Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: Md. Alamgir Hossan on March 14, 2016, 08:55:19 AM

Title: বৃষ্টি আর ওমানকে হারিয়ে সুপার টেনে মাশরাফিরা
Post by: Md. Alamgir Hossan on March 14, 2016, 08:55:19 AM
বাগড়া দেওয়ার আগেই বৃষ্টির ছোবল থেকে ম্যাচ বের করে নিয়েছিলেন তামিম। দুর্দান্ত অপরাজিত শতক গড়ে দিয়েছিলেন জয়ের ভিত। বাকি কাজ সেরেছেন বোলাররা। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ওমানকে ৫৪ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ উঠে গেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে।

ধর্মশালায় প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৮০ রান করেছিল বাংলাদেশ। আদ্যন্ত ব্যাট করে তামিম অপরাজিত ১০৩। বৃষ্টির দুই দফা বাগড়ায় ওমানের লক্ষ্য দু দফা কমে শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় ১২ ওভারে ১২০। নবীন দলটি করতে পারে ৯ উইকেটে ৬৫।

গতবারের মত এবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মহামূল্য অপরাজিত ৮০, বৃষ্টিতে পণ্ড দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৬ রানের ঝড় আর শেষের লড়াইয়ে রেকর্ড গড়া শতক - বলতে গেলে তামিমের ভেলাতেই বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের আবরণে বাছাইপর্বের বৈতরণী পার হলো বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপের আগেই কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহেকে কথা দিয়েছিলেন তামিম, টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি এবার উপহার দেবেনই। কথা রাখলেন যোগ্য শিষ্যের মতোই।

সেঞ্চুরি ছোঁয়া অফ ড্রাইভে বল বাউন্ডারির দিকে ছুটতেই ছুটলেন তামিমও। হেলমেট-ব্যাট উইকেট রেখে ড্রেসিং রুমের দিকে ফিরে শূন্যে লাফ। যেন ছুঁতে চাইলেন আকাশ!

তামিম স্পর্শ করেছেন নতুন দিগন্ত। অবসান হয়েছে বাংলাদেশের দীর্ঘ অপেক্ষার। তামিমের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতক, দেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতকও!

সেঞ্চুরির আগে তামিম মাইলফলক ছুঁয়েছেন আরেকটি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্পর্শ করেছেন ১ হাজার টি-টোয়েন্টি রান।

এর আগেও দু দফায় পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করেছিলেন তামিম। কোনোবারই ছাড়াতে পারেননি আশির গণ্ডি। এবার নিজেকে ছাড়ালেন, ছাড়িয়ে গেলেন দেশের সবাইকেও।

বাংলাদেশের শুরুটা যদিও ছিল বিভ্রান্তিকর। ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটি টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভালো সূচনা; কিন্তু তাতে লেগে যায় প্রায় ৭ ওভার!

এক পাশে বাঁহাতি পেসার বিলাল খান ও আরেক পাশে অফ স্পিনার আমির আলিকে দিয়ে বোলিং শুরু করে ওমান। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এই দুজন ডানা মেলতে দেননি বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে।

তামিম অবশ্য খেলছেন স্বচ্ছন্দেই; ধুঁকেছেন সৌম্য। ফর্মে নেই তিনি বেশ কিছু দিন হলো। তবে এদিন একদমই ছিলেন নিজের ছায়া। মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংয়ের চেয়ে দু:সাধ্য বুঝি কিছু আর নেই! তামিম বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করে গেলেও সৌম্য খেলেছেন প্রায় দ্বিগুণ বল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে মাত্র ২৯!

বাঁহাতি স্পিনার অজয় লালচেতাকে টানা দুই বলে দারুণ দুটি চার ও ছক্কায় শেকল ভাঙার চেষ্টা করেন তামিম। তবে ওই ওভারেই দু:স্বপ্ন থেকে মুক্তি পান সৌম্য, ডাউন দা উইকেট বাজে এক শটে বোল্ড (২২ বলে ১২)।

সাব্বিরকে সঙ্গী পাওয়ার পর দলের ইনিংসটাকে দারুণ গতিময় করেন তামিম। ফর্মে থাকা দুই ব্যাটসম্যান দারুণ সব শটের প্রদর্শনীতে দুজন মুহূর্তেই বদলে দেন ম্যাচের চিত্র।

বাঁহাতি স্পিনার আমির কালিমকে চার মেরে তামিম স্পর্শ করেন পঞ্চাশ, ৩৫ বলে। পরের বলেই ডাউন দা উইকেটে ছক্কায় উদযাপন করেন অর্ধশতক। লেগ স্পিনার খাওয়ার আলিকে ৯৬ মিটার লম্বা ছক্কায় গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন সাব্বির। তামিম যেন পাল্লা দিতে চাইলেন একই বোলারকে ৯৪ মিটার লম্বা ছক্কায়।

৫৫ বলে ৯৭ রানের জুটি ভাঙে নিরীহ এক ডেলিভারিতে। খাওয়ারকে সুইপ করতে গিয়ে পায়ের পেছন দিয়ে বোল্ড হন সাব্বির (২৬ বলে ৪৪)।

তামিম তাতে দমে যাননি। ওমানের ‘মালিঙ্গা’ মুনিস আনসারিকে ছক্কা মেরে পা রাখেন নব্বইয়ে। সেঞ্চুরির আগে অবশ্য একটু থমকে গিয়েছিলেন। ৯৭ রানে ডট বল খেলেছিলেন ৩টি। এরপরই ওই অফ ড্রাইভে চার মেরে মুক্তির আনন্দ; ৬০ বলে সেঞ্চুরি।

ছবি: আইসিসি

ছবি: আইসিসি
শেষ পর্যন্ত ৬৩ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত তামিম। ১০টি চারের পাশে ৫ ছক্কায় স্পর্শ করেছেন বাংলাদেশের রেকর্ড। এর আগে ইনিংসে ৫টি ছক্কা মেরেছিলেন নাজিমউদ্দিন ও জিয়াউর রহমান।

শেষ দিকে ৯ বলে ১৭ রানের ইনিংসে ব্যাট হাতে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন সাকিব।

বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার পরে বল হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। নিজের বুদ্ধিমত্তা আর ওমানের ব্যাটসম্যানদের রান তোলার তাড়ায় করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। নতুন বলে তাসকিন আহমেদ ও আল আমিন হোসেন যথারীতি ছিলেন দুর্দান্ত। চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি ওমান।

এশিয়া কাপ খেলে আসার ক্লান্তি-শ্রান্তি আর প্রতিকূল কন্ডিশন মিলিয়ে প্রথম রাউন্ড বাংলাদেশের জন্য ছিল পরীক্ষা। দারুণ পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ এখন বলতেই পারে, মূল পর্বের আগে প্রস্তুতিটা হলো দারুণ!