Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Football => Topic started by: ehsan217 on October 01, 2014, 12:03:57 PM

Title: রেকর্ডের বরপুত্র
Post by: ehsan217 on October 01, 2014, 12:03:57 PM
অবিশ্বাস্য, কিন্তু বাস্তব৷ এক পঞ্জিকা বর্ষে ৯১ গোল! গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড৷ যেন গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ফুটবল জাদুকর৷
এমন গোলমেশিনকে কে না ভয় পায়! কোনো কারণে মেসি খেলতে না পারলে প্রতিপক্ষ শিবিরে বয়ে যায় আনন্দের ফোয়ারা৷ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন ডিফেন্ডাররা, ‘গোলমেশিনকে তো আর সামলাতে হবে না!’ বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার জাভি মার্টিনেজ তো একবার বলেই ফেলেছিলেন, ‘ও খেলবে না, এটাই বিরাট স্বস্তির৷’
২০০৪ সালে বার্সেলোনার মূল দলে অন্তর্ভুক্তি৷ সেই থেকে প্রতিপক্ষ শিবিরে আতঙ্ক ছড়িয়েই চলেছেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি৷ ভেঙে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড৷ সৃষ্টি করছেন নতুন নতুন ইতিহাস৷
এই ধরণিতে এমন খেলোয়াড়ও আছেন, যিনি একবার ফিফা ব্যালন ডি’অরের জন্য মনোনীত হতে পারলেও নিজেকে ধন্য মনে করেন৷ কিন্তু এই দুর্লভ পুরস্কারটিই মেসির হাতে উঠেছে টানা চারবার৷ ২০০৯ সালে শুরু হয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদার পুরস্কারটি নিজের করে নিয়েছিলেন মেসি৷ সেখানেই শেষ নয়; প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনবার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু পুরস্কারও পেয়েছেন৷
মাত্র ২৪ বছর বয়সে বার্সেলোনার পক্ষে সর্বোচ্চসংখ্যক গোল, লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে (২৫ বছর) ২০০ গোলেরও মালিক এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড৷
ক্লাবের হয়ে রেকর্ডের পর রেকর্ড৷ একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি টানা চার মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চসংখ্যক চারটি হ্যাটট্রিকেরও মালিক৷ এর মধ্যে একটি ম্যাচে তো ইতিহাসই গড়েছেন৷ ২০১২ সালে বেয়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে ম্যাচে পাঁচটি গোলই করেন এই বিস্ময়৷ একটানা কতটি ম্যাচে গোল করা যায়? কল্পনা করুন তো! পাঁচটি, দশটি, পনেরিট, বিশটি! মেসি আপনার কল্পনাশক্তিকেও ছাড়িয়ে গেছেন৷ লা লিগার মতো শীর্ষপর্যায়ের একটি লিগে টানা ২১ ম্যাচে গোল করার কৃতিত্ব তাঁর৷ এর মধ্য দিয়ে পেশাদার লিগে সব কটি দলের বিপক্ষে টানা গোল করার রেকর্ডও এখন তাঁর৷ চোটের কারণে পরের ম্যাচে নামতে পারেননি৷ নইলে কে জানে, এই গোলমেশিন কোথায় থামত!
বয়স এখনো মধ্য গগনে৷ সামনে অফুরান সময়৷ কিন্তু এরই মধ্যে ক্লাবের হয়ে সম্ভাব্য সব অর্জন হয়ে গেছে৷ ছয়টি লা লিগা, দুটি কোপা দেল রে, ছয়টি স্প্যানিশ সুপার কাপ, তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুটি উয়েফা সুপার কাপ ও দুবার জিতেছেন ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ৷
ক্লাবের হয়ে রাশি রাশি সাফল্য৷ কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে মেসি কী করেছেন, দেখা যাক সেই খতিয়ান৷ খুব বেশি সমৃদ্ধ না হলেও আর্জেন্টিনার মানুষের মনে সাম্প্রতিক সময়ে খুশির খোরাক জুগিয়েছেন তিনিই৷ ২০০৫ সালে তাঁর হাত ধরেই অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ঘরে তোলে নীল-সাদারা৷ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন তিনি (৬)৷ বিশ্বকাপ অভিষেক ২০০৬ সালে৷ আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে তিনিই সবচেয়ে ছোট খেলোয়াড়৷
২০০৭ সালে কোপা আমেরিকায় দাপটের সঙ্গে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা৷ কিন্তু শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের দুরন্ত ফুটবলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ৷ মাচেরানোদের ব্যর্থতার পাল্লা হলো আরও ভারী৷ কিন্তু টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার ঠিকই উঠেছে মেসির হাতে৷ জাতীয় দলের হয়ে তাঁর প্রথম সাফল্য আসে ২০০৮ সালে, বেইজিং অলিম্পিকে৷ আর্জেন্টিনা অলিম্পিক ফুটবল দল সোনা জিতে তবেই দেশে ফেরে৷
ছোট্ট জীবনে এ পর্যন্ত অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার৷ ওয়ার্ল্ড সকার প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার তিনবার, উয়েফা সেরা খেলোয়াড় একবার, উয়েফা ক্লাব ফুটবলার অব দ্য ইয়ার একবার, ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ গোল্ডন বল দুবার, এলএফপি সেরা খেলোয়াড় পাঁচবার, লা লিগা সেরা খেলোয়াড় তিনবার, লা লিগা সেরা বিদেশি খেলোয়াড় তিনবার ও পিচিচি ট্রফি তিনবার জিতেছেন এই স্ট্রাইকার৷
কাতালুনিয়ায় মেসি সোনার ডিম পাড়া হাঁস৷ সেখানে তাঁকে ছাড়া চিন্তাই করা যায় না৷ সম্প্রতি তিনি ছন্দে নেই৷ বার্সার ট্রফি কেসেও যেন বদল আসে না৷ বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক কোচ হেইঙ্কেস একবার সত্যিই বলেছিলেন, ‘মেসি ছাড়া গল্পটা ভিন্ন৷ ও-ই বার্সার ভিত্তি৷’
সূত্র: বিভিন্ন সময়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন, একাধিক ওয়েবসাইট ও লুকা কাইয়োলির বই মেসি৷