Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: shawket on March 07, 2016, 12:29:25 PM
-
প্রাচীন চিত্রকলায় যে বিষয়ের অনুপস্থিতি সবার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল
আপনি যখন প্রাচীন গুহাচিত্র কিংবা অন্যকোনো চিত্রকলা দেখবেন তখন একটি রং খুঁজে পাবেন না। এ বিষয়টি খুবই আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে তাদের চিত্রে আকাশের কোনো রং নেই। গুহাচিত্রে সাধারণত নীল রং পাওয়া যায়না। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। গুহাচিত্রে নীল রং নেই। প্রাচীন মানুষ কি নীল রং ব্যবহার করত নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে?
এ বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রাচীন চিত্রকলাতে আরও একটি বিষয় প্রায় অনুপস্থিত। সেটি হলো গাছপালা। প্রাচীন অসংখ্য গুহাচিত্রে কোনো গাছপালা নেই। তাহলে কী প্রাচীন যুগে বিশ্বে নীল আকাশ ছিল না? মানুষ কী নীল রং দেখতে পেত না? এ ছাড়া যেহেতু গাছপালার ছবিও সাধারণত দেখা যায় না, তাহলে কি ধরে নিতে হবে প্রাচীনকালে গাছপালা ছিল না?
উইলিয়াম গ্ল্যাডস্টোন ১৮৬০, ৮০ ও ৯০-এর একজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি হোমারের ভক্ত ছিলেন। হোমারের ইলিয়াড ও ওডেসিসহ বিভিন্ন রচনা পড়ে সেগুলোতে ব্যবহৃত রঙের একটি তালিকা করেন তিনি। এতে দেখা যায় সাদা, কালো, লাল, কমলা ও সবুজ রংয়ের কথা উল্লেখ থাকলেও সেখানে নীল রংয়ের কোনো স্থান নেই। হোমারের সাহিত্যে নীল আকাশের বদলে অন্যান্য রংয়ের আকাশেরই বর্ণনা করা হয়েছে।
একইভাবে গবেষকরা দেখেছেন প্রাচীন চীনা লেখা, দক্ষিণ এশিয়ার বৈদিক সাহিত্য, প্রাচীন আইসল্যান্ডোর সাগা ও পশ্চিমা বাইবেলেও প্রায় একই অবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ নীল রংয়ের উল্লেখ নেই বললেই চলে।
বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়টির কারণ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে মানুষের মানসিকতার জটিল কিছু বিষয়। তারা জানাচ্ছেন, আশপাশের যে বিষয়টি অহরহ দেখা যায় তা আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। নীল রং হলো আকাশের রং। মানুষ প্রতিদিনই এটি দেখে। আর এ দৃশ্য এতই স্বাভাবিক হয়ে মানুষের চোখে ধরা পড়ে যে, তা চিত্রকলায় ওঠানোর কথাও মানুষ ভুলে যায়। একইভাবে সবুজ গাছপালাও মানুষের প্রাচীন গুহাচিত্রে সাধারণত পাওয়া যায় না।
স্পেন ও ফ্রান্সসহ বিশ্বের বহু স্থানেই ৪০ হাজার বছর বা তারও আগের প্রাচীন গুহাচিত্র পাওয়া যায়। এসব গুহাচিত্রে গাছপালার ছবি সাধারণত পাওয়া যায় না। এগুলোতে হরিণ, গরু-বাছুর, গণ্ডার ও নানা হিংস্র জীবজন্তুর ছবি পাওয়া যায়। কিন্তু গাছপালা বা বন-জঙ্গলের ছবি খুঁজতে গেলে অবাক হতে হবে। এর পেছনেও রয়েছে সে মনস্তত্ত্ব বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।
Source: www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2016/03/06/332810