Daffodil International University
Faculty of Engineering => EEE => Topic started by: Kazi Taufiqur Rahman on October 15, 2014, 03:59:17 PM
-
কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে গাছ বিশ্বের জলবায়ু স্বাভাবিক রাখে। তবে গাছ যতটুকু কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করেছে বলে মনে করা হতো, বাস্তবে তার পরিমাণ অনেক বেশি। এ কারণে ভবিষ্যতের জলবায়ু মডেলে কার্বনের যে সম্ভাব্য পরিমাণ ধরা হয়েছে, প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে তা ১৭ শতাংশ বেশি।
নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে এ দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, ১৯০১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গাছপালা যতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করেছে বলে মনে করা হতো, প্রকৃতপক্ষে তার পরিমাণ ১৬ শতাংশ বেশি। গাছের কার্বন ডাই-অক্সাইডের শোষণ সম্পর্কে গবেষকদের ভুল ধারণার কারণে আগের সব জলবায়ু মডেলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন বৃদ্ধির হার বেশি দেখানো হয়েছে। গাছের কার্বন শোষণ সম্পর্কে নতুন এই ধারণা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বিষয়ে গবেষকদের ধারণায় পরিবর্তন আসবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একদল গবেষক গাছের কার্বন শোষণের ক্ষমতা নিয়ে নতুন গবেষণাটি করেছেন। গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানের গবেষক লিয়ানহং জু। তাঁদের গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী প্রসিডিংস অব ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এ।
বায়ুমণ্ডলে কী হারে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে, তা নির্ধারণ করা গবেষকদের কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে ভবিষ্যতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে এর প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বিশ্বে যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়, তার অর্ধেকই সমুদ্রে বিলীন হয়, না হলে তা গাছপালার মাধ্যমে শোষিত হয়।
নতুন গবেষণাটিতে, গবেষকেরা গাছপালা যে পদ্ধতিতে কার্বন শোষণ করে থাকে, তা পুনরায় খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। গাছের পাতার ভেতরে কার্বন ডাই-অক্সাইড যে প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত ধীরগতিতে ছড়িয়ে পড়ে, সেটা মেসোফিল ডিফিউশন নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা বলছেন, গাছের কার্বন ডাই-আক্সাইড শোষণ সম্পর্কে আগের ধারণা সঠিক ছিল না। আগে যতটা ধারণা করা হতো, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে অনেক বেশি কার্বন ডাই-আক্সাইড শোষণ করে গাছ।
আগের ধারণা অনুযায়ী, ১৯০১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গাছপালার মাধ্যমে ৯১ হাজার ৫০০ কোটি টন কার্বন শোষিত হয়েছে। তবে নতুন গবেষণার পর পরিমাণটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি টনে। অর্থাৎ আগের ধারণার চেয়ে গাছপালা ১৬ শতাংশ কার্বন বেশি শোষণ করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের মডেলের এই ভুলের জন্য মূল গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী এবং মডেল প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দায়ী বলে মনে করছেন গবেষক লিয়ানহং। তিনি বলেন, মৌলিক গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী ও সেই গবেষণার ভিত্তিতে যাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন মডেল প্রস্তুত করেন, তাঁদের মধ্যে কিছুটা সময়ের ব্যবধান থাকায় ভুলটা হয়েছে। কারণ, দুই গ্রুপের একে অপরকে বোঝার জন্য বেশ সময় প্রয়োজন হয়।
গবেষকদের বিশ্বাস, কার্বন শোষণের পুরোনো ধারণার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের যেসব মডেল তৈরি করা হয়েছে, সেখানে বায়ুমণ্ডলে সম্ভাব্য কার্বনের পরিমাণ বৃদ্ধি ১৭ শতাংশ বেশি করে দেখানো হয়েছে। নতুন গবেষণা এই ব্যবধানের বিষয়টির ব্যাখ্যা দেবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
গবেষক দলটির মতে, তাদের নতুন গবেষণার তথ্য বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের মডেল নতুন করে তৈরি করতে অবদান রাখবে। তবে তার মানে এই নয় যে জলবায়ু পরিবর্তন ও এর নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বের ওপর আসতে অনেক দেরি হবে। বিবিসি।
-
Thanks for sharing