Daffodil International University
Faculty of Allied Health Sciences => Nutrition and Food Engineering => Topic started by: Md. Fouad Hossain Sarker on November 23, 2015, 03:28:10 PM
-
টমেটো একটি দৃষ্টিনন্দন শীতের সবজি। এটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সবজি হিসেবে টমেটোর জুড়ি অনেক। টমেটো আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায়। এটি যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, ঠিক একইভাবে রান্না করে বা রান্না সুস্বাদু করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কাঁচা ও পাকা—এই দুই অবস্থাতে টমেটো খাওয়া যায়। রান্না না করলে টমেটোর যে পুষ্টিগুণ থাকে, রান্না করলে সেই পুষ্টি কিছুটা কমে যায়। শরীরকে সুস্থ-সবল রাখতে টমেটোর ভূমিকার কথা নতুন নয়। সর্বাধিক উপকার পেতে টমেটো কাঁচা খাওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তো চলুন, দেখে নেয়া যাক এর কিছু উপকারিতা।
১. ক্যানসার প্রতিরোধক: ক্যানসার কোষ বিনষ্টকারী প্রাকৃতিক অ্যানটি-অক্সিডেনট এর প্রাকৃতিক উৎস হল টমেটো। তাই ক্যান্সারের ঝুঁকি রোধে খেতে পারেন টমেটো।
২. হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করা: টমেটোতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে টমেটো খাওয়ার বিকল্প নেই।
৩. দেহের হাড় মজবুত করে: টমেটোতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনকে, যা দেহের হাড় মজবুত করে এবং ভাঙ্গা হাড়কে জোড়া লাগায় দ্রুততার সঙ্গে।
৪. রাতকানা রোগ নিরাময় করে : টমেটো একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এতে যে ভিটামিন এ রয়েছে, সেটা রাতকানা রোগ নিরাময় করে।
৫. চুল পড়া কমায় : টমেটোতে যেই পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে, সেটা আমাদের চুল পড়া কমায় এবং চুলকে মজবুত করে।
৬. কিডনিতে পাথর জমা রোধ করে : যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে, তারা আজ থেকেই খাদ্যতালিকায় টমেটো রাখবেন। কারণ হলো, টমেটো কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না।
৭. ওজন কমায় টমেটো : যাদের স্থুলতা নিয়ে চিন্তা, তারা এই প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন। প্রতিদিনের প্রচুর পরিমাণে টমেটো আমাদের দেহের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে এবং দেহে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না।
৮. বাতের ব্যথা দূর করে : যাদের বাতের ব্যথা প্রচণ্ড, তারা টমেটো খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করবেন, কারণ এটি বাতের ব্যথা অনেকাংশে দূর করতে সক্ষম।
৯. প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধ : টমেটোতে প্রচুর পরিমানে বেটা-ক্যারোটিন উপাদান আছে, যা পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকরী সাহায্য করে। তাই যাদের প্রোস্টেট গ্রন্থিতে সমস্যা আছে, তারা টমেটোকে উপকারী উপাদান হিসেবে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
১০. ত্বকের সুরক্ষায় : আমাদের দেহের ত্বককে ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি, তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে রক্ষা করতে পারে এই টমেটো। আর আমরাও পেতে পারি সুন্দর ত্বক।
১১. ফুসফুস এবং যকৃতের ক্যানসার প্রতিরোধক : টমেটোতে উচ্চমাত্রার আঁশ এবং প্রোটিন থাকে, যা ফুসফুস এবং যকৃতের ক্যানসার এর ঝুকি কমায়।
১২. উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : যাদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের জন্য টমেটো অনেক বেশি ফলদায়ক।
১৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে টমেটো : গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রতিদিন ২৫ গ্রাম টমেটো খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করাটা অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। পুরুষদের জন্য ২৫ গ্রাম এবং নারীদের জন্য ৩৫ গ্রাম টমেটো ফলপ্রসূ। চমৎকার ভাবে দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এই টমেটো।
১৪. পানিশূন্যতা রোধে টমেটো : দেহের পানিশূন্যতা রোধের জন্য টমেটো হচ্ছে প্রাকৃতিক ওষুধের মত। দেহে শক্তি যোগায় এই টমেটো।
১৫.বিষন্নতা রোধে : শুনতে অবাক করলেও এটাই সত্যি। টমেটো আমাদের বিষন্নতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, আমাদের পরিপাকতন্ত্রের এবং ঘুমের সমস্যায় এই টমেটো অনেকটা কার্যকরী।
এছাড়া ক্যালরিতে ভরপুর এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। ঠান্ডাজনিত ঘা ভালো করে। যেকোনো চর্মরোগ, বিশেষত স্কার্ভি রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ঠান্ডায় হাত, বিশেষত পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। ভিটামিন-সি এই ফেটে যাওয়া রোধ করে। টমেটোর ভিটামিন-এ শরীরের মাংসপেশিকে করে মজবুত, দেহের ক্ষয় রোধ করে, দাঁতের গোড়াকে করে আরও শক্তিশালী, চোখের পুষ্টি জোগায়। তাই খাবারের প্লেটে রাখুন টমেটো।