Daffodil International University

General Category => Common Forum => Topic started by: Ishtiaque Ahmad on August 02, 2015, 04:24:20 PM

Title: বিজ্ঞানী স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়)
Post by: Ishtiaque Ahmad on August 02, 2015, 04:24:20 PM
বিজ্ঞানী স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি) ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ তীরের রাড়ুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছেলেবেলা থেকেই পিসি রায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তার পড়াশুনা শুরু হয়, তারই বাবার প্রতিষ্ঠিত এম.ই. স্কুলে।

১৮৭২ সালে তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু, অসুস্থতার কারণে তার পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে। বাধ্য হয়ে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে আসতে বাধ্য হন।

গ্রামে থাকার সময় তার জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। তিনি বাড়ির গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত নানা বিষয়ে প্রচুর বই পড়েন।

ওই সময় কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন অলেকজান্ডার পেডলার। খ্যাতিমান এ অধ্যাপকের সান্নিধ্যে এসে রসায়নের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় তার। কলেজের পাঠ্যবই ছাড়াও বিভিন্ন পাঠাগার থেকে রসায়নের বই সংগ্রহ করে পড়তেন পিসি রায়।

নিজের চেষ্টায় বাড়িতে পরীক্ষাগার স্থাপন করে রসায়ন সম্পর্কে নানানরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতেন তিনি। এরপর তিনি গিলক্রিস্ট বৃত্তি নিয়ে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। সেখান থেকে তিনি বিএসসি এবং ডিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।

ওই সময় তিনি শ্রেষ্ঠ গবেষণাপত্রের জন্য ‘হোপ প্রাইজ’এ ভূষিত হন। ইউরোপের নানা দেশ ঘুরে ১৮৮৮ সালে প্রফুল্ল রায় দেশে ফিরে আসেন। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন প্রেসিডেন্সি কলেজে।

১৮৯৫ সালে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট (HgNO2) আবিষ্কার করেন, যা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। এটি তার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। তার সমগ্র জীবনে মোট ১২টি যৌগিক লবণ এবং পাঁচটি থায়এস্টার আবিষ্কার করেন।

১৯০৩ সালে চারটি গ্রামের নাম মিলে বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায় দক্ষিণ বাংলায় প্রথম আর. কে. বি. কে. হরিশচন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করেন। একই স্থানে স্যার পিসি রায়ের বাবা উপমহাদেশে নারী শিক্ষা উন্নয়নকল্পে ভুবনমোহিনীর নামে ১৮৫০ সালে রাড়ুলী গ্রামে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আজও প্রতিষ্ঠানগুলো স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যখন বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন গোপনে অস্ত্র কেনার জন্য তিনি বিপ্লবীদের সাহায্য করেন। ১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৬ সালে কলকাতায় তিনিই প্রথমবারের মতো মহাত্মা গান্ধীর জনসভা আয়োজন করেন।

১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতবর্ষের মহিসুর ও বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।

এছাড়া মৃত্যুর আগে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ও নাইট উপাধি অর্জন করেন।

১৯৪৪ সালে ১৬ জুন জীবনাবসান ঘটে চিরকুমার বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল চন্দ্র রায়ের। এই বিজ্ঞানী তার জীবনের অর্জিত সমস্ত সম্পত্তি মানবকল্যাণে দান করে গেছেন।