Daffodil International University

Famous => History => Topic started by: Lazminur Alam on May 21, 2015, 11:47:46 AM

Title: পৃথিবীতে একমাত্র জীবিত বিস্ময়কর “সাহাবী গাছ”!
Post by: Lazminur Alam on May 21, 2015, 11:47:46 AM
বিস্ময়কর ১৫০০ বছরের সাহাবি গাছ। শুনতে অবাক লাগে আজো বেঁচে আছে গাছটি। পৃথিবীতে এত পুরনো কোনো গাছ এত বছর এখনো বেঁচে আছে কি না জানিনা। আর তেমনই একটি প্রমাণ হচ্ছে সাহাবি গাছ। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় The Blessed Tree।

সাহাবি গাছ এমনই একটি গাছ যে গাছটি অবিশ্বাস্যভাবে শত বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বেষ্টিত মরুভূমিতে গত ১৫০০ বছর ধরে একাই দাঁড়িয়ে আছে। মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশের কারণে জন্ম থেকেই এই গাছটি ছিল পাতাহীন শুকনো কিন্তু এক সময় আল্লাহর হুকুমে গাছটি সবুজ পাতায় ভরে উঠে এবং আজ পর্যন্ত গাছটি সবুজ শ্যামল অবস্থায় আছে। অবিশ্বাস্য এই গাছটি জর্ডানের মরুভূমির অভ্যন্তরে সাফাঈ এলাকায় অবস্থিত।  জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ সর্বপ্রথম এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দেন।
৫৮২ খ্রিস্টাব্দে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর বয়স তখন ১২ বছর। তিনি তাঁর চাচা আবু তালিবের সঙ্গে বাণিজ্য উপলক্ষে তৎকালীন শাম বা সিরিয়ার উদ্দেশে মক্কা থেকে যাত্রা করেন।
তাদের পরিভ্রমণের পথে তাঁরা সিরিয়ার অদূরে জর্ডানে এসে উপস্থিত হন। জর্ডানের সেই এলাকাটি ছিল শত শত মাইলব্যাপী বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকাময় এক মরুভূমি। মোহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর চাচা আবু তালিব মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময় ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রামের জায়গা খুঁজছিলেন। কিন্তু আশে পাশে তারা কোনো বসার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। চারদিকে যত দূর চোখ যায় তাঁরা তাকিয়ে কোনো বৃক্ষরাজির সন্ধান পেলেন না। কিন্তু দূরে একটি মৃত প্রায় গাছ দেখতে পেলেন। উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝে গাছটি ছিল লতাপাতাহীন শীর্ণ ও মৃত প্রায়। শেষে উপায় না পেয়ে তারা মরুভূমির উত্তাপে শীর্ণ পাতাহীন সেই গাছের তলায় বসেন। উল্লেখ্য, রাসূল মোহাম্মদ (সা.) যখন পথ চলতেন তখন আল্লাহর নির্দেশে মেঘমালা তাকে ছায়া দিতো এবং বৃক্ষরাজি তার দিকে হেলে পড়ে ছায়া দিতো।
মোহাম্মদ (সা.) তার চাচাকে নিয়ে যখন গাছের তলায় বসেছিলেন তখন তাদের ছায়া প্রদানের জন্য আল্লাহর নির্দেশে মৃতপ্রায় গাছটি সজীব হয়ে উঠে এবং গাছটির সমস্ত ডাল-পালা সবুজ পাতায় ভরে উঠে। আর সেই গাছটিই বর্তমানে সাহাবি গাছ নামে পরিচিত। দূরে দাঁড়িয়ে জারজিস ওরফে বুহাইরা নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রি সবকিছু দেখছিলেন।
আবু তালিব মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে পাদ্রীর কাছে গেলে তিনি বলেন,  ‘আমি কোনো দিন এই গাছের নিচে কাউকে বসতে দেখিনি এবং এই গাছটিও ছিল পাতাহীন কিন্তু আজ গাছটি পাতায় পরিপূর্ণ। এই ছেলেটির নাম কি? চাচা আবু তালিব উত্তর দিলেন মোহাম্মদ! পাদ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বাবার নাম কি?’ আব্দুল্লাহ!, ‘মাতার নাম?’ আমিনা!

বালক মোহাম্মাদকে (সা.) দেখে এবং তার পরিচয় শুনে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পাদ্রীর চিনতে আর বাকি রইলো না যে এই সেই বহু প্রতীক্ষিত শেষ নবী মোহাম্মদ। পাদ্রী চাচা আবু তালিবকে ডেকে বললেন, ‘তোমার সঙ্গে এই বালকটি সারা জগতের সর্দার, সারা বিশ্বের নেতা এবং সেই হবে এই জগতের শেষ নবী। আমি তার সম্পর্কে বাইবেলে পড়েছি এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি এই বালকটিই শেষ নবী।’
সাহাবী গাছ সেই ১৫০০ বছর আগ থেকে আজ পর্যন্ত সেইভাবেই জর্ডানের মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে। আজও গাছটি সবুজ লতা-পাতায় ভরা এবং সতেজ ও সবুজ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে এই গাছটি যেখানে অবস্থিত তেমন মরূদ্যানে কোনো গাছ বেঁচে থাকা সম্ভব নয়  এবং এই গাছটির আশে-পাশে কয়েকশ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোনো গাছ নেই। গাছটির চারিধারে দিগন্ত জোড়া শুধুই মরুভূমি আর মরুভূমি। উত্তপ্ত বালুকাময় মরুভূমির মাঝে গাছটি একাই দাঁড়িয়ে থেকে আল্লাহর অসীম ক্ষমতার সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে প্রিয় রাসূল মোহাম্মদের (সা.) স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রেখেছে। যা অবিশ্বাসীদের জন্য উৎকৃষ্ট নিদর্শন।