Daffodil International University

IT Help Desk => Telecom Forum => Topic started by: ariful892 on September 18, 2014, 05:56:47 PM

Title: Threat in ICT sector in USA
Post by: ariful892 on September 18, 2014, 05:56:47 PM
30-11-2013: দৈনিক বণিক বার্তা: যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএর আড়ি পাতা কার্যক্রমের কারণে দেশটির প্রযুক্তি খাত হুমকির মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রযুক্তি পণ্যগুলোর ওপর গ্রাহকদের ক্রমহ্রাসমান আস্থার কারণে ২০১৬ সাল নাগাদ দেশটির প্রযুক্তি খাতে লোকসানের পরিমাণ ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার থেকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ফাউন্ডেশন (আইটিআইএফ) তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে। খবর মোটলি ফুলের। গত জুনে এনএসএর সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন সংস্থাটির বিভিন্ন গোপন কার্যক্রমের নথি ফাঁস করে দেন।

এরপর থেকেই সংস্থাটিকে নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে রয়েছে দেশটি। গোপন নজরদারির কারণে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের পাশাপাশি এর প্রভাব প্রযুক্তি খাতেও পড়েছে।ফেসবুক, গুগল ও ইয়াহুর মতো শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে গ্রাহকদের প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে এনএসএ। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের প্রচুর গ্রাহক এসব সেবার আওতাভুক্ত। কিন্তু স্নোডেন কর্তৃক গোপন নথি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই এসব কোম্পানির গ্রাহকদের মধ্যে অবিশ্বাস কাজ করছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের ওপর। প্রচুর গ্রাহক এখন এসব সেবার বিকল্প খুঁজছেন।

বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক সম্প্রতি একচ্ছত্র আধিপত্য হারাতে বসেছে। প্রতিষ্ঠানটির জায়গা নিতে যাচ্ছে চীনের উইচ্যাটের মতো ইন্সটেন্ট মেসেজিং সেবাগুলো। বিশ্লেষকদের মতে প্রযুক্তিগত কারণেই সাইটটির গ্রাহকসংখ্যা কমে যাচ্ছে। কিন্তু সাইটটির গ্রাহকসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পেছনে নিরাপত্তার বিষয়টিও যে গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাইক্রোসফট, গুগল ও অ্যাপলের মতো শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর পণ্য ব্যবহার করে এনএসএ নজরদারি চালিয়েছে; নথিতে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে গ্রাহকরা তথ্যগত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কারণ এসব কোম্পানির পণ্য বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। তাদের গুণগত মান ও জনপ্রিয়তার কারণে অনেকেই প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য এক কথায় চোখ বন্ধ করে কিনতেন। কিন্তু বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের অন্ধবিশ্বাস অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

মার্কিন অর্থনীতি অনেকাংশেই তাদের প্রযুক্তি খাতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গ্রাহকদের মধ্যে বর্তমান অনাস্থা তাদের প্রযুক্তি খাতের জন্য যেমন নেতিবাচক, একইভাবে তা মার্কিন অর্থনীতির জন্যও ভালো ফল বয়ে আনবে না। ওয়াশিংটনভিত্তিক পলিসি গ্রুপ নিউ আমেরিকান ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রেবেকা ম্যাককিনোন বলেন, মার্কিন প্রযুক্তি খাত বর্তমানে খুব বড় ধরনের ক্ষতির দিকে এগুচ্ছে। এর ফল দেশটির অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক হবে।
এ ধরনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে আগামী ২০১৬ সাল নাগাদ দেশটির প্রযুক্তি খাতটির লোকসানের পরিমাণ ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার থেকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসাব অনুযায়ী, এ লোকসানের পরিমান আরো বাড়তে পারে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টার অবশ্য জানায়, ২০১৬ সাল নাগাদ দেশটির প্রযুক্তি খাতের লোকসানের পরিমাণ ১৮ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। যা দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগের বার্ষিক বাজেটের এক-চতুর্থাংশ।

এ বিশাল পরিমাণ লোকসানের কারণ হিসেবে তারা প্রযুক্তি পণ্যের পাশাপাশি ক্লাউড সিস্টেমে গ্রাহকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন। বিশ্বের ক্লাউড ব্যবসার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রণ করে এইচপি, সিসকো সিস্টেমস ও মাইক্রোসফটের মতো মার্কিন কোম্পানিগুলো। ফরেস্টারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন বছরে এ খাতের আয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। বর্তমানে উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি বিভিন্ন উদীয়মান বাজারও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু গ্রাহক আস্থা হারানোর কারণে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উদীয়মান বাজারগুলো হারায়ম তবে অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলো এ সুযোগ লুফে নিতে ভুল করবে না। এক্ষেত্রে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য পরবর্তী সময়ে বাজার দখল করা অনেক সময়ের ব্যাপার হবে।

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে দেশটির প্রযুক্তি খাতের তথাপি সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক অবস্থার এ ধরনের দুরবস্থার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। বাইরের কোনো দেশ অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকারক ভূমিকা পালন করলে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। কিন্তু নিজের পায়ে কুড়াল মারলে তখন কষ্ট আর সান্ত্বনা পাওয়া ছাড়া করার কিছুই থাকে না। প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থ মন্দা থেকে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও অনেকটা উঠে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তি খাতে এ ধরনের ধস নামলে যুক্তরাষ্ট্র আবারো অর্থমন্দায় পড়তে পারে।