Daffodil International University
Faculty of Science and Information Technology => Science and Information => Topic started by: khairulsagir on September 08, 2014, 03:38:16 PM
-
হাতেই চালানো যাবে যন্ত্রটি। নাম ফ্রিডম ফোর। প্রাণঘাতী বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারবে এ যন্ত্র। এ জন্য নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। নিউজিল্যান্ডের অটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের তৈরি ফ্রিডম ফোর ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে যন্ত্রটি ইতিমধ্যে জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটি ব্যবহার করে ভাইরাসজনিত ডিএনএ অনুক্রম শনাক্ত করতে পেরেছেন। ফ্রিডম ফোর তৈরির গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা (অ্যানাটমি) বিভাগের শিক্ষক জো-অ্যান স্ট্যানন। তিনি বলেন, ভাইরাস শনাক্তকরণের এ যন্ত্র ব্যবহার করে আক্রান্তদের জরুরি পরিস্থিতিতেও বাঁচানো সম্ভব হবে। কোনো প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তখন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হবে এ যন্ত্র। প্রচলিত পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করে সাধারণত কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে নিয়ে ভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। এটি বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
নতুন যন্ত্রটি প্রাথমিকভাবে পশুপাখির চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হলেও একটি মানুষের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী অণুজীব শনাক্তকরণেও ব্যবহার করা যাবে। তবে সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদন লাগবে। বিশ্বজুড়ে ফ্রিডম ফোর নামের যন্ত্রটি বিক্রির জন্য অটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক শাখা অটাগো ইনোভেশন এবং ইউবিকিটোম নামের নিউজিল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ইউবিকিটোমের প্রধান নির্বাহী পল পিকারিং মনে করেন, ভবিষ্যতে লোকজন নিজেদের বাড়িতেই যন্ত্রটি ব্যবহার করবেন। আর ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার ফলাফল তাঁরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজেদের চিকিৎসক বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জৈব প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান লাইফ টেকনোলজিসের সাবেক নির্বাহী পিকারিং বলেন, টেলিফোনের সাহায্যে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে ফ্রিডম ফোর একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আর যন্ত্রটি লাখ লাখ পরিমাণে বিক্রি করে বিশ্ববাজারে বড় রকমের বাণিজ্যও হতে পারে।
স্ট্যানন বলেন, ফ্রিডম ফোর একটি বিশ্বমানের উদ্ভাবন। ডানেডিনে যে যন্ত্রটি দেখানো হয়েছে, তার আরও আধুনিকায়ন বা উন্নয়ন সম্ভব। ‘অত্যন্ত মেধাবী’ একদল বিজ্ঞানী ছয় বছরের প্রচেষ্টায় যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। জিটেক প্লাস্টিকস লিমিটেডসহ ডানেডিনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এ গবেষণাকাজে নানা রকম সহায়তা করেছে।
যন্ত্রটি একটি সাধারণ ল্যাপটপ কম্পিউটারের মতো ভারী। এটির ব্যাটারি একবার চার্জ করার পর ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে। ফ্রিডম ফোর হাতের তালুতে নিয়েই কাজ করা যায়। এটি ল্যাপটপের সঙ্গে যুক্ত করা যায় অথবা তার ছাড়াই স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করে তথ্য পাঠানোর কাজ করা যায়। তবে সে জন্য ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণের উপযোগী বিশেষ সফটওয়্যার সেই স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে আগে থেকেই ইনস্টল করে নিতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে ডিএনএ অনুক্রম শনাক্তকরণের জন্য যন্ত্রটি পরিমাণগত পিসিআর নামের একধরনের প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে কাজ করে। ফলে সংগৃহীত নমুনার তথ্য পরবর্তী সময়ে আর প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজন পড়ে না।
ফ্রিডম ফোরের একটি নমুনা নিউজিল্যান্ডের পরিবেশ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা ইনস্টিটিউট স্বাধীনভাবে পরীক্ষা করে দেখেছে এবং যন্ত্রটিকে গবেষণাগারভিত্তিক বেশ বড় ধরনের ডিএনএ বিশ্লেষণব্যবস্থায় কার্যকর একটি যন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যন্ত্রটির প্রধান সুবিধা হচ্ছে, এটি সহজে বহন করা যায়। ফলে পশুপাখির খামারের কর্মীদের ব্যবহারের জন্য এটি বিশেষ উপযোগী হবে। স্ট্যানন বলেন, বড় এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত খামারের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আক্রান্ত পশুপাখির কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ ও তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণের জন্য চিকিৎসকেরা ফ্রিডম ফোর ব্যবহার করে দ্রুত ফলাফল পাবেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত যন্ত্রটির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরই প্রথম চালান পাঠানো হবে।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।
Source: www.prothom-alo.com