Daffodil International University
Faculty of Humanities and Social Science => Law => Topic started by: safiullah on May 16, 2015, 01:01:24 PM
-
শুকুর আলী, মৃত্যুদণ্ড ও সংবিধান
আইন ও বিচার
সম্প্রতি আপিল বিভাগ শাস্তি হিসেবে শুধু মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯৫-এর কিছু ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শুকুর আলীর কী হবে? শুকুর আলী এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি। সাকিন মানিকগঞ্জ। অপরাধ সংঘটনের সময় তার বয়স ছিল ১৪ বছর। আইনে ওই বয়সটি 'শিশু'র সংজ্ঞার আওতায় পড়ে। ২০০১ সালে বিচারিক ট্রাইব্যুনালে ১৯৯৫ সালের ওই আইনের আওতায় শুকুর আলীর ফাঁসির আদেশ হয়। ওই আইনে ধর্ষণসহ হত্যার একমাত্র শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। শুকুর আলীর বিচারের রায় হওয়ার আগেই ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে নতুন আইন প্রণীত হয়। নতুন আইনের মাধ্যমে ১৯৯৫-এর আইনটিকে বাতিল করা হয় এবং শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়। তবে নতুন আইনে বলা হয়, আগের আইনের অধীন দায়েরকৃত মামলাগুলোর বিচার অব্যাহত থাকবে।
বিচারিক ট্রাইব্যুনাল (২০০১), হাইকোর্ট বিভাগ (২০০৪) এবং আপিল বিভাগ (২০০৫) সব স্তরেই শুকুর আলী দোষী সাব্যস্ত হয়। এমনকি তার পক্ষে করা রিভিউ আবেদনও আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট ১৯৯৫-এর আইনে শাস্তি হিসেবে কেবল মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করে (২০০৫)। শুকুর আলী ওই রিটের একজন সহ-আবেদক হয়। ২০১০ সালে হাইকোর্ট বিভাগ বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন।
আপিল বিভাগের সাম্প্রতিক (২০১৫) রায়ে হাইকোর্ট বিভাগের পর্যবেক্ষণ বহাল থাকল (রায়টির সারমর্ম পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায়)। বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের সাংবিধানিক প্রশ্নের সুরাহা হলেও শুকুর আলীর ওপর এই রায়ের প্রভাব কী হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। ১৪ বছর ধরে ফাঁসির খড়্গ মাথায় নিয়ে সে জেলে আছে। একটি আইনের বিধান অবৈধ হলে তা শুরু থেকেই অবৈধ হওয়ার কথা। তাহলে শুকুর আলী কি মুক্তি পাবে? নাকি তার ফাঁসি বহাল থাকবে? নাকি তার দণ্ড কিছুটা লাঘব হবে?
আইন ও বিচার ব্যবস্থার এই দীর্ঘ পরিক্রমায় ন্যায়বিচারের স্বরূপই-বা কী? ওই যে একবার এক বৃদ্ধার গরু চুরি হলো। অভিযুক্ত প্রমাণ করলেন, তিনি ঘটনার রাতে অন্য জায়গায় ছিলেন (ধষরনর)। বিচারক রায়ে বললেন যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে অভিযুক্তকে খালাস দেওয়া হলো। বৃদ্ধা আদালতেই ছিলেন। তিনি বলে উঠলেন : বাবা, ন্যায়বিচার হলো বুঝলাম, কিন্তু আমার গরু কোথায়?
শুকুর আলী মামলাটির সঙ্গে শুধু শাস্তি সংক্রান্ত আইন বা সাংবিধানিক আইনের প্রশ্নই জড়িত নয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার উৎকর্ষ এবং বিচারিক সৌকর্যের দিকটিও জড়িত। এমনকি এর একটা আইনি-রাজনৈতিক দিকও রয়েছে। কেননা, ফৌজদারি আইনে শিশুর মৃত্যুদণ্ড প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির প্রশ্ন। আইনজ্ঞরা এ ধরনের মামলাকে শক্ত মোকদ্দমা বা 'হার্ড কেস' হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে আদালত উঁচুদরের রাজনীতির সঙ্গে আইনের আপস ঘটান। আমরা মনে করি, মামলাটির তাৎপর্য নিয়ে নাগরিক আলাপ-আলোচনা ও তর্ক-বিতর্ক চলা দরকার। ২০১০ সালে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে বিচারপতি ইমান আলী অনুভব করেছিলেন যে, বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে জনগণ, সংসদ ও গবেষকরা বিতর্ক করতে পারেন [ব্লাস্ট মামলা, ২০১০, পৃ. ৩৩]। তার এই প্রাসঙ্গিক মতামত (ড়নরঃবৎ ফরপঃধ) থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং আপিল বিভাগের সাম্প্রতিক রায়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা এখানে কিছু বক্তব্য রাখছি।
আমাদের প্রথম পর্যবেক্ষণ হলো, মৃত্যুদণ্ডের সাংবিধানিক বৈধতা প্রশ্নে উচ্চ আদালত বড় কোনো মেধাতাত্তি্বক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। ব্লাস্ট বা শুকুর আলীর পক্ষ থেকে আইনজীবীরা দৃশ্যত মৃত্যুদণ্ডের সাংবিধানিকতা স্বীকার করে নিয়ে 'বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের সাংবিধানিক বৈধতার' ওপর তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। এতে আদালতের কাজ সহজতর হয়েছে। মূলত দুটি যুক্তিতে উচ্চ আদালত একমাত্র শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে সাংবিধানিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ঘোষণা করেছেন :
১. এটি আদালতের বিবেচনাবোধকে (ফরংপৎবঃরড়হ) খর্ব করে। অপরাধীকে হয় মৃত্যুদণ্ড দিতে হয়, না হয় খালাস; তার অপরাধমনস্কতা, অপরাধের ধরন ও মাত্রা এবং পারিপাশর্ি্বক অবস্থা বিবেচনা করার সুযোগ বিচারকের থাকে না। তাছাড়া শাস্তি হিসেবে কেবল মৃত্যুদণ্ড এক ধরনের নিষ্ঠুরতাও বটে।
২. বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত বিভিন্ন মানবাধিকার দলিলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ সংবিধানেও প্রতিফলিত। দুটি যুক্তিই আইনের কাছে অগ্রগণ্য। তবে উচ্চ আদালতের রায়ে আমরা যেটা পাইনি তা হলো, নাগরিকের জীবনের অধিকারের আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণ। যদিও এ কথা মনে রাখতে হবে যে, সাধারণ অর্থে মৃত্যুদণ্ডের বৈধতা আদালতের সামনে মূল ইস্যু ছিল না। তবুও শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড আমাদের সংবিধানসিদ্ধ_ এ ধারণায় আমাদের সাংবিধানিক 'ইমেজ' আরও পরিশীলিত হওয়া উচিত নয় কি? আধুনিক সাংবিধানিকতাবাদে বিকল্প শাস্তির পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের অবস্থান বিষয়ে আদালতের মতামত আমাদের কাম্য ছিল। ২০১০ সালে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডকে আবেগিক বিষয় (বসড়ঃরাব রংংঁব) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল [বিচারপতি ইমান আলী, ব্লাস্ট মামলা, পৃ, ১৯]। তাহলে এই 'ইমোটিভ' বিষয়টি আদালতকেও আচ্ছন্ন করার কথা। আপিল বিভাগের রায়ের ফলে আমাদের শাস্তিতত্ত্ব একটু এগোলো বটে; কিন্তু আমরা মনে করি, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত সাংবিধানিক আইনবিজ্ঞান আরও ঋদ্ধ করা যেত। সেটা হতে পারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের শাস্তি ব্যবস্থা নিয়ে গড়ে ওঠা অনেক উদ্বেগের বিপরীতে একটি ভালো বিচারিক বার্তা।
আমাদের দ্বিতীয় কথাটি কিছুটা আক্ষেপের। শিশুদের জন্য ন্যায়বিচারের ধারণাটি (লাঁবহরষব লঁংঃরপব) শুকুর আলী মামলার বিভিন্ন স্তরে যথার্থ গুরুত্ব পায়নি। শিশু আইন, ১৯৭৪ অনুসারে বাংলাদেশে ফৌজদারি আইন লঙ্ঘনকারী শিশুর ক্ষেত্রে ('শিশু অপরাধী' অভিধাটি পরিত্যাজ্য) মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অপ্রযোজ্য ছিল [বর্তমানে দেখুন শিশু আইন, ২০১৩, ধারা ৩৩]। ১৯৮৯ সালের জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ তার এই অবস্থান আর সুদৃঢ় করেছিল। স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, ১৯৯৫ সালের আইনে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির আওতায় শিশুদের আসার কথা নয়। কারণ, শাস্তির বিধানটি শিশুদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেওয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কিশোর আদালতের এখতিয়ার প্রয়োগ করে শুকুর আলীর বিচার সম্পন্ন করে। বিচারিক ট্রাইব্যুনাল 'শিশু' শুকুর আলীকে 'ব্যক্তি'রূপে গণ্য করেছিলেন এবং ১৯৯৫ সালের আইনটিকে বিশেষ আইন বিবেচনায় ১৯৭৪ সালের আইনের বিধান প্রয়োগ করেননি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অথচ ১৯৭৪ সালের আইনটিও ছিল শিশুদের জন্য বিশেষ আইন, যার একটি সাংবিধানিক মর্যাদা রয়েছে বলে হাইকোর্ট বিভাগের ২০০৭ সালের একটি মামলায় স্বীকৃত হয়েছে [রাষ্ট্র বনাম রওশন মণ্ডল]।
আমরা ভেবে পাচ্ছি না শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধানটি অপ্রযোজ্য থাকা সত্ত্বেও তা সব স্তরের আদালতের নজর এড়িয়ে গেল কেমন করে। বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতে ফৌজদারি আপিল শুনানিতে বিষয়টি আসেনি। এর কারণ হলো, বিচারিক আদালতে কেউই এ নিয়ে আপত্তি করেননি। আর ব্লাস্টের রিটে উচ্চ আদালত [২০১০, ২০১৫] শুধু আইনটির সাংবিধানিকতা যাচাই করেছেন, ফৌজদারি মামলার যথার্থতা বিচার করেননি।
এমনকি ২০০৭ সালে হাইকোর্ট বিভাগ রাষ্ট্র বনাম রওশন মণ্ডল মামলায় ১৯৭৪ সালের শিশু আইনকে যে 'নিরঙ্কুশভাবে ব্যতিক্রম' (ংঁর মবহবৎরপ), 'সর্বজনীন', 'প্রাগ্রসর' এবং 'সংবিধান সমর্থিত আইন' বলে রায় দিয়েছিলেন তারও সঠিক মূল্যায়ন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা জানি, আইন ও আদালতের মূলে রয়েছে মানুষ। আইনের 'সাবজেক্ট' মানুষকে বাদ দিয়ে অপরাধকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলে তা শুধু আমাদের অপরাধ আইনকে শক্তই করবে, উন্নত করবে না।
শুকুর আলীর অপরাধ ছিল নিঃসন্দেহে জঘন্য। কিন্তু সঠিক আইনে, সঠিক আদালতে বিচারপ্রাপ্তি তার সাংবিধানিক অধিকার। আপিল বিভাগ শাস্তি হিসেবে শুধু মৃত্যুদণ্ডকে 'আইনের নির্ধারিত পদ্ধতি'র বরখেলাপ বলেছেন। ভুল আইনে বিচার হওয়াও তো 'আইনের নির্ধারিত পদ্ধতি'র লঙ্ঘন। সে মতে, রিট নিষ্পত্তিতে শুকুর আলীর বিরুদ্ধে আনীত ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম পরীক্ষণের আওতায় কি আসতে পারত না? ১৪ বছর ধরে ফাঁসির আসামিকে ঝুলিয়ে রাখে যে বিচার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক মানদণ্ডে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? তাই আমাদের বিচারিক সক্রিয়তাকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। স্মর্তব্য যে, বাংলাদেশ সংবিধানে 'সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার' (পড়সঢ়ষবঃব লঁংঃরপব) নিশ্চিত করার ক্ষমতা আপিল বিভাগকে দেওয়া হয়েছে [অনুচ্ছেদ ১০৪]।
শুকুর আলীর শাস্তির বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে আদালত তার সিদ্ধান্ত দান থেকে বিরত ছিলেন। শাস্তি হিসেবে কেবল মৃত্যুদণ্ডকে বেআইনি বললেও আদালত শুকুর আলীর ফাঁসির আদেশকে বাতিল করেননি। এ ক্ষেত্রে আপিল বিভাগ কী অবস্থান নিয়েছেন তা পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এও নিশ্চিত হওয়া যাবে, ১৯৯৫ সালের আইনের বাইরে প্রচলিত ১৮৬০ সালের দণ্ড বিধিতে [ধারা ৩০৩] যে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে সে বিষয়ে আদালতের মতামত কী।
শুকুর আলীর অপরাধ গুরুতর ছিল বলেই হয়তো তা আমাদের চিন্তায় নেই। তবে একজন শুকুর আলী সৃষ্টিতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভূমিকাও প্রশ্নসাপেক্ষ। ১৯৯৫ সালের আইন প্রণয়নে এই যে উদাসীনতা, বিচারিক প্রক্রিয়ায় এই যে ঘাটতি, মানবাধিকার আইনের এই যে মান, সাংবিধানিক ব্যাখ্যার এই যে দুর্বলতা, তা যে কোনো নির্দোষ বা কম গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত মানুষের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। আপিল বিভাগের রায়ে বিষয়গুলো কীভাবে বিস্তারিত উঠে এসেছে তা দেখার জন্য আমরা প্রতীক্ষায় রইলাম।
ড. রিদওয়ানুল হক ও এস এম মাসুম বিল্লাহ লেখকদ্বয় যথাক্রমে সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিএইচডি গবেষক ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন
See more: http://www.samakal.net/2015/05/16/137114
-
Good read. Thanks for sharing!
-
Thanks a lot @ Arif sir
-
:)
-
শুকুর আলী মামলাটির সঙ্গে শুধু শাস্তি সংক্রান্ত আইন বা সাংবিধানিক আইনের প্রশ্নই জড়িত নয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার উৎকর্ষ এবং বিচারিক সৌকর্যের দিকটিও জড়িত। এমনকি এর একটা আইনি-রাজনৈতিক দিকও রয়েছে। কেননা, ফৌজদারি আইনে শিশুর মৃত্যুদণ্ড প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির প্রশ্ন। আইনজ্ঞরা এ ধরনের মামলাকে শক্ত মোকদ্দমা বা 'হার্ড কেস' হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে আদালত উঁচুদরের রাজনীতির সঙ্গে আইনের আপস ঘটান।
শুকুর আলীর অপরাধ ছিল নিঃসন্দেহে জঘন্য। কিন্তু সঠিক আইনে, সঠিক আদালতে বিচারপ্রাপ্তি তার সাংবিধানিক অধিকার। আপিল বিভাগ শাস্তি হিসেবে শুধু মৃত্যুদণ্ডকে 'আইনের নির্ধারিত পদ্ধতি'র বরখেলাপ বলেছেন। ভুল আইনে বিচার হওয়াও তো 'আইনের নির্ধারিত পদ্ধতি'র লঙ্ঘন। সে মতে, রিট নিষ্পত্তিতে শুকুর আলীর বিরুদ্ধে আনীত ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম পরীক্ষণের আওতায় কি আসতে পারত না? ১৪ বছর ধরে ফাঁসির আসামিকে ঝুলিয়ে রাখে যে বিচার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক মানদণ্ডে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?
Well said.