Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Hajj => Topic started by: Lazminur Alam on September 02, 2014, 06:45:45 PM
-
বিশ্বের অন্যতম মেডিকেল জার্নাল বিএমজে বা ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল এবং ল্যানসেট-এ হাজিদের স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয় বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণালব্ধ নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। সে আলোকে এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে হাজিদের স্বাস্থ্য-ঝুঁকির প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতামূলক সাধারণ ব্যবস্থা সম্পর্কে লিখেছেন- শামছুল হক রাসেল
হজ পালনের অদম্য আকাক্সক্ষা নিয়ে হজের উদ্দেশে যাত্রা করার প্রাক্কালে একজন হাজির কাছে কোনো কিছুকেই আর বাধা মনে হয় না। এ মানসিকতার বশবর্তী হয়ে অনেকে অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়েন। হজের শুরুতেই তাই শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ধীরস্থির থাকতে হবে। অহেতুক ছোটাছুটি কাম্য নয়। হজের সময় রোদ এড়াতে কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে রাখা যেতে পারে। দরকার হলে মাথায় সাদা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। গরমজনিত ঝুঁকি এড়াতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। রাতে ভ্রমণ করতে হবে। কিছুটা লবণাক্ত খাবার এ সময় দরকার হয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতি মেটানোর জন্য। শরীরের পানিস্বল্পতা এড়াতে সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে সৃষ্ট শারীরিক অবসাদ কাটাতে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। এ খাবার স্যালাইন ডায়রিয়া হলেও উপকারে আসে। কাজেই সঙ্গে নিতে পারেন খাবার স্যালাইনও।
বেশির ভাগ হাজিই গলাব্যথা, কাশি, ঘন ঘন হাঁচি, সর্দি এবং জ্বরে ভুগে থাকেন। হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য এমনটি হয়ে থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সাধারণ কিছু ওষুধ যেমন ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল, হাঁচি-সর্দির জন্য ফেক্সোফেনাডিন জাতীয় ওষুধ (ট্যাবলেট ফেনাডিন/ফিক্সাল/ফেক্সো), কাশির জন্য এডোভাস সিরাপ কিংবা সিনেকড ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে। এগুলো অল্প কিছু সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ভালো। এ ছাড়া হজ পালনের উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে মাল্টিভিটামিন (ফিলওয়েল গোল্ড/সিলভার) গ্রহণ করা উচিত। কারণ হজের দিনগুলোতে সুষম খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। সে ঘাটতি পূরণে প্রতিদিনই মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। যদি কারও অ্যাজমা-হাঁপানি থাকে, তখন অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে হজব্রত পালনের পথে কিভাবে চলতে হবে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে। কারণ হজ পালনের সময় বেশকিছু ধূলিময় স্থান অতিক্রম করতে হতে পারে। কাছে রাখতে হবে হাঁপানির প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ।
হজব্রত পালনের সময় হাজিদের অনেক হাঁটতে হয়। কাজেই দেশে থাকতেই হাঁটার প্রস্তুতি নিতে হবে। হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। হজের জন্য রওনা হওয়ার ৬-৮ সপ্তাহ আগে থেকেই হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে হঠাৎ অতিরিক্ত হাঁটার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে খিল ধরতে পারে কিংবা মাংসপেশি কিছুটা ব্যথা হতে পারে। হজ পালনের সময় ভিড়ের মধ্যে অবস্থানের কারণে যে কোনো সংক্রামক রোগ এড়াতে হোটেল বা অবস্থানস্থল থেকে বের হওয়ার সময় মুখে মাস্ক বা মুখোশ পরা যেতে পারে। যারা চশমা ব্যবহার করেন, অতিরিক্ত একজোড়া চশমা সঙ্গে নেওয়া উচিত। অনেক সংক্রামক ব্যাধি আছে যেগুলো টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। যেমন অনেকেই মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত সমস্যা এবং ফ্লু-এর জন্য ভ্যাকসিন নিয়ে থাকেন। হাজিদের হাজি ক্যাম্পেই এ ধরনের ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। হজে যাওয়ার অন্তত দুই মাস আগে দাঁতের চেকআপ করানো উচিত। হজে ডায়াবেটিস রোগীর পায়ের যতœ নেওয়া খুবই জরুরি। পায়ে নরম অথচ টেকসই জুতা পরতে হবে। তা না হলে সামান্য আঘাতে পায়ে ডায়াবেটিসজনিত বড় ক্ষত তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া অন্য ব্যক্তিদেরও পায়ের যতœ হিসেবে নখ কাটা উচিত। যিনি শারীরিকভাবে বেশি ফিট হজ পালনে তিনি কম স্বাস্থ্য-ঝুঁকিতে পড়বেন। আর এ কারণে হজের জন্য রওনা হওয়ার আগেই নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। শরীর ফিট করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে গুছিয়ে নিতে হবে নিয়মিতভাবে গ্রহণ করা সব ওষুধ ও তার প্রেসক্রিপশন। বাদ যাবে না চশমা ও জুতার মতো দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহƒত উপকরণগুলোর কোনোটিই। অসুস্থ হলে দেরি করা যাবে না। খবর দিতে হবে কাছাকাছি অবস্থিত মেডিকেল ক্যাম্পে।