Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Football => Topic started by: habib on February 15, 2016, 02:40:40 PM

Title: মেসি-সুয়ারেজের ‘শতাব্দী সেরা’ পেনাল্টি!
Post by: habib on February 15, 2016, 02:40:40 PM
মেসি-সুয়ারেজের ‘শতাব্দী সেরা’ পেনাল্টি!

(http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/643x0x1/uploads/media/2016/02/15/6a3aa60085add5ac1622edde8ef6134c-Penalty.jpg)
     
মেসির পেনাল্টিতে সতীর্থরাও অবাক। সুয়ারেজ​ তখনো বুঝিয়ে দিচ্ছেন আলবাকে! ছবি: রয়টার্স

ডিয়েগো ম্যারাডোনার শতাব্দী সেরা গোল তিনি অনেক আগেই করে দেখিয়েছেন। হ্যান্ড অব গড গোলও। এবার লিওনেল মেসি যা করলেন, সেটি ম্যারাডোনারও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে নেই। আছে ফুটবলের সবচেয়ে তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারী একজনের—ইয়োহান ক্রুইফ। ক্রুইফের বহুল আলোচিত পেনা​ল্টি শটের কথা মনে করিয়ে দিলেন মেসি। কাল মেসি-সুয়ারেজের যুগল-বন্দী হলো এমনই এক গোল। যেটিকে বলা হচ্ছে ‘পেনাল্টি অব দ্য সেঞ্চুরি’।

ম্যাচের ৮০ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল বার্সা। সেল্টা ডিফেন্ডার কাস্ত্রোর বাঁয়ে বল ঠেলে ডান দিক দিয়ে বের হয়ে ছিলেন মেসি। ডান-বামের এই বিভ্রান্তিতে পড়ে কাস্ত্রো বক্সে ফেলে দিল মেসিকে। পেনাল্টি। মেসি তখন দাঁড়িয়ে মাইলফলকের সামনে। লা লিগায় নিজের ৩০০তম গোল!

পেনাল্টি শট মেসিই নিলেন। কিন্তু গোলে শট না করে আলতো পাস বাড়িয়ে দিলেন। যেন সুয়ারেজকে দিয়ে হ্যাটট্রিকটাই করাতে চান! মেসির আলতো পাস থেকে গোল করার জন্য ছুটে এসেছিলেন নেইমারও। কিন্তু সুয়ারেজের উসাইন বোল্টীয় দৌড়ের কাছে হেরে গেলেন। সুয়ারেজের জোরালো শট জালে জড়াল। শট আলতো করে নিলেও সমস্যা হতো না। এমন পেনাল্টিতে যে গোলরক্ষক রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিল।

শুধু গোলরক্ষক? সেল্টা ডিফেন্ডাররা হতবুদ্ধি, রেফারিরও যেন বাঁশিয়ে ফুঁ দিতে খানিকটা দেরিই হলো। সত্যি বলতে কি বার্সা খেলোয়াড়দের সবাইও এর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। এক-দুজন তো গোল উদযাপনের সময় মেসির কানে কানে কী যেন জানতেও চাইলেন। মেসি তখন দুষ্টুমিষ্টি হাসছেন। বার্সা কোন এনরিকে তাঁর সহকারীর দিকে তাকালেন। সহকারীও আলতো চোখ টিপে বললেন, ‘সব ঠিক আছে।’

এমন যে একটা পেনাল্টি নেওয়া হবে, সেটি অনুশীলনেই ঠিক করা ছিল বলে জানিয়েছেন নেইমার। তবে সেটি মেসি-সুয়ারেজ নয়, মেসি-নেইমার যুগলবন্দীতেই নাকি হওয়ার কথা ছিল, ‘এটা আমার জন্যই পরিকল্পনা করা ছিল। আমরা এটা অনুশীলনও করেছি। কিন্তু লুইস বলের কাছে আগে চলে গেছে। যা-ই হোক, ব্যাপার না। ও গোল ​করেছে, পরিকল্পনাটা তাই কাজেই লেগেছে।’

ক্যারিয়ারে ৮৩ পেনাল্টির ১৭টি মিস করা মেসি​র পেনাল্টি নিয়ে আলোচনা এই প্রথম নয়। তবে এবারেরটি যেন ছাপিয়ে গেল বাকি সবকিছুকেই। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক তো এরই মধ্যে এর নাম দিয়েছে ‘শতাব্দীর সেরা পেনাল্টি’। বার্সা কিংবদন্তি ক্রুইফ ১৯৮২ সালে আয়াক্সের হয়ে এমন একটি পেনাল্টি নিয়েছিলেন। হেলমন্ড স্পোর্টের বিপক্ষে ওই ম্যাচটিতে পেনাল্টি থেকে সরাসরি গোলে শট না নিয়ে সতীর্থ জেসপার ওলসেনের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলেন। এরপর ফিরতি পাস থেকে ক্রুইফের গোল। ২০০৫ সালে আর্সেনালের থিয়েরি অঁরি আর রবার্ট পিরেস ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে একই চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তাতে গোল করতে তাঁরা ব্যর্থ হন।

মেসি-সুয়ারেজের যুগলবন্দীর এই গোল একই সঙ্গে প্রশংসা আর বিতর্ক তৈরি করেছে। প্রতিপক্ষের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান দেখানোর প্রশ্নও উঠেছে। এভাবে গোল করা তো প্রতিপক্ষের অপমান। মেসিরা কি তবে লিগের প্রথম সাক্ষাতে ৪-১ গোলে হেরে যাওয়ার শোধই এভাবে দিতে চাইলেন সেল্টা ভিগোকে?

টিভিতে দেখে মনে হয়েছে, মেসি যে এমন কিছু করবেন বার্সার অনেকেই জানত না। এমনকি কোচ এনরিকেও। এ গোল নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘ক্রুইফের সেই গোলটা তো আমাদের সবারই মনে আছে। আমি হলে অবশ্য এটা করার সাহস পেতাম না। আমি সরাসরি বলে কিকই নিতাম।’

এমন গোল কি করা উচিত? এনরিকের উত্তর, ‘কেউ এটা পছন্দ করবে, কেউ করবে না। তবে বার্সার খেলোয়াড় কিংবা এই ক্লাবের সদস্যরা মনে করে, শিরোপা জয়ের চেয়েও মুগ্ধকর খেলা দিয়ে ফুটবলটা উপভোগ করা জরুরি। আমাদের ফুটবল উপভোগ করতে হবে, প্রতিপক্ষকে সম্মানও দেখাতে হবে। দেখাতে হবে, আমরা যেভাবে খেলি, এতে আমরাই সেরা।’ এ নিয়ে ম্যাচের পরপরই একটু বেশিই কথা হচ্ছিল জন্যই হ​য়তো এনরিকে পাল্টা জবাব দিতেও কসুর করলেন না, ‘স্পেন এমন একটা দেশ, যেখানে স্কিলের এক টুকরো প্রদর্শনীর চেয়ে বলে শুধু লাথি মারাটা বেশি হাততালি পায়। এ নিয়ে আমরা তাই ভাবি না।’

সেল্টা কোচ এদুয়ার্দো বেরিজ্জোও মনে করেন, এটা প্রতিপক্ষকে অসম্মান নয়। তবে এমন পেনাল্টি নেওয়া হতে পারে, সেটা তিনিও ভাবতে পারেননি।

প্রতিপক্ষের কথা বাদই দিন, খোদ জর্ডি আলবাও ​স্বীকার করলেন, এমনটা হবে তাঁরা জানতেনই না। বার্সা ফুলব্যাক বলেছেন, ‘লিও সব সময়ই কিছু না কিছু আবিষ্কার করে, আর এটা নিখুঁতভাবে কাজেও লাগে। আমরা অবশ্য অনুশীলনে এর কিছুই দেখিনি, আমরা কিছুই জানতাম না।’ তবে কি শুধু নেইমারই জানতেন? এমনকি সুয়ারেজও নয়?