Daffodil International University
Faculty of Science and Information Technology => Science and Information => Topic started by: khairulsagir on October 11, 2014, 02:59:56 PM
-
ঘনবসতিপূর্ণ বা জিনিসপত্রে ভরা কোনো স্থানে কিংবা পারমাণবিক স্থাপনায় দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান চালানো খুব কঠিন। চাকাওয়ালা রোবটও এসব পরিস্থিতিতে সব ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে না। তখন প্রয়োজন হয় বিশেষায়িত রোবটের। এ সমস্যা দূর করতে প্রযুক্তিবিদেরা তৈরি করেছেন সাপের মতো এক রোবট।
নতুন ‘সাপ-রোবট’ সরীসৃপ প্রাণীটির মতোই সংকীর্ণ স্থানের মধ্য দিয়েও চলাচল করে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করতে পারবে। এ ধরনের রোবটকে পরিস্থিতির প্রয়োজন অনুযায়ী আরও দক্ষ করে তোলার চেষ্টা চলছে।
সাপ-রোবটকে আরও উন্নত করতে স্বাভাবিকভাবেই সাপ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। আর এটি হতে পারে প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রাণী নিয়ে গবেষণার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ইতিমধ্যে সেই উদ্যোগ শুরুও হয়ে গেছে। সাপ-রোবটের দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির রোবটিকস ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের গবেষণার ভিত্তিতে সায়েন্স সাময়িকী একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।
সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা গত বৃহস্পতিবার বলেন, সাপ-রোবটের উন্নয়নের জন্য সাইডউইন্ডার র্যাটলস্নেক (বৈজ্ঞানিক নাম ক্রোটালাস সেরাস্টেস) নামের অত্যন্ত বিষাক্ত এক প্রজাতির সাপের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ধূসর রঙের নিশাচর এই প্রজাতির সাপের আবাস উত্তর আমেরিকার মরু এলাকায়। বালুর ওপর দিয়ে চলাচলে এসব সরীসৃপ বিশেষ দক্ষ। সাইডউইন্ডার র্যাটলস্নেক বিশেষ ভঙ্গিমায় শরীর বাঁকিয়ে অবলীলায় বালিয়াড়ি ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। সাপটির এই সহজাত দক্ষতা বিশেষ ধরনের রোবটের মধ্যে সন্নিবেশ করা হয়েছে।
মার্কিন ওই গবেষকেরা জানিয়েছেন, রোবটটি অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। এতে জোড়ার সংখ্যা ১৬। এই রোবট লম্বায় ৩৭ ইঞ্চি। এর ব্যাসার্ধ মাত্র দুই সেন্টিমিটার, অর্থাৎ এক ইঞ্চিরও কম। এতে যুক্ত যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে একটি মোটর, ক্ষুদ্র কম্পিউটার, সংবেদি যন্ত্র (সেনসর) এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ।
সাপ-রোবটের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে গবেষকদের ভাষ্য, এই বোবট এমন কিছু কাজ করতে পারে, যেগুলো চাকাওয়ালা রোবটের সাহায্যে করা সম্ভব নয়। যেমন: সাপ-রোবটের মাধ্যমে জটিল অবকাঠামোর কোনো স্থানে বা পারমাণবিক কোনো স্থাপনায় উদ্ধার অভিযান চালানো যায়।
কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হাওয়ি চোসেট বলেন, এই রোবট খুব ঘিঞ্জি জায়গার মধ্য দিয়েও চলাচল করতে পারে। মানুষ ও সাধারণ যন্ত্রপাতি দিয়ে ওই ধরনের জায়গায় কাজ করা সম্ভব হয় না।
বালিয়াড়িতে সাপের চলাফেরার দক্ষতা পর্যবেক্ষণের গবেষণাটি করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার একটি চিড়িয়াখানায়। সেখানে গবেষকেরা কৃত্রিম বালিয়াড়ি ও পাহাড়ের মধ্যে সাপ ছেড়ে দেন। ভিডিও ক্যামেরায় প্রাণীটির প্রতিটি নড়াচড়ার ছবি তোলেন। পরে এসব চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বালুর মধ্যে চলাচলের সময় সাপ একটি নির্দিষ্ট ছন্দে শরীর দোলায়। এর শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেবল বালু স্পর্শ করে। সাপ-রোবটের কাঠামো ও কার্যকৌশলে এ তথ্যের প্রয়োগ করে দেখা যায়, রোবটটি বাস্তব সাপের মতোই চলতে পারছে। তবে প্রাকৃতিক সাপের মতো বালুর পাহাড় ডিঙাতে পারেনি। পরে সাপের ওই নির্দিষ্ট ছন্দে শরীর দোলানোর কৌশলও রোবটটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর সাপ-রোবট বালুর পাহাড় পার হতে পেরেছে।
সংশ্লিষ্ট আরেক গবেষক হামিদ মারভি বলেন, তাঁদের তৈরি সাপ-রোবট এখন ২০ ডিগ্রি পর্যন্ত বাঁক নিয়ে চলাচল করতে পারে। আগে এটি সর্বোচ্চ ১০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঢাল ডিঙাতে পারত।
জর্জিয়া টেক স্কুল অব ফিজিক্সের গবেষক ড্যানিয়েল গোল্ডম্যান বলেন, প্রাণী নিয়ে গবেষণায় শুধু তাঁদের সাধারণ গুণাগুণ ও চলাচল সম্পর্কেই যে জানা যাচ্ছে, তা নয়, এই জ্ঞান ব্যবহার করা যাচ্ছে রোবট-প্রযুক্তির উন্নয়নেও।
সূত্র: রয়টার্স ও বিবিসি।
http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/350x0x1/uploads/media/2014/10/11/9dfa0d4891503521b8a4803edad1c402-3.jpg
Source: www.prothom-alo.com
-
Interesting news.