Daffodil International University

Health Tips => Health Tips => Topic started by: faruque on December 10, 2014, 12:22:37 PM

Title: রসুনের অনন্য ১২ গুণ
Post by: faruque on December 10, 2014, 12:22:37 PM
রসুনের অনন্য ১২ গুণ

(http://mzamin.com/news_image/53867_ro.jpg)

কাঁচা কিংবা রান্নায় যে কোনভাবেই খাওয়া যায় রসুন। খাবারের ঘ্রাণ ও স্বাদ বাড়ানোর মসলার পাশাপাশি রসুনের নানা ঔষধি গুণ রয়েছে। তবে রসুন কাঁচা খাওয়ায় সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কারণ, রান্নার সময় এর গুরুত্বপূর্ণ বহু ঔষধি গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্নায় ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন অন্তত একটি কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। উপমহাদেশে হাজার হাজার বছর আগে থেকেই রসুন ভেষজ ওষুধ হিসেবে নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রসুনে রয়েছে ‘অ্যালিসিন’, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাক বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। নানা ভিটামিন ও পুষ্টি-উপাদানেও সমৃদ্ধ এটি। রসুনে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, বি২ ও সি। এতে আরও আছে, প্রোটিন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, আয়রন, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং আরও বহু পুষ্টি উপাদান। প্রতিদিন একটি ছোট্ট রসুন আপনার স্বাস্থ্যকে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আপনাকে প্রাণবন্ত থাকতেও সাহায্য করবে রসুন। নিচে রসুনের ১২টি স্বাস্থ্য-উপকারিতা তুলে ধরা হলো:

১) রক্তে কোলেস্টেরোলের মাত্রা কমায়: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৯০০ মিলিগ্রাম রসুন কোলেস্টেরোলের মাত্রাকে কমায় এবং রক্তবাহী ধমনীতে প্লাক বা ক্ষতিকর সাদা পদার্থ গঠন ৫ থেকে ১৮ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে বলিরেখা বা ভাঁজ প্রতিরোধ করে। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরোল (এলডিএল) নানাবিধ ক্ষতির কারণ। লিভার বা যকৃতে অতিরিক্ত এলডিএল উৎপাদন প্রতিরোধ করে রসুন এবং ভালো কোলেস্টেরোলের (এইচডিএল) মাত্রাকে অক্ষুণœ রেখে খারাপ কোলেস্টেরোলকে কমায় এবং শরীরে কোলেস্টেরোলের মাত্রায় ভারসাম্য আনে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাসটাকে ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে।
২) হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে: হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে রসুনের বিকল্প খুব কমই আছে। হার্ট-অ্যাটাক প্রতিরোধেও দারুণ কার্যকরী এটি।
৩) রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ও হাইপারটেনশন প্রতিরোধে: উচ্চ রক্তচাপ কমায় রসুন। রক্তবাহী ধমনী ও শিরাকে প্রসারিত করার মাধ্যমে রক্তপ্রবাহকে স্বাভাবিক করে। এটি রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত রসুন খেয়ে আপনি আপনার রক্তচাপ কমাতে পারেন এবং হাইপারটেনশনের ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারেন।
৪) হাড় মজবুত করতে: পুরুষ ও নারী উভয়ের হাড়ের ক্ষয়রোধ করে রসুন। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে এস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে হাড় মজবুত করায় বিশেষ ভূমিকা রাখে এটি।
৫) বাতের ব্যথা কমাতে: পুরনো ও দীর্ঘস্থায়ী বাতের ব্যথার সমস্যাতেও কাজ করে এটি। বিভিন্ন ধরনের বাতের ব্যথা ও প্রদাহ কমায় এবং বাতজনিত কারণে সৃষ্ট অন্যান্য উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণ করে রসুন।
৬) ওজন কমাতে: শরীরে চর্বি উৎপন্নকারী কোষের গঠনকে নিয়ন্ত্রণ করে এটি। এ কোষগুলো শরীরের স্থ’ূলতার জন্য দায়ী। রসুনে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে তেল থাকায়, তা মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। তাই কাঁচা ও রান্নায় ব্যবহৃত রসুন খাওয়ার অভ্যাসে আপনার ওজনটাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
৭) ডায়াবেটিস প্রতিরোধে: রক্তে চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে রসুন। ডায়াবেটিসে ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়িয়ে রক্তের সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে, নিয়মিত রসুন খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধও করা সম্ভব।
৮) ক্যান্সার প্রতিরোধে: ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে রসুন। বিশেষ করে পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এর। রসুন সুনির্দিষ্ট কিছু টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে এবং কিছু টিউমারের আকারও ছোট করতে ভূমিকা রাখে। রসুনের অ্যালাইল সালফার উপাদান ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। ক্যান্সার কোষ শরীরে বিস্তার লাভও করতে পারে না। কারও পারিবারিক ইতিহাসে ক্যান্সারের রোগী থাকলে, তাদের প্রতিদিন রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
৯) হজমশক্তি বাড়ায়: রসুন হজমশক্তি বাড়ায়। পেটের অভ্যন্তরে স্বস্তি ও আরাম অনুভূত হয়। গ্যাসের সমস্যা দূর করে। পুষ্টি উপাদানসমূহ ভালোভাবে হজমে সহায়তা করে। শরীরের বিষাক্ত বর্জ্য ও অন্যান্য উপাদান বের করে দিতে রসুন লিভারকে সক্রিয় করে। একই সঙ্গে লিভারকেও সুস্থ-সবল রাখে। পাকস্থলি বা বুকে জ্বালাপোড়া প্রতিরোধ করে রসুন।
১০) অ্যালার্জি দমনে: রসুনের ভাইরাসবিরোধী ও দহন প্রতিরোধী উপাদানসমূহ বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি দমন করে। বছরের যে সময়ে অ্যালার্জি বেশি হয়, সে সময় নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। কাঁচা রসুনের রস বের করে সেটা সরাসরি শরীরে প্রয়োগ করা যায়।
১১) কাশি ও ঠাণ্ডা লাগা সারাতে: ভিটামিন সি ও বি৬, খনিজ উপাদান সেলেনিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ব্যাক্টেরিয়ারোধী উপাদানও কাশি ও গলার অন্যান্য প্রদাহের জন্য কার্যকর। ফুসফুসের জন্যও উপকারী এটি। অ্যাজমা বা হাঁপানির চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয় রসুন। তাছাড়া ঠা-াজনিত সমস্যাতেও কাজ করে এটি।
১২) দাঁত ব্যথা সারাতে: রসুনে ব্যাকটেরিয়ারোধী, বেদনানাশক ও সাময়িকভাবে অনুভূতি লোপকারী উপাদান থাকায়, তা দাঁতের ব্যথা সারাতে সাহায্য করে। রসুনের তেল তৈরি করে বা রসুনের কোয়া ছেঁচে নিয়ে তা আক্রান্ত দাঁত ও তার চারপাশের মাড়িতে প্রয়োগ করলে, তাৎক্ষণিকভাবে দাঁত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। স্বাভাবিকভাবেই, মাড়িতে একটু জ্বালাপোড়া বোধ হবে।