Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Tasnuva Anowar on October 13, 2014, 03:09:07 PM
-
টানা তৃতীয় মেয়াদে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বামপন্থী নেতা ইভো মোরালেস। আদিবাসী হিসেবে তিনিই প্রথম দেশটির রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন। শূন্য থেকে নিজ গুণে শীর্ষে পৌঁছানোর অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নেওয়া ইভো মোরালেস ছিলেন লামা নামের দক্ষিণ আমেরিকার এক ধরনের প্রাণীর রাখাল। গান গাইতেন, ফুটবল খেলতেন আর ছিলেন কোকো চাষি।
লাতিন আমেরিকার দরিদ্রতম এই দেশটিতে ইভো মোরালেসের প্রায় নয় বছরের শাসনামলে দরিদ্রবান্ধব অনেক নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও এসেছে। এর ওপর ভর করেই ৫৪ বছর বয়সী ইভো মোরালেস গত রোববারের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় যাচ্ছেন। বুথফেরত ভোটারদের দেওয়া তথ্যে এমন আভাসই মিলেছে।
৬৫ শতাংশ আদিবাসীর দেশ বলিভিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কেব্ল কার চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে ইভো মোরালেসের শাসনামলে। দেশের প্রথম স্যাটেলাইটও উৎপেক্ষণ হয়েছে তাঁর আমলেই। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে অগ্রগতিও হয়েছে অনেকটা।
বলিভিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের ওরুরোতে এক দরিদ্র পরিবারে ইভো মোরালেসের জন্ম। ছোটবেলায় তিনি লামার রাখাল ছিলেন, বাবা-মাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতেন। তাঁর ছয় ভাইবোনের মধ্যে চারজনই দুই বছরের আগে অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগে মারা গেছে।
আয়মারা ভাষাভাষী গোষ্ঠীর মধ্যে ইভো মোরালেস বেড়ে উঠেছেন। বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষা অর্জনের জন্য তরুণ বয়সে বেশ কষ্ট করেই স্প্যানিশ শিখতে হয়েছিল তাঁকে। খরার কারণে অনেকটা বাধ্য হয়ে তিনি আশির দশকের শুরুর দিকে কোকো-উৎপাদনকারী এলাকায় চলে যান। তখনই তিনি গানের দল গড়ে তোলেন, ফুটবল খেলায় জড়িয়ে পড়েন। গান আর ফুটবলের কারণে তিনি দেশের বাইরে ভ্রমণের সুযোগ পান।
মাদকের দোহাই দিয়ে কোকো চাষের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন প্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ ছিল ইভো মোরালেসের। তখনই ইউনিয়ন নেতা হিসেবে তাঁর উত্থান। তাঁর নেতৃত্বে কোকো চাষিরা আন্দোলন গড়ে তোলেন। বলিভিয়ার অনেকে কোকো পাতা পানের মতো চিবিয়ে খান, আবার অনেকে এটি চা-পাতার মতো ব্যবহার করে পান করেন। তখন তিনি যুক্তি দেন, এটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।
২০০২ সালে ইভো মোরালেস প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন। তবে সেবার হেরে যান তিনি। ২০০৫ সালের নির্বাচনে তিনি ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তিনি এই বিজয় লাতিন আমেরিকার দেশ কিউবার বামপন্থী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো ও ভেনেজুয়েলার নেতা হুগো চাভেজ এবং বিশ্বের সব ‘সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ও পুঁজিবাদবিরোধী’ নেতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইভো মোরালেসের অনেক বেশি কাজ করার কথা প্রচলিত আছে। তিনি বেশির ভাগ সময় ভোর পাঁচটা থেকে কাজ শুরু করেন। চষে বেড়ান দেশের এপ্রান্ত-ওপ্রান্ত। স্পোর্টস বয়েজ নামের স্থানীয় একটি ফুটবল ক্লাবের হয়ে এ বছর খেলার জন্য সইও করেছেন তিনি। সময়সূচির সঙ্গে মিলে গেলে তিনি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার কথা জানিয়েছেন। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধ, মাদকপাচার ও দুর্নীতি রোধে ব্যর্থ হয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনের কথা ইভো মোরালেস সযত্নে এড়িয়ে যান। অবিবাহিত হিসেবে পরিচিত এই নেতার এলভারো ও ইভা লিজ নামে দুই মায়ের দুই সন্তান আছে। এই নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, ৬০ বছর বয়সের পর তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। অবসর জীবনে একটি খাবারের দোকান দেবেন তিনি।
-
Very interesting