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে মানুষ দ্বারা । প্রথম প্রাদুর্ভাবে সংক্রমিত ২৮৪ জনের মধ্যে ১৫১ জন মারা যান(প্রায় ৫৩ শতাংশ)।
উপসর্গ কী কী?
ইবোলা ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশের পর প্রায় ৩ সপ্তাহ কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই অবস্থান করতে পারে।তাই একজন ব্যক্তি ইবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন কিনা তা অনেক পরে জানা যায় এবং তার এই রোগের লক্ষণসমূহ পরিলক্ষিত হতে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। রোগীর সর্দি,কাশি, পেটে ব্যথা, জ্বর, বমি ও পাতলা পায়খানা সহ ফ্লু এর মত উপসর্গ দেখা দেয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে লিভার,কিডনি ও হার্ট অকেজো করে দেয় এবং রক্তক্ষরণ হতে থাকে যার ফলে রোগীর মৃত্যু ঘটে । যাইহোক, এই উপসর্গগুলো অনেক রোগের হতে পারে তাই রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হ্যাপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনো রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে কিনা!
আসলে এই ভাইরাস আপনাকে সংক্রামণ করেছে কিনা তা সরাসরি বলা সম্ভব নয়। EVD প্রতিরোধের টিকা বর্তমানে নেই। নেই কোনো কার্যকর ওষুধ। তাই নেই তেমন কোনো চিকিৎসাও।
পূর্বাভাস কী?
এই প্রশ্নের দুর্ভাগ্যবশত একটি স্পষ্ট উত্তর নেই। মৃত্যুর হার কোথাও ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ দাবি করা হয়েছে, এটি একটি বিশাল পরিবর্তন এবং অগত্যা একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনার ভিত্তিতে ব্যবহার করে একটি সঠিক ফলাফল পাওয়া সম্ভব হবে না।ইবোলা আক্রান্ত মানুষের দেহরস অপর কোনো মানুষের দেহের স্পর্শে আসলে সেই ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পরও ভাইরাসটি বেশ কয়েকদিন টিকে থাকে।
ভাইরাসটি এক রোগীর ঘাম, বমি এবং ডায়রিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক রোগ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়াটাও অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ! তবে যদি রোগ দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা যায় এবং সঠিক মেডিক্যাল সাপোর্ট দেয়া যায় তাহলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার জন্য, সিডিসি পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আক্রান্ত এলাকায় ৫০ জন বিশেষজ্ঞদের প্রেরণ করবেন বলে জানিয়েছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা এমন একটি দেশ যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে হাজারের বেশি মানুষ বাস করি। তাই এই ভয়াবহ ভাইরাসটি যাতে কোনোভাবেই আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এখনই। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আফ্রিকার দেশে থেকে আগত যে কাউকে ইমিগ্রেশন পার হবার আগেই মেডিক্যাল চেকআপের ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে এটি খুবই সংক্রামক রোগ।
তারপরও সতর্কতা হিসাবে সবসময় সাবান ও গরম পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন হাত না ধুয়ে চোখ, নাক বা মুখে হাত লাগনো না হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের কোনো প্রকার তরল যাতে আপনার সংস্পর্শে না আসে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয় তবে সাথে সাথে নিজেকে আলাদা করে ফেলতে হবে যাতে অন্য কেউ এ রোগে আক্রান্ত না হয় এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
-
ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য :)
-
Thankful for your informative post
-
Very informative post. Thanks for sharing.
-
Thanks for sharing. We need to know and be careful.