Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Life Style => Topic started by: myforum2015 on December 12, 2015, 01:32:44 PM
-
স্কুল গেটের সামনে দাঁড়ানো উদ্বিগ্ন মায়েদের ভিড় থেকে সহজেই আলাদা করা যায় কিরণ মানরালকে। সন্তানের পড়াশোনা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে সব মায়ের কপালে যখন চিন্তার ভাঁজ, তখন মানরাল থাকেন নিশ্চিন্তে। ১২ বছরের ছেলেকে তিনি কখনো পড়তে বলেন না। কারণ পড়াশোনার দায়িত্বটা ছেলেরই। নিজ দায়িত্বেই সে পড়াশোনা চালিয়ে যায়।
মানরাল শিশুকাল থেকে ছেলের মধ্যে এই দায়িত্ববোধ গড়ে তুলেছেন। ছেলের পড়াশোনার টেবিল এমন জায়গায় রেখেছেন, যাতে সবার চোখে পড়ে। ছেলে কী করছে, কোনোরকমের খবরদারি ছাড়াই দেখতে পারে সবাই। মানরাল বলেন, ‘সে জানে তার বাড়ির কাজ তাকেই করতে হবে। কাজেই বিকেলে খেলতে যাওয়ার আগে বাড়ির কাজ করে রাখে সে। সে জানে এটা তার মাথাব্যথা, আমার নয়।’ এভাবে ছেলেকে প্রকৃত শিক্ষা দিতে চান তিনি। তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে চান।
একসময় সাংবাদিকতা করতেন মানরাল। ছেলের জন্মের পর ছেড়ে দিয়েছেন। ব্লগে লেখালেখি শুরু করেন। লেখার বিষয়বস্তুর বেশির ভাগটাই ছিল ছেলেকে ঘিরে। তার বেড়ে ওঠা, তার মজার মজার সব কর্মকাণ্ড—এসব নিয়েই লিখতেন মানরাল। এভাবে লিখতে লিখতেই তা এক ধরনের নির্দেশিকা হয়ে দাঁড়ায়। লেখাগুলো এক করে মানরাল বই লিখতে শুরু করেন। একে একে চারটি বই প্রকাশিত হয় মানরালের। সবই সন্তান লালনপালন নিয়ে।
তবে ৪৪ বছর বয়সী মানরাল এটাও বলেন, সন্তান লালনপালনের জন্য কোনো বই বা নির্দেশিকার দরকার পড়ে না। দরকার একটু সচেতনতা। যাতে মা-বাবার অহেতুক খবরদারি বা যত্ন সন্তানের জন্য বিপদ হয়ে না দাঁড়ায়।
শিশুদের উৎসাহ দিন
মা মানরাল বলেন, সন্তানের ব্যাপারে তাঁর তত্ত্ব খুব সহজ। তা হলো সন্তানকে সব সময় উৎসাহ দিতে হবে। সন্তান সব সময় সবই ভালো করবে, একেবারে ঠিকঠাক হবে—এমন ভাবাটা ঠিক নয়। নিজের ছোটবেলার কথা মনে রাখতে হবে। এখনকার ছেলেমেয়েরা মা-বাবার ওপর অনেকটা নির্ভর করে। কারণ তাদের ভাইবোন কম থাকে। তাই তাদের আবেগ, মানসিকতা বুঝতে হবে বাবা-মাকে। অযথা কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
শিশুকে স্বাবলম্বী করুন
সব শিশুই আসলে স্বাবলম্বী। তাকে সেই সুযোগ দেওয়াটা জরুরি। ১০ বা ১১ বছরের শিশুও টুকটাক নাশতা বানাতে পারে, টিফিন সাজাতে পারে। একা একা স্কুলে যেতে পারে। তাদের সেই সুযোগ দিতে হবে বাবা-মাকে। মাঝে মধ্যে তাদের হাতে অল্প কিছু টাকা দিতে পারেন বাবা-মা। সেই টাকা দিয়ে তাদের কিছু কাজ করতে দেওয়া যায়। এতে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ গড়ে ওঠে। অনেক শিশু একা গোসল করতে চায়। মা করতে দেন না। কীভাবে গোসল করতে হয়—মা যদি তাকে দেখিয়ে দেন, তাহলে শিশু স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
শিশুর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটান
সন্তানের অনেক বন্ধু থাকবে। কৈশোরে পৌঁছে সন্তানের নিজস্ব জগৎ গড়ে ওঠে। এ সময় তাকে কিছুটা ছেড়ে দেওয়া দরকার। যখন-তখন তাকে বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে বাধা দেওয়া, ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করা বাদ দিতে হবে। এখনকার ছেলে-মেয়েরা বাইরের জগৎ সম্পর্কে অনেক জানে। তাই মা-বাবাকেও এসব জানতে হব, যাতে সন্তানের সঙ্গে তার মতো করে মিশতে পারেন।
সন্তানকে হাসিখুশি রাখুন
এখনকার শিশু-কিশোর অনেক ব্যস্ত। তারা ব্যস্ত পড়াশোনা, পরীক্ষা, খেলাধুলা নিয়ে। এমনিতেই তারা অনেক চাপের মধ্যে থাকে। মা-বাবার কাজ হলো সন্তানকে হাসিখুশি রাখা। কোনটি তার জন্য ভালো, কীসে সে সবচেয়ে বেশি খুশি থাকে, তা একমাত্র বাবা-মায়েরাই বুঝতে পারেন।
সন্তানকে বিশ্বাস করুন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সন্তানের ওপর বিশ্বাস রাখা। একই সঙ্গে বিশ্বাস রাখতে হবে নিজের ওপরও। সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থাকা জরুরি। তাহলে তার বিকাশ সহজ হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন অবলম্বনে
For more information: http://www.prothom-alo.com/life-style/article/710296/