Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Ramadan and Fasting => Topic started by: Md. Neamat Ullah on June 29, 2015, 11:52:05 AM
-
রোজার প্রধান লক্ষ্য তাকওয়া অর্জন
আরবি বছরের নবম মাস রমজান। আরবি ১২ মাসের মধ্যে রমজান মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।
আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর ওপর ইমান আনার পর ধনী-গরিব নির্বিশেষে প্রত্যেক ইমানদার বান্দার ওপর দুটি কাজ ফরজ। প্রথমটি হলো নামাজ আর দ্বিতীয়টি রোজা। জাকাত ও হজ করা দরিদ্র বা গরিবদের ওপর ফরজ নয়, ধনীদের জন্য নির্ধারিত। প্রত্যেক বালেগ মুসলিম নর-নারীর ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। রোজা ফরজ হওয়ার বিধানকে অস্বীকার করলে কেউ মুসলমান থাকে না।
ব্যক্তিজীবন, সমাজ উন্নয়ন ও মানবতার সেবায় রোজার বহু উপকারিতা রয়েছে। তবে রোজার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো তাকওয়া অর্জন। ইরশাদ হয়েছে, 'হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া বা পরহেজগারি অর্জন করতে পারো।' (সুরা বাকারাহ : ১৮৩)
তাকওয়া অর্থ বাঁচা, আত্মরক্ষা করা, নিষ্কৃতি লাভ করা, ভয় করা। অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অপরাধ, অন্যায় ও আল্লাহর অপছন্দনীয় কথা, কাজ ও চিন্তা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার নাম তাকওয়া।
একদা হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে হজরত ওমর (রা.) তাকওয়ার স্বরূপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, 'হে ওমর (রা.)! পাহাড়ের দুই ধারে কাঁটাবন, মাঝখানে সরু পথ। এমতাবস্থায় কিভাবে চলতে হবে?' হজরত ওমর (রা.) বললেন, 'গায়ে যেন কাঁটা না লাগে, সাবধানে পথ চলতে হবে।'
হজরত কাব (রা.) বললেন, 'এটাই তাকওয়া।' কেউ কেউ বলেন, তাকওয়া হলো অন্তরের জ্যোতি বা উজ্জ্বলতার নাম। যার মাধ্যমে বান্দা সঠিক পথ ও কর্মপন্থা বেছে নিতে পারে।
তাকওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে পবিত্র কোরআনে আড়াই শর বেশি আয়াত আনা হয়েছে। কেবল সুরা বাকারাতেই প্রায় ৩০ বার তাকওয়া শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত তাকওয়াই হলো ইবাদতের প্রাণশক্তি।
এ জন্য পবিত্র কোরআনে প্রায় প্রতিটি বিধিবিধানের পরই তাকওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এমনকি তাকওয়াবিবর্জিত ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, 'নিঃসন্দেহে আল্লাহ কেবল মুত্তাকিদের আমলই কবুল করেন।' (সুরা মায়েদা : ২৭)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, 'আল্লাহর কাছে (তোমাদের কোরবানির) গোশত বা রক্ত কোনোটিই পৌঁছে না; কিন্তু তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া পৌঁছে।' (সুরা হজ : ৩৭)
আল্লাহর কাছে সাদা-কালো, ধনী-দরিদ্র, আরব-অনারব, প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের ভিত্তিতে কারো মূল্যায়ন হয় না; বরং মূল্যায়নের ভিত্তি হলো তাকওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, 'নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক তাকওয়া অর্জনকারী।' (সুরা হুজরাত : ১৩)
আর তাকওয়ার অর্থ দিয়েই বোঝা যায়, এখানে বেঁচে থাকার কথা বলা হয়েছে। আমরা জানি, বেঁচে থাকতে হয় বিপজ্জনক, প্রতিকূল ও বেগতিক অবস্থা থেকে।
সুতরাং আজকের এই পাপ-পঙ্কিলতাপূর্ণ পৃথিবী, যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে অশ্লীলতা, পাপাচার, অনাচার, শিরক, কুফর ও বিদআত অক্টোপাসের মতো লেগে আছে; দুর্নীতি, সুদ আর ঘুষের যেখানে মহোৎসব চলছে, সেখানে একজন মুমিনকে জীবনপথ পাড়ি দিতে হবে খুবই সাবধানে, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। জীবন-সফরের এ বিভীষিকাময় পথ পাড়ি দিতে হবে অত্যন্ত সজাগ দৃষ্টি রেখে, মধ্যপন্থা অবলম্বন করে।
- See more at: http://www.deshebideshe.com/news/details/53032#sthash.7dEXM7pe.dpuf