Daffodil International University

International Affairs => International Activity => Topic started by: Mohammad Nazrul Islam on March 18, 2015, 02:27:08 PM

Title: অকূল শান্তি, যেথায় বিপুল বিরতি একটি ভক্ত করিছে নিত্য আরতি।।
Post by: Mohammad Nazrul Islam on March 18, 2015, 02:27:08 PM
অকূল শান্তি, যেথায় বিপুল বিরতি
একটি ভক্ত করিছে নিত্য আরতি।।

বিজ্ঞানে ‘সমসত্ত্ব’ বলে একটি কথা আছে। যাতে বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ন সমশক্তির কার্যকারন ভয়ন্কর। কোন কোন ক্ষেত্রে তা অন্ত:সার শূন্য। ধর্ম বিশ্বাসে বলা যায় সৃষ্টিকর্তা কোন বস্তুকেই একক সমান গুন বা বৈশিষ্টে সৃষ্টি করেন নাই। সৃষ্টির ভিন্নতায় প্রত্যেকে-ই  ‘স্বতন্ত্র’ বৈশিষ্টের অধিকারী।
ইসলাম ধর্ম মতে, মানুষ-ফেরেস্তা-আলো কিম্বা শ্রষ্টা; সকলই ক্ষেত্র বিশেষে-ভিন্নতর। নরক-নরকে, স্বর্গে-স্বর্গে পাথর্ক্য যেমন আছে; তেমনী জীব বৈচিত্রেও পার্থক্য দিদিব্যমান। জীবক’লে অন্তর বিচারে মানুষ-মানুষের মধ্যেও  যথেষ্ট পাথর্ক্য রয়েছে। বিধাতার রহস্যে ধরনীর পরীক্ষাচারনে-সংশোধিত শক্তিকে বৃহত্তর শক্তিতে বিলিন হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে-যাকে মুক্তি হিসাবে কল্পনা করা যায়। আর এই মুক্তির লক্ষ্যেই প্রত্যেকটি জীবন সংগ্রামে ব্যতি-ব্যাস্ত। জন্মের স্বার্থকতা বৃহত্তর শক্তিতে বিলিন হওয়া। এতে সৃষ্টির স্বার্থকতা মহাব্যাপ্তি। কবির ভাষায়-

‘মুখর নুপুর বাজিছে সুদুর আকাশে
অলকগন্ধ উড়িছে মন্দ বাতাসে
মধুর নৃত্য নিখিল চিত্তে বিকাশে
কত মঞ্জুল রাগিনী ?
কত না বনে, কত-না স্বর্নে গঠিত
কত যে ছন্দে, কত না সংগীতে রটিত
কত না গ্রন্থে. কত না কন্ঠে পঠিত
তব অসংখ্য কাহিনী।
জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হে,
তুমি বিচিত্ররুপিনী’।

আগেই বলা হয়েছে যে, সৃষ্টির রহস্যে প্রতিটি জীবন-ই জীব বৈচিত্রে এক ভিন্নতর বৈশিষ্টের অধিকারী। এটি সীমা রেখার জীবনে-শ্রষ্ঠার মন্ত্রখেলা। এই মায়াবী ছলখেলা-ই শ্রষ্টার জগত পরিচালনার মন্ত্রমর্দ্দন। বিকাশ কাল হতে অনন্তকাল অব্দি এই খেলা সঞ্চালনই শ্রষ্টার খেয়ালীপনা। ঠিক যেন জলের সাথে তরঙ্গের মিতালী মনোহর। কবির চিন্তায়--

‘সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাঁও আপন স্বর
আমার মাঝে তোমার প্রকাশ তাই তো এতো মধূর’।

কল্পনা করা হয়-মানব জীবনেও সম-শক্তির সর্ম্পক অপ্রাপ্তিতে র্ঘুণায়নরত। জীবনের কাছে জীবন আপেক্ষীক-না হলে, শ্রষ্টার সৃষ্টিতত্ত্ব অলৌকিকতায় সীমাবন্ধ থাকত। কিন্তু জীব হিসাবে প্রত্যেক জীবনকে জীবের গর্ভে জন্ম নিতে হয়। তাই জীবন মাত্রই সারসংক্ষেপ। এটি শ্রষ্টার অন্তরমন্ত্র। বুদ্ধরা বলেছেন, সকলের তরে সকল মোরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে। সূখ দুঃখের চারনভূমি জগত সংসারে নারী/পুরুষ একে অপরের অবিচ্ছেদ্য রুপ। এই রুপের বহুমাত্রিকতা ভালবাসায় রুপায়িত। তাই বলা হয়-নিখিল বিশ্বের সৃজনকর্তা মহাপ্রভুর সারতত্ত্ব ভালবাসার অসীমতায় বিলিন।

কয়েক দিন আগে আমার এক পরিচিত সুহৃদ-নারীর সামাজিক মর্যাদা সম্পর্কীত রবী ঠাকুরের কয়েক চরন উল্লেখ্যপূর্বক আক্ষেপী ভাবনার বিপরীতে আমি নজরুলের পুজারীনি কবিতার কয়েক চরন তুলে ধরে ছিলাম যা ছিল ভাবনার ব্যতিক। আসল কথা নারী ও পুরুষের পার্থক্য শুক্ষèতম যা ভালবাসার বৃহত্তর ভাবনায় বিলিন। তথাকথিত সামাজিক চিন্তার এই বিষয় আত্ম -সমর্পনের মধ্যেই শ্রেষ্ঠত্বে পরিচয় মিলে। কে কার কাছে আগে আত্ম সমর্পন করে সেই বিষয়ের উপর-মহাত্ম দাবি। অনন্ত তত্ত্ব মতে, ‘লিঙ্গ বিচার ব্যতিক ভাবনা, মানুষ হিসাবে আমরা সকলেই সমান-এক শ্রষ্টাই শ্রেষ্ঠ। কবি বলেছেন-

পাদ প্রান্তে রাখি‘ সেবকে
শান্তিসদন সাধনধন দেবদেব হে’
সর্ব লোকপরমশরন সকল মোহ কলুষ হরণ
দুঃখতা পরিঘœতরন, শোক শান্তি সিগ্ধচরণ
সত্যরুপ প্রেমরুপ হে,
দেবমনুজবন্দিত পদ বিশ্বস্বামী হে।

শেষ প্রণতি, সৃষ্টির কারনেই আমরা এক অপরের প্রতি নির্ভরশীল। নারী/পুরুষ, জাতি/ধর্ম, ধনী/দরিদ্র, সবল/দুর্বল এই সকল ভাবনা ভাববাদী সংর্কীনতায় সীমাবদ্ধ। ভালবাসাপূর্ন হৃদয়ের আদান-প্রদানই শ্রেষ্ঠজনের পরিচয়। কাজেই লিঙ্গ বিচার নয় অনন্তের প্রকাশ-বিকাশ –ভাবনাও মুক্তিই জীবকূলে মূখ্য চিন্তা হওয়া বাঞ্চনীয়। কবির কবিতায়---

নির্ভয়ে চলিতে হবে, সত্যের করিয়া ধ্রুবতারা
মৃত্যুকে না করি শংকা। দুর্দিনের অশ্রুধারা
মস্তকে পড়িবে ঝরি-তারি মাঝে যাব অভিসারে
তার কাছে! জীবন সর্বস্বধন অর্পিয়াছি যারে
জন্ম জন্ম ধরি। কে সে? জানি না কে।
চিনি নাই তারে---।