Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Islam & Science => Topic started by: rumman on March 13, 2015, 03:50:48 PM

Title: দয়া করা মুমিন চরিত্রের বৈশিষ্ট্য
Post by: rumman on March 13, 2015, 03:50:48 PM
হজরত আমর ইবনুল আ'স (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, 'দয়ালু লোকদের প্রতি আল্লাহও দয়া করেন। তোমরা পৃথিবীর অধিবাসীদের প্রতি দয়া করো, আকাশের অধিবাসীরা তোমাদের প্রতি দয়া করবেন'- (তিরমিজি : ১৯২৪)।
রাসুল (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না, তার প্রতি আল্লাহ দয়া করেন না।' রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, 'কেবল হতভাগা মানুষই দয়া ও স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়'- (তিরমিজি : ১৯২২)।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) একবার হাসান (রা.)-কে চুমু খেলেন। সেখানে উপস্থিত সাহাবি আকরা বিন হাবিস বললেন, 'আমার ১০জন সন্তান আছে। তাদের কাউকে আমি কখনো চুমু খাইনি।' তখন রাসুল (সা.) তার দিকে তাকলেন এবং বললেন, 'যে স্নেহ করে না, সে স্নেহ পায় না'- (বোখারি : ৫৯৯৭)।
রাসুল (সা.) তার সাহাবিদের শুধু মানুষের প্রতি দয়া, মমতা, স্নেহ ও করুণা প্রদর্শন করেই ক্ষান্ত থাকতে শিক্ষা দেননি, বরং সব প্রাণীকেই করুণা প্রদর্শন করার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন, আল্লাহর দয়া সব জিনিসের ওপর পরিব্যাপ্ত। আর মুমিনদের আল্লাহর মহৎ গুণাবলি অর্জন করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষ তার মনুষ্যত্বকে কেবল তখনই পূর্ণতার স্তরে উন্নীত করতে পারবে, যখন সে মহান আল্লাহর অনুকরণে প্রত্যেক প্রাণীকে দয়া করবে।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, 'একবার জনৈক পথিক পিপাসায় কাতর হয়ে পানি খুঁজতে খুঁজতে একটি পুকুর পেল। সে তৎক্ষণাৎ পুকুরটিতে নেমে পড়ল এবং পানি খেয়ে উঠে এলো। হঠাৎ দেখতে পেল যে একটা কুকুর পিপাসায় ছটফট করছে এবং পানি না পেয়ে মাটি চেটে খাচ্ছে। লোকটা মনে মনে বলল, কুকুরটি নিশ্চয়ই আমার মতো তীব্র পিপাসায় ভুগছে। সে পুকুরে নেমে পড়ল এবং নিজের মোজায় পানি ভরে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে ওপরে উঠল, তারপর সেই পানি কুকুরকে পান করালো, আল্লাহ তায়ালা তার এই কাজে খুবই সন্তুষ্ট হলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন।' সাহাবিরা বললেন, 'হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! চতুষ্পদ জন্তুকে খাওয়ালেও কি আমরা প্রতিদান পাব?' তিনি বললেন, 'হাঁ, যেকোনো আর্দ্র কলিজাকে (অর্থাৎ যেকোনো প্রাণীকে) তৃপ্ত করালেই প্রতিদান রয়েছে'- (বোখারি, মুসলিম, মোয়াত্তায়ে মালেক)।
অন্য এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, 'জনৈক ব্যভিচারী মহিলা একবার এক রৌদ্রতপ্ত দিনে দেখল যে, একটা কুকুর পিপাসায় জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে এবং একটা কুয়ার চার পাশ দিয়ে চক্কর দিচ্ছে। তখন সেই মহিলা নিজের পায়ের মোজাভরে পানি তুলে তাকে খাওয়ালো। এতে আল্লাহ তার সব গুনাহ মাফ করে দিলেন।'
হজরত আবদুর রহমান ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেন, আমরা এক সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। এক জায়গায় একটা পাখির সঙ্গে তার দুটো বাচ্চাকে দেখতে পেলাম। আমরা বাচ্চা দুটোকে ধরলাম। এই সময় রাসুল (সা.) এলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, 'কে এই পাখির মাকে তার সন্তানদের ধরে কষ্ট দিল? তোমরা ওর বাচ্চাকে ওর কাছে ফিরিয়ে দাও।' অন্য একদিন আমরা একটা পিঁপড়ার গর্তকে পুড়িয়ে দিয়েছিলাম। তা দেখে তিনি বললেন, 'কে এদের পুড়িয়েছে?' আমরা বললাম, 'আমরা পুড়িয়েছি।' রাসুল (সা.) বললেন, 'যিনি আগুনের প্রভু তিনি ছাড়া আর কেউ আগুন দিয়ে শাস্তি দেবে এটা সমীচীন নয়'- (আবু দাউদ)।
হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, 'একজন নবীকে একটা পিঁপড়ে কামড়ে দিয়েছিল। তিনি ওই পিঁপড়ের গর্তটাকেই জ্বালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং তা জ্বালানো হলো। তখন আল্লাহ তায়ালা তাঁকে ওহি পাঠালেন, একটা পিঁপড়ে তোমাকে কামড় দিয়েছিল তাই বলে তুমি আল্লাহর গুণগানরত একদল পিঁপড়েকেই পুড়িয়ে দিলে?'- (বোখারি ও মুসলিম)।

Source: http://www.kalerkantho.com/print-edition/dhormo/2015/03/13/197952#sthash.n9sHFnH8.dpuf