Daffodil International University

Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Latest Technology => Topic started by: Md. Shahinur A. Khan on April 23, 2015, 09:43:01 AM

Title: গতির নতুন রেকর্ড গড়ল জাপানি ট্রেন
Post by: Md. Shahinur A. Khan on April 23, 2015, 09:43:01 AM
জাপানের একটি ট্রেন ঘণ্টায় ৬০৩ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলার নতুন রেকর্ড গড়েছে। ম্যাগলেভ (ম্যাগনেটিক লেভিটেশন বা বিশেষ চৌম্বক প্রযুক্তি) ট্রেনটি মাউন্ট ফুজি পর্বতের কাছাকাছি এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।
সেন্ট্রাল জাপান রেলওয়ে নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওই দ্রুতগামী ট্রেনটি পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ট্রেনটি গতকাল প্রায় ১১ সেকেন্ড ছুটে ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটারের বেশি গতি অর্জন করতে সমর্থ হয়। এটি এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে ঘণ্টায় ৫৯০ কিলোমিটার গতিতে চলে ২০০৩ সালের রেকর্ড (ঘণ্টায় ৫৮১ কিলোমিটার) ভেঙেছিল।
ম্যাগলেভে রয়েছে সাতটি কামরা। বৈদ্যুতিক প্রক্রিয়ায় চার্জ করা চুম্বকের শক্তির সাহায্যে তীব্র বেগে ছুটে চলার সময় এটি রেললাইন থেকে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার ওপরে ভেসে থাকে। গতকালের নতুন রেকর্ড গড়া যাত্রাটি উপভোগ করতে প্রায় ২০০ দর্শক উপস্থিত ছিলেন। ম্যাগলেভ ট্রেনটি ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটারের বেশি গতি তোলার পর তাঁরা হর্ষধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানান। একজন বৃদ্ধা দর্শক স্থানীয় গণমাধ্যম এনএইচকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছি। সত্যি আমি ট্রেনটিতে চড়তে চাই।’
অতি দ্রুতগামী ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতা অনেকটা উড়োজাহাজে চড়ার মতোই, এএফপির একজন প্রতিবেদক এ ধরনের একটি ট্রেনে চড়ার অনুভূতি জানিয়ে মন্তব্য করেন। জাপানের রাজধানী টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমে ম্যাগলেভ ট্রেনটির পরীক্ষামূলক চালনায় যুক্ত বিশেষজ্ঞদের প্রধান ইয়াসুকাজু এন্ডো গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, দ্রুতগামী ট্রেন যত দ্রুত ছুটে চলে, তত স্থিতিশীলতা অর্জন করে। তিনি মনে করেন, ম্যাগলেভের মান আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
সাধারণ যাত্রীরা অবশ্য ম্যাগলেভে চড়ে ঘণ্টায় ৬০৩ কিলোমিটার গতিতে চলার অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন না। কারণ, এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালানো হবে না। এখন জাপানে যে ‘বুলেট ট্রেন’ বা শিনকানসেন ট্রেন চলে, তার গতি ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার।
সেন্ট্রাল জাপান রেলওয়ে টোকিও থেকে মধ্যাঞ্চলীয় শহর নাগোয়া পর্যন্ত ২৮৬ কিলোমিটার পথে ২০২৭ সালের মধ্যে ম্যাগলেভ ট্রেনটি নিয়মিত চালাতে চায়। তখন ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেনটি দুই শহরের মধ্যে মাত্র ৪০ মিনিটের যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে এখন জাপানে যেসব বুলেট ট্রেন চলে, সেগুলোর চেয়ে অর্ধেকেরও কম সময় নেবে ম্যাগলেভ।
২০৪৫ সালের মধ্যে জাপানের টোকিও থেকে ওসাকায় যেতে ম্যাগলেভে সময় লাগবে মাত্র এক ঘণ্টা সাত মিনিট। এতে ওই দীর্ঘ পথে যাত্রার সময় এখনকার চেয়ে অর্ধেকে নেমে আসবে। তবে দ্রুতগামী ওই ট্রেনের জন্য রাস্তা বা রেললাইন তৈরির খরচ পড়বে অনেক, যা অনেকটা মহাকাশযানের ব্যয়ের সঙ্গে তুলনীয়। নাগোয়া পর্যন্ত লাইন স্থাপন করতেই আনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
জাপান তাদের বুলেট ট্রেন এবং ম্যাগলেভ ট্রেনের প্রযুক্তি বিদেশে বিক্রি করতে চায়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এ লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগও নিয়েছেন। তিনি চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। সেখানকার নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে তিনি জাপানি উচ্চগতির ট্রেনপ্রযুক্তি বিক্রির প্রস্তাব দেবেন। জাপানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্যারোলিন কেনেডি গত বছর এ রকম একটি দ্রুতগামী ট্রেনে আবের সঙ্গে আরোহী হয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রার অভিজ্ঞতা নেন।

সূত্র: এএফপি ও বিবিসি।