Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: Lazminur Alam on September 22, 2015, 07:04:19 PM

Title: আল্লাহকে দেখা কি সম্ভব?
Post by: Lazminur Alam on September 22, 2015, 07:04:19 PM
 ১০৩. কোনো কিছুরই দৃষ্টিসীমা তাঁকে বেষ্টন করতে পারে না, কিন্তু তিনি সবার দৃষ্টি বেষ্টন করতে পারেন।  তিনি অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী, সুবিজ্ঞ।


১০৪. তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণ অবশ্যই এসে গেছে।  অতএব যে প্রত্যক্ষ করবে, সে নিজেই লাভবান হবে আর যে অন্ধ হবে, সে নিজেরই ক্ষতি করবে।  (বলে দাও) আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই।

১০৫. এভাবেই আমি নিদর্শনাবলী বিভিন্নভাবে বর্ণনা করি, যাতে তারা না বলে যে আপনি তো এগুলো অধ্যয়ন করে বলছেন কিন্তু আমি তো জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করি।

১০৬. তুমি ওই পথ অনুসরণ করো, যার আদেশ তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আসে।  তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই আর মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও।

১০৭. আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তবে তারা শিরক করতো না।  আমি তোমাকে তাদের জন্য রক্ষক নিযুক্ত করিনি আর তুমি তাদের কার্যনির্বাহীও নও।  (সুরা আনআম : ১০৩-১০৭)

তাফসির : আলোচ্য প্রথম আয়াতের বক্তব্য হলো- জিন, মানব, ফেরেশতা ও যাবতীয় জীবজন্তুর দৃষ্টি একত্র হয়েও আল্লাহর সত্তাকে বেষ্টন করে দেখতে পারে না।  পক্ষান্তরে আল্লাহ তা’য়ালা সমগ্র সৃষ্টি জীবের সৃষ্টিকে পূর্ণরূপে দেখেন।  আসলে দৃষ্টি মানুষের ইন্দ্রিয়বিশেষ।  এর দ্বারা শুধু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়গুলোরই জ্ঞান লাভ করা যায়।

নিরাকার সত্তাকে দেখার ক্ষমতা সাকার মানুষের নেই।  নশ্বর দেহবিশিষ্ট প্রাণীকে অবিনশ্বর স্রষ্টার দর্শন পাওয়ার শক্তি দেয়া হয়নি।  আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী অসীম।  মানবিক ইন্দ্রিয়, বুদ্ধি ও কল্পনা সসীম। 

এটা সবাই জানে, কোনো অসীমকে কোনো সসীম নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে না।  তাই বিশ্বের যত বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক যুক্তিতর্কের নিরিখে স্রষ্টার সত্তা ও গুণাবলীর অনুসন্ধান-গবেষণা করেছেন, যত সুফি মনীষী 'কাশফ' (অন্তর্দৃষ্টি) ও 'ইলহাম' (ঐশী জ্ঞান)-এর আলো নিয়ে এ ক্ষেত্রে বিচরণ করেছেন, তাঁরা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর স্বরূপ কেউ উন্মোচন করতে পারেননি।

আল্লাহকে দেখা কি সম্ভব?

মানুষ আল্লাহ তা’য়ালাকে দেখা সম্ভব কি না- এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদা ও বিশ্বাস হলো, এ জগতে এটি সম্ভবপর নয়।  এ কারণে হজরত মুসা (আ.) যখন ‘হে প্রতিপালক, আমাকে দেখা দাও’ বলে আল্লাহকে দেখতে চেয়েছেন, তখন উত্তরে বলা হয়েছিল : ‘তুমি কখনোই আমাকে দেখতে পারবে না।’

হজরত মুসা (আ.) নবী হয়ে যখন এ উত্তর পেয়েছিলেন, তখন অন্য কোনো জিন ও মানুষের পক্ষে আল্লাহকে দেখার সাধ্য আছে কি? তবে এসব কথা দুনিয়ার জীবনের জন্য প্রযোজ্য। কেননা পরকালে মুমিনরা আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবেন। 

এ কথা সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।  কোরআনেও বলা হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন অনেক মুখমণ্ডল সজীব ও প্রফুল্ল হবে।  তারা নিজ পালনকর্তাকে দেখতে থাকবে।’ (সুরা কিয়ামা : ২২-২৩)

তবে কাফির ও অবিশ্বাসীরা সেদিনও শাস্তি হিসেবে আল্লাহকে দেখার গৌরব থেকে বঞ্চিত থাকবে।  আল্লাহ বলেন, ‘কাফিররা সেদিন নিজ পালনকর্তার সাক্ষাৎ থেকে (আড়ালে থাকবে) বঞ্চিত হবে’। (সুরা মুতাফ্ফিফিন : ১৫)

একটি বিভ্রান্তির নিরসন

উল্লিখিত আয়াতে বলা হয়েছে, ‘কারো দৃষ্টি তাঁকে বেষ্টন করতে পারে না।’ তাহলে কিয়ামতে মুমিনরা আল্লাহকে কিভাবে দেখবেন? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, কিয়ামতে আল্লাহকে দেখাও চতুর্দিকে বেষ্টন করে হবে না। 

দুনিয়াতে তাঁকে আংশিক বা পূর্ণরূপে কোনো অবস্থাতেই দেখা যাবে না।  তবে পরকালে এ শক্তি মানুষকে দেয়া হবে, যাতে সে আল্লাহর দেখা ও সাক্ষাৎ লাভ করতে পারে।  কিন্তু তখনো আল্লাহর সত্তাকে চতুর্দিক থেকে ও সর্বোতভাবে দেখা সম্ভব হবে না।