Daffodil International University
International Affairs => International Activity => Topic started by: ariful892 on September 18, 2014, 06:21:42 PM
-
স্পেনের মানুষজন, তাঁদের জীবনাচার ও সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে অন্যান্য দেশের মানুষেরা কেমন ধারণা পোষণ করেন? দেশটির নাগরিকদের অনেকেই বলেছেন, বিদেশিদের কাছ থেকে নিজেদের সম্পর্কে অদ্ভুত সব ধারণার কথা শুনেছেন তাঁরা। এমনকি সিনেমা ও পত্রপত্রিকায়ও এসব ভুল ধারণার প্রতিফলন দেখা যায়। স্প্যানিশদের সম্পর্কে বহুল প্রচলিত এমন নয়টি ভুল ধারণার কথা তুলে ধরেছে হাফিংটন পোস্ট ।
সবাই ফ্ল্যামেঙ্কো জানে!
না, স্প্যানিশমাত্রই ফ্ল্যামেঙ্কা নাচতে জানে না। ফ্ল্যামেঙ্কোর জন্ম ও বিকাশ দক্ষিণ স্পেনে। স্থানীয়ভাবে এই ঐতিহ্য জনপ্রিয় হলেও স্বভাবতই সেখানকার সবাই এই নৃত্য জানে না। আর তা ছাড়া ফ্ল্যামেঙ্কো স্পেনের নিজস্ব নৃত্যরীতির অনেকগুলোর একটা মাত্র। স্পেনের বিভিন্ন আঞ্চলিক নৃত্যরীতিগুলো স্থানীয়ভাবে খুবই জনপ্রিয়। এসবের মধ্যে মাদ্রিদে চোউতিস, গ্যালিসিয়ায় মুনেইরা, আরাগোনে ইয়োতা এবং কাতালোনিয়ায় সারদানা নৃত্যই স্থানীয় ঐতিহ্য।
ষাঁড়ের লড়াইয়ের ভক্ত সবাই!
ষাঁড়ের লড়াই স্পেনে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হলেও বাস্তবে স্পেনে ষাঁড়ের লড়াই নিয়ে তুমুল বিতর্ক আছে। সারা দেশের বিভিন্ন স্থানেই ষাঁড়ের লড়াইবিরোধী নানা সংগঠন আছে। কাতালোনিয়া এবং ক্যানারিস অঞ্চলে তো ষাঁড়ের লড়াই কঠোরভাবেই নিষিদ্ধ।
প্রতিদিনই পায়েইয়া খায় স্প্যানিশরা!
মোটেই না। ঝাল মসলামিশ্রিত খিচুড়ির মতো এই খাবার আদতে ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষেরাই পায়েইয়া বেশি খায়। আর প্রত্যেক অঞ্চলেরই তো নিজস্ব খাদ্যরীতি আছে। তবে যদি সব স্প্যানিশের জাতীয় খাদ্য টাইপের কোনো কিছুর কথা বলতেই হয় তা হলো তরতিইয়া। ডিম, আলু আর পেঁয়াজ দিয়ে বানানো এই ওমলেট স্পেনজুড়ে খুবই জনপ্রিয়।
স্প্যানিশরা আলসে এবং দিনে ঘুমায়!
এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, মধ্যাহ্নে খানিকটা সিয়েস্তা বা ভাত-ঘুমের রীতি নিয়ে স্প্যানিশরা খুবই গর্বিত। তাই বলে বিষয়টা এমন নয়, স্পেনের সবারই প্রতিদিন এই বিলাস কপালে জোটে। বাস্তবে স্পেনের জনসংখ্যার বড় অংশই সিয়েস্তার সময়ে কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকে। যারা নিয়মিত সিয়েস্তায় অভ্যস্ত, তাদের বেশির ভাগই অবসরে যাওয়া মানুষজন কিংবা এখনো স্কুলে যাচ্ছে না এমন বাচ্চা-কাচ্চা।
স্প্যানিশরা সারাক্ষণই স্যাংগ্রিয়া পান করে!
স্পেনে ঘুরতে গেলে বেশির ভাগ পর্যটকই হয়তো একবার রক্তলাল এই পানীয় সুধা পানের সুযোগ হারাতে চাইবেন না। রেড ওয়াইনের সঙ্গে ফলের কুচি আর খানিকটা ব্র্যান্ডি মেশানো হালকা মিষ্টি এই ককটেল স্পেন ও পর্তুগালে জনপ্রিয়ই বটে। তবে স্প্যানিশরা আসলে গ্রীষ্মকালেই স্যাংগ্রিয়া পান করে।
অনুজ্জ্বল, বাদামি চোখ ও কালো চুল!
সব স্প্যানিশই দেখতে পেনিলোপি ক্রুজ কিংবা আন্তোনিও ব্যান্দারাসের মতো না। সব স্প্যানিশই কালো চুলের বা বাদামি চোখেরও না। অনেকের চোখের মণিই নীল বা সবুজ। অনেকের চুলই বাদামি। আর সবার গায়ের রংও অন্য ইউরোপীয়দের তুলনায় অনুজ্জ্বল নয়।
স্প্যানিশরা ধর্মকর্মে নিবেদিত প্রাণ!
আদতে বিষয়টা মোটেই এ রকম না। স্পেনে বহু ধর্মের মানুষ বসবাস করে এবং রাষ্ট্রীয় নীতি অনুসারে এটা একটা সেক্যুলার দেশ। আর মোট জনসংখ্যার ১৩ দশমিক ২ শতাংশই কেবল নিয়মিত উপাসনায় অংশ নিয়ে থাকে।
স্প্যানিশরা সারাক্ষণই উৎসব করে বেড়ায়!
এটা ঠিক যে স্প্যানিশরা খুবই উৎসবপ্রবণ জাতি। স্পেনে ১২ মাসে ১৩ পার্বণ যেন চলতেই থাকে। আর রাষ্ট্রীয় ক্যালেন্ডারেও নানান উৎসব ছুটির কমতি নেই। লা তমাতিনা বা টমেটো উৎসবের মতোই বহু বিচিত্র উৎসব চালু আছে স্পেনের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে ঐতিহ্যগতভাবে এসব উৎসব চালু থাকলেও আধুনিক যুগের ব্যস্ত নাগরিকদের এত সময় কই সারাক্ষণই উৎসব করার!
স্পেনে সারা বছরই গরম থাকে!
ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত স্পেনের আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট ভালোই বলতে হবে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো এখানে শীতের তীব্রতা অতটা নেই। বসন্তকালের বেশির ভাগটা জুড়েই স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে বেশ ভালোই গরম পড়ে। তবে গ্যালিসিয়া, অস্তারিউস বা কান্তাবারিয়া অঞ্চলে গ্রীষ্মকালের অনেকটা জুড়েই বৃষ্টি হয়ে থাকে। আর মাদ্রিদ বা কাস্তিলা-লিওর মতো শীতপ্রধান এলাকায় শীতকালে বরফ আর তুষারপাতও দেখা যাবে।