Daffodil International University
Faculties and Departments => Allied Health Science => Life Science => Topic started by: Md. Fouad Hossain Sarker on November 23, 2015, 03:44:20 PM
-
রেস্তোঁরায় বসে আপনি যে মুরগির ঠ্যাং-এ কামড় দিচ্ছেন, তাতে কি মনে হচ্ছে মুরগিটা ছিল বেশ নধরকান্তি ?
বাজার থেকে মুরগি কিনে বাড়ি ফেরার সময় মাংসটা কি অনেক বেশি গোলাপি লাগছে ?
আহ্লাদে আট খানা হয়ে গিয়েছেন ?
একটু সবুর করুন।
আপনার চিন্তা একটু বাড়ারই কথা। আপনি কিন্তু বিষ খাচ্ছেন। আপনার শরীরে ঢুকছে আর্সেনিক। আর আপনি ‘নীলকণ্ঠ’ হয়ে পড়তে চলেছেন।
কেন? কী ভাবে?
আসলে ব্রয়লার মুরগিকে তড়িঘড়ি মোটাসোটা করে তোলার জন্য আর সেই মাংসকে আরও বেশি গোলাপি করার জন্য মুরগির খাদ্যে আর্সেনিক মেশানো হয়। এই তথ্যটি খোদ আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এফডিএ)-এর। এ দেশের খাদ্য বিজ্ঞানীরাও তা মেনে নিয়েছেন। আমেরিকার জন হপকিন্স সেন্টারের একটি সমীক্ষা ‘এনভায়রনমেন্টাল হেলথ পার্সপেক্টিভ’ নামে একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর মুরগির খাদ্যে যে আর্সেনিক মেশানো হয়, তা মেনে নেয় এফডিএ।
এফডিএ বলেছে, ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড’ মুরগির শরীরে বাইরে থেকে জিন ঢোকানো ছাড়াও আর্সেনিক, হরমোন, কারসিনোজেন্স (ক্যান্সার-সৃষ্টির ক্ষমতা সম্পন্ন পদার্থ) এবং নানা রকমের ওষুধ ঢোকানো হয়। যাতে তারা তড়িঘড়ি মোটাসোটা হয়ে ওঠে। এই ধরনের মুরগিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে, জিএমসি বা ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড চিকেন’। মার্কিন সংস্থাটি এও বলেছে, এই ধরনের মুরগির ওজন এত বেশি হয়ে যায় যে, তারা ঠিক ভাবে দাঁড়াতে পারে না। তাই বেশির ভাগ সময়েই তাদের বসে থাকতে দেখা যায়।
ব্রয়লার মুরগি বাঁচে বড়জোর ছয় সপ্তাহ। এই সময়ে তাদের যে খাবারদাবার দেওয়া হয়, তাতে মুরগির শরীরে ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্টের রোগ বাসা বাঁধে। তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। বাজারে ওই অসুস্থ মুরগিদেরই কেটে বিক্রি করা হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেকোনও খাবারে আর্সেনিক মেশানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে ১৯৯৫ সালেই। জাপান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আরব দেশগুলিও ‘জিএম-চিকেন’ নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু ভারতে কিছুই হয়নি। ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্স-এর এক বিশেষ সূত্র জানান, জার্মানির একটি সংস্থা বহু বছর আগে রক্সারসোন যৌগ ব্যবহার করে ওই নাম দিয়েই একটি ওষুধ তৈরি করে। কিন্তু অনেক পরে দেশে-দেশে প্রতিবাদ তুঙ্গে ওঠায় ওই সংস্থাই ওষুধটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। মজার কথা, এখনও সেই ওষুধ ভারতের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ‘থ্রি-নাইট্রো’ নাম দিয়ে ভদোদরা, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুর কয়েকটি সংস্থা ওই ‘রক্সারসোন’ ওষুধ এখনও বাজারে বিক্রি করে চলেছে। পোলট্রিগুলিতে এই সব ওষুধের চাহিদা খুব বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্সেনিকের কিন্তু একটা ভালো দিকও আছে। সীমিত মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে আর্সেনিক। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকে না। ফলে প্রচুর ক্ষতি হয়। বেশি মাত্রায় আর্সেনিক মুরগির শরীরে ঢুকলে তারা তড়িঘড়ি মোটা হয়ে ওঠে বটে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই মুরগি খেলে খাদকের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না। মুরগির মাংস খেয়ে, প্রয়োজন না-থাকলেও শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ঢোকে। ফলে, সত্যি-সত্যিই যখন অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়, তখন আমাদের শরীরে তা আর কাজে আসে না।
প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি নিউট্রিশন বিষয়ের শিক্ষক বরুণ রায়ের বক্তব্য অবশ্য একটু অন্য রকম। তাঁর কথায়, ‘‘এ দেশে ব্রয়লার মুরগির খাবারে যতটা না আর্সেনিক মেশানো হয়, তার চেয়ে কয়েকশো গুণ বেশি মেশানো হয় অ্যান্টিবায়োটিক। যাঁরা এই মুরগি খান, তাঁদের জন্য তা মোটেই নিরাপদ নয়। দীর্ঘ দিন এই মুরগি খাওয়ার ফলে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ আর কোনও কাজই করতে পারে না। অথচ, অ্যান্টিবায়োটিকই হল আমাদের শরীর থেকে জীবাণু মেরে ফেলার শেষ উপায়।’’
ভারতের ফুড-সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটির (এফএসএসএ) আধিকারিকেরা ব্রয়লার মুরগির বিষয়টি জানেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারগুলি নিজেরা ব্যবস্থা নিলে, তবেই এফএসএসএ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবে।’’
সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
-
Nice post. Thanks for sharing. :)