Daffodil International University
Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Life Science => Topic started by: ehsan217 on September 26, 2014, 10:54:00 AM
-
অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় এলাকার গভীর সমুদ্রে নতুন একধরনের রহস্যময় জীবসত্তার খোঁজ মিলেছে। এটি দেখতে অনেকটা মাশরুমের মতো। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী বলছেন, ছোট্ট এই জীবসত্তাটি অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। কারণ, এদের সঙ্গে প্রাণিজগতের কোনো শাখার প্রাণীর বৈশিষ্ট্যের মিল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রাণিবিজ্ঞান গবেষণায় এ ধরনের ঘটনা গত ১০০ বছরে খুব কমই দেখা গেছে।
মাশরুমের মতো কাঠামোটি প্রথম সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। প্লস ওয়ান সাময়িকীতে এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন গত বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। তবে নতুন ওই জীবসত্তার বা ‘প্রাণীর’ জীবনযাপনের ধরন, খাদ্যাভ্যাস ও প্রজননের পদ্ধতি সম্পর্কে এখনো কিছুই জানতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে তাঁরা ‘প্রাণীটির’ সঙ্গে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৫৪ কোটি বছর আগের সময়ের মধ্যে বসবাসকারী নরম শারীরিক কাঠামোর অদ্ভুত ও রহস্যময় প্রাণীর বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য পেয়েছেন। আদি পৃথিবীর ইতিহাসে ওই যুগটি এডিয়াক্যারান পিরিয়ড নামে পরিচিত। বৈচিত্র্যময় নানা বৈশিষ্ট্যের কারণে এসব ‘প্রাণীকে’ শ্রেণিবিন্যাসের অন্তর্ভুক্ত করাটা বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। মাশরুম আকারের ওই জীবসত্তাটি ডেন্ড্রোগ্রামা এনিগমাটিকা এবং ডেন্ড্রোগ্রামা ডিসকোয়েডস প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরা লম্বায় মাত্র কয়েক মিলিমিটার হয়ে থাকে। আর দেখতে অনেকটা চ্যাপ্টা থালার মতো, যার বিস্তার প্রায় এক সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের শরীরের এক প্রান্তে লম্বা নলের মতো মুখ যুক্ত থাকে।
বিজ্ঞানীরা ১৯৮৬ সালে তাসমানিয়ার কাছাকাছি অস্ট্রেলিয়ার মহাদেশীয় ঢাল এলাকার সাগরের ৪০০ থেকে এক হাজার মিটার নিচে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। কিন্তু তাঁরা মাশরুমসদৃশ দুটি প্রজাতি শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন সম্প্রতি। তাঁদের সংগ্রহে বর্তমানে ১৮টি নমুনা রয়েছে। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জোর্গেন ওলেসেন বলেন, জীবসত্তার কাঠামোগুলো অবশ্যই প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসের কোনো না কোনো শাখার অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোথায়।
নতুন জীবসত্তার কাঠামোটির গঠন সম্ভবত বহুকোষী এবং অপ্রতিসম। এদের শরীরের বাইরের ত্বকের কোষ এবং অভ্যন্তরীণ কোষীয় আবরণের মধ্যে রয়েছে নরম ও আঠালো পদার্থের ঘন স্তর। গবেষকেরা এদের সঙ্গে জেলিফিশজাতীয় সামুদ্রিক প্রাণীর সঙ্গে কিছুটা মিল খুঁজে পেয়েছেন। ওলেসেন বলেন, নতুন ‘প্রাণীটি’ আদিযুগের কোনো প্রজাতির কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের হতে পারে। কারণ, ডেন্ড্রোগ্রামা গণভুক্ত প্রাণী প্রজাতিগুলোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত খুব সামান্যই জানা সম্ভব হয়েছে। নতুন ‘প্রাণীর’ পরিচয় নির্ধারণ নিয়ে বর্তমান সমস্যার সমাধানে ডেন্ড্রোগ্রামার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বিভিন্ন প্রাণীর ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। তবে এ জন্য ওই জীবসত্তার কাঠামোর নতুন নমুনাও খুঁজে পেতে হবে।
প্রথমবার সংগৃহীত নমুনাগুলো প্রথমে ফরমালডিহাইড ও পরে ৮০ শতাংশ অ্যালকোহলের দ্রবণে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। ওই অবস্থায় প্রাণীর জিনগত বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়ে থাকে। ওলেসেন ও তাঁর সহযোগীরা ওই দুটি জীবসত্তার কাঠামোর নতুন নমুনার খোঁজে নজর রাখার জন্য সারা বিশ্বের প্রাণিবিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবিসি ও লাইভসায়েন্স।