Daffodil International University
Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Topic started by: khairulsagir on October 14, 2014, 12:08:02 PM
-
এই প্রথম বিশ্বে পরীক্ষাগারে ‘মানুষের মস্তিষ্কের কোষে আলঝেইমার সৃষ্টি’ করা হয়েছে। পরীক্ষাগারে কাচের পাত্রে রাখা মস্তিষ্কের কোষের মধ্যে এ রোগ সৃষ্টি করা হয়।
এই সাফল্য থেকে ভবিষ্যতে মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রংশ রোগ আলঝেইমারের চিকিৎসা ও ওষুধের গবেষণা করা যাবে সহজেই। এর মধ্য দিয়ে আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এর আগে রোগটি নিয়ে গবেষণার একমাত্র উপায় ছিল ইঁদুরের মস্তিষ্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটালের একদল গবেষক পরীক্ষাগারে মানুষের মস্তিষ্কের কোষে আলঝেইমার সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন ওই হাসপাতালে গবেষক রুডলফ ই. ট্যানজি ও তাঁর সহকর্মী ডু ইয়ন কিম। গত রোববার এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার।
গবেষকেরা জানান, পরীক্ষাগারে মানুষের মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধিতে তাঁরা একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন, যা মানুষের স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মতোই। তাঁরা মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ নিউরনের মধ্যে আলঝেইমার রোগের জিন ঢুকিয়ে দেন। গবেষকেরা রোগের জিন প্রবেশ করানোর কয়েক সপ্তাহ পর মস্তিষ্কের কোষে আলঝেইমারে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ খুঁজে পান।
এ গবেষণা থেকে আলঝেইমার রোগ কীভাবে হতে পারে এর সদুত্তর পাওয়া যেতে পারে বলেন দাবি করছেন গবেষকেরা। আলঝেইমার রোগের চিকিৎসার গবেষণায় এটি বড় অগ্রগতি।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটির আলঝেইমার রোগের গবেষক পি মুরালি দোরেইসোয়ামি বলেন, আলঝেইমার রোগের চিকিৎসার গবেষণায় এটি বড় এক পদক্ষেপ। এর ফলে এই রোগে নতুন ওষুধ নিয়ে গবেষণা গতি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
তবে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, গবেষণায় কাচের পাত্রে মস্তিষ্কের কিছু কোষ আর জীবিত মানুষের পুরো মস্তিষ্ক এক জিনিস নয়। পরীক্ষাগারের রাখা মস্তিষ্কের কোষের পাত্রে প্রকৃত মস্তিষ্কের অনেক উপাদান অনুপস্থিত থাকে। এমনই এক উপাদান রোগ প্রতিরোধী কোষ। মানুষের মস্তিষ্কে আলঝেইমার রোগের শুরুতে এটি রোগ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পরীক্ষাগারের পাত্রের মস্তিষ্ক কোষে প্রকৃত মস্তিষ্কের অনেক উপাদানের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও দ্রুততার সঙ্গে, সহজে ও স্বল্প খরচে আলঝেইমার রোগের এমন ওষুধ নিয়ে গবেষণা হতে পারে, যা রোগটি সৃষ্টির শুরুতেই ধ্বংস করার কাজ করবে। তবে এসব ওষুধ রোগীকে সারিয়ে তুলতে পারে কি না এর গবেষণা হবে সবচেয়ে জটিল অংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাইয়ের ইকান স্কুল অব মেডিসিনের গবেষক স্যাম গ্যান্ডি বলেন, পরীক্ষাগারে মস্তিষ্কের কোষে আলঝেইমার সৃষ্টির মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য ভবিষ্যৎ চিকিৎসায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তিনি নিজের পরীক্ষাগারেও এভাবে গবেষণায় আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির আলঝেইমার রোগের গবেষক ক্যারেন ডাফ নতুন গবেষণার প্রশংসা করে বলেন, এখন পরীক্ষাগারে আলঝেইমার রোগ শুরুতেই কীভাবে থামিয়ে দেওয়ার ওষুধ নিয়ে গবেষণা হতে পারে।
গবেষক ট্যানজি পরীক্ষাগারে পাত্রে মস্তিষ্ক কোষে আলঝেইমার রোগের সফল সংক্রমণের পর নতুন এক ব্যয়বহুল ও বৃহৎ গবেষণায় হাত দিয়েছেন। তিনি বাজারে থাকা আলঝেইমার রোগের এক হাজার ২০০ ধরনের ওষুধ এবং পরীক্ষামূলক আরও পাঁচ হাজার ধরনের ওষুধ নিয়ে গবেষণা করতে যাচ্ছেন। যা প্রয়োগ করা হবে পরীক্ষাগারে আলঝেইমার আক্রান্ত মস্তিষ্ক কোষে।
এর আগে ইঁদুরের ওপর এমন পরীক্ষা করা ছিল অসম্ভব। আর যদি সম্ভব হলেও প্রতি ওষুধের গবেষণায় এক বছরের বেশি সময় লাগত। কিন্তু পরীক্ষাগারে রোগাক্রান্ত মস্তিষ্কে এসব ওষুধের পরীক্ষা করা যাবে সহজেই।
গবেষক ট্যানজি দাবি করেন, মাত্র কয়েক মাসেই আলঝেইমার রোগে কয়েক হাজার ধরনের ওষুধের গবেষণা করা যাবে। নিউইয়র্ক টাইমস।
Source: www.prothom-alo.com
-
Informative post.