Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: maruppharm on February 15, 2016, 09:19:52 AM
-
কাল বেলা একটার দিকে টিম হোটেল ছেড়ে ‘প্রিয় আবাস’ বিসিবি একাডেমি ভবনে ফিরলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড়েরা। বড় পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের চেহারায় যেমন ‘চাপমুক্তি’র আনন্দ থাকে, সাইফউদ্দিন-মোসাব্বেক-পিনাকদের মুখেও দেখা গেল তেমন অভিব্যক্তি!
কেউ কেউ ব্যাগট্যাগ রেখেই ঝটপট বেরিয়ে গেলেন বাইরে। বন্ধুদের সঙ্গে যে বহুদিন আড্ডা দেওয়া হয় না কিংবা দেখা হয় না প্রিয় মুখগুলো। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে অবশ্য পাওয়া গেল ভিন্ন রূপে। সতীর্থদের মতো সময় কাটানোর সুযোগ ছিল না তাঁর। বেশ কেতাদুরস্ত হয়ে পড়িমরি করে ছুটছেন বিসিবি কার্যালয়ে।
ঘটনা কী? কিছু বলতে চাইলেন না। টুর্নামেন্ট-সেরার পুরস্কার কি তাহলে মেহেদীর হাতে উঠছে? যুব অধিনায়কের দেওয়া রহস্যময় হাসিতে শুধু এতটুকু অনুমান করা গেল, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
হলোও তা-ই। মেহেদী পেলেন টুর্নামেন্ট-সেরার স্বীকৃতি। আর তাতে ফাইনাল ম্যাচের পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে অংশগ্রহণ থাকল বাংলাদেশের। যুব বিশ্বকাপ তো বটে, কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় টুর্নামেন্ট-সেরা হলেন। তুমুল করতালিতে মেহেদীকে শুভেচ্ছা জানাল দর্শকেরা। অভিনন্দন পেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের খেলোয়াড়দেরও।
যুব অধিনায়কের এই সাফল্যের আনন্দ শুধু শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সীমাবদ্ধ থাকল না, ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশেই। মেহেদীও বললেন, পুরস্কারটা তাঁর একার নয়, গোটা দেশের, ‘এই টুর্নামেন্টে ১৬টা দল খেলেছে। আমি পেয়েছি টুর্নামেন্ট-সেরার পুরস্কার। এই অর্জন আমার একার নয়, সারা দেশের। বিশ্বকাপের মতো আসরে ভালো খেলা অনেক বড় ব্যাপার। সারা বিশ্ব দেখেছে, বাংলাদেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে, ধারাবাহিক উন্নতি করছে। এটা ভীষণ আনন্দের।’
পুরস্কারটা যে মেহেদীর হাতে উঠছে, আভাস মিলছিল আইসিসির জরিপেও। ‘টুর্নামেন্টে সেরা অলরাউন্ডার কে?’—এই প্রশ্নে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে স্পষ্ট ব্যবধানেই এগিয়ে ছিলেন মেহেদী। অবশ্য দর্শকদের ভোটেই যে তিনি টুর্নামেন্ট-সেরা হয়েছেন, তা নয়। পুরস্কার পেয়েছেন মূলত মাঠের পারফরম্যান্সেই। বোলিং, ব্যটিং, ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকেই। ৬ ম্যাচে ৬০.৫০ গড়ে রান করেছেন ২৪২, যেটি দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন টানা চার ইনিংসে।
দলের বিপর্যয়ে লড়েছেন বুক চিতিয়ে। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ যখন ৯৮ রানে বেশ চাপে, জাকির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও দেখা গিয়েছিল লড়াকু মেহেদীকে। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের, ম্যাচটা হেরে যাওয়ায় বিফলে যায় তাঁর ৬০ রানের দারুণ ইনিংসটি। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তাঁর ৫৩ রানের ইনিংসটা বৃথা যায়নি। বোলিংয়েও সমান উজ্জ্বল। নিয়েছেন ১২ উইকেট, এটিও দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
মেহেদীর সবচেয়ে বড় শক্তি, তীব্র চাপের মধ্যে খেলতে পারেন ঠান্ডা মাথায়। ওই পরিস্থিতিতে কীভাবে এটা সম্ভব হয়? মেহেদীর উত্তর, ‘সব সময়ই ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। আমি পারব—এই বিশ্বাসটা সব সময়ই আমার মধ্যে থাকে। শান্ত (নাজমুল হোসেন) টুর্নামেন্টের আগে বলেছিল, “তুই দলের অধিনায়ক। তুই ভালো খেললে দলও ভালো খেলবে।” এ ব্যাপারটা আমার মাথায় খুব কাজ করেছিল।’
মেহেদী যখন টুর্নামেন্ট-সেরার পুরস্কার নিয়ে ফিরছেন, পেছনেই শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয় যুবাদের এই আনন্দ আক্ষেপের সুরই তুলল মেহেদীর মনে, ‘আসলে ওই দিনটা (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমিফাইনাল) আমাদের পক্ষে ছিল না। ওদের সঙ্গে হারটাকে দুর্ঘটনাই মনে করি।’
যুব বিশ্বকাপ শেষ, এরই সঙ্গে সমাপ্তি ঘটেছে মেহেদীর বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সীমানাও। শুধু তিনি নন, এই দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় শেষ করলেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট। মেহেদীর প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে এই দলের অনেকে খেলোয়াড় খেলবেন জাতীয় দলে। নিয়মিত আলো ছড়াবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
-
Dear Sir,
Please re-size your post font to read smoothly.