Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Life Style => Topic started by: sharifmajumdar on March 07, 2016, 04:31:40 PM

Title: শরীর ও মনের উপর রাগের ক্ষতিকর প্রভাব
Post by: sharifmajumdar on March 07, 2016, 04:31:40 PM
আপনি কি জানেন রাগ বা ক্রোধ আপনার স্বাস্থ্যের উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সব মানুষেরই রাগ আছে। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। “ডেডলি ইমোশন্স” বইটির লেখক ডা. ডন কোলবারট  এর মতে, “রাগ আপনার স্বাস্থ্যের প্রভূত ক্ষতিসাধন করে”। ড. কোলবারট সতর্ক করে বলেন, “বিষণ্ণতা, রাগ, অপরাধবোধ, দোষারোপ, আত্মবিশ্বাসের অভাব এগুলো প্রাণঘাতী টক্সিনের নামান্তর”। তিনি তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিয়েছেন।  রাগের প্রভাবে মানুষ যে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা হল যুদ্ধ বা যুদ্ধ। প্রাচীনকাল থেকেই  মানুষ যখন খাদক প্রাণীর হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তখন থেকেই যুদ্ধ বা যুদ্ধ এই প্রতিক্রিয়াই মানুষকে রক্ষা করেছে হরমোন ও রাসায়নিকের নিঃসরণের মাধ্যমে যা জ্বালানী হিসেবে শারীরিক ক্রিয়াকে উজ্জীবিত করেছে। কিন্তু বর্তমানে এই প্রকারের প্রতিক্রিয়া ৯৯ শতাংশই অপ্রয়োজনীয়। “ইউ কান্ট এফোরড দ্যা লাক্সারি অফ এ নেগেটিভ থট: এ বুক ফর পিপল উইথ এনি লাইফ-থ্রেটেনিং ইলনেস-ইনক্লুডিং লাইফ” বইটির লেখক পিটার এমসিউইলিয়াম এর মতে, “সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে যুদ্ধ বা  যুদ্ধ আমাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়”। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস কমানোর উপায় জানাটা অত্যন্ত জরুরী।             

যখন মানুষ খুব রেগে যায় তখন অনুভূত হুমকির জবাব দেয়ার জন্য শরীর নিজেকে প্রস্তুত করে। এর ফলে শরীরের পেশী টান টান হয়, পরিপাক প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় ও মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলোতে আগুন লাগার মত কাজ শুরু হয়ে যায়। যারে ফলে মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। এর প্রতিফলনে জিনগতভাবে সংকলিত প্রতিক্রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করে। বর্তমানে এই শক্তিশালী রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ছোটখাট বিরক্তিতেই অযথার্থভাবে আলোড়িত হয় যেমন- নির্দয়ভাবে কথা বলা, ট্র্যাফিক মেনে না চলা ইত্যাদি। আধুনিক অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই এমন যুদ্ধংদেহী আচরণ দেখা যায়। যার ফলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পরিপাক, কোষের বৃদ্ধি, দেহের রক্ষণাবেক্ষণ, সংবহন, নিরাময় ও প্রতিরোধমূলক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুলো স্থগিত হয়ে যায়।     
রাগের উন্মত্ততার ফলে দীর্ঘস্থায়ী যে প্রভাব লক্ষ করা যায় তা হল:

নিয়মিত রাগ স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ন্যাচারাল হেলথ প্রেক্টিশনার ড. মারকোলার মতে, স্বয়ংক্রিয় রাগের প্রতিক্রিয়ায় শারীরিক যে সমস্যাগুলো হতে পারে তা হল-
·         মাথাব্যথা
·         হজমের ভারসাম্যহীনতা
·         ইনসমনিয়া
·         অ্যাংজাইটি
·         ডিপ্রেশন
·         উচ্চরক্তচাপ
·         ত্বকের সমস্যা ও এক্সিমা
·         হার্ট অ্যাটাক
·         স্ট্রোক

রাগের প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে হৃদপিণ্ড। ওয়াশিংটন ষ্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা ৫০ বছর ও তার চেয়েও অধিক বয়সের মানুষদের উপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। সেখানে দেখা যায় যে, মাত্রাতিরিক্ত মেজাজের মানুষদের ধমনীতে অন্যদের তুলনায় ক্যালসিয়াম জমা হয় বেশি। যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার প্রাথমিক কারণ। এই গবেষণার লেখক ব্রুস রাইট বলেন, রাগে ফেটে পড়লে স্ট্রেস হরমোন তরঙ্গায়িত হয় এবং রক্তনালীর আবরণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু রাগ দমিয়ে  রাখাটাও বিপদজনক।
   
গতবছর নেদারল্যান্ডের টিলবারগ ইউনিভার্সিটির ড.জোহান ডেনোলেট হৃদরোগে আক্রান্তদের নিয়ে একটি গবেষণা করেন এবং দেখতে পান যে, “রাগ চেপে রাখলে  হৃদরোগের ঝুঁকি তিনগুণ বৃদ্ধি পায়”। ৮৫% অসুখ আবেগীয় অবস্থার সাথে সম্পর্কিত। ওহাইয়ো ষ্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক, পিএইচডি, মেরী  ফ্রাস্টেড বলেন, রাগ প্রকাশের সঠিক উপায়টি শিখলে আপনি রাগকে কাজে লাগাতে পারবেন। যদি কেউ আপনার অধিকার উলঙ্ঘন করে তাহলে তাদেরকে আপনার বলা উচিৎ আপনি কি চান, আপনার কি প্রয়োজন। তাছাড়া রাগ কমানোর জন্য মেডিটেশন করতে পারেন, নিয়মিত ব্যয়াম করুন এবং প্রয়োজন মনে করলে একজন কাউন্সেলর বা মনোবিজ্ঞানীর সহযোগিতা নিতে পারেন।   
- Source: priyo.com