Daffodil International University
Entrepreneurship => Business Information => Topic started by: Anuz on March 20, 2016, 10:08:26 AM
-
ফিলিপাইনের আর্থিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ী কিম ওয়ংকেই মূল পরিকল্পনাকারী বলে মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিপাইনের সিনেটর সেরগে ওসমেনা।
ওসমেনা গত শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিট শাখার ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস-দেগুইতো ওই অর্থ চুরির ঘটনায় সর্বোচ্চ দোষী নন। গত বৃহস্পতিবার সিনেট শুনানিতে তাঁর কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। চুরি যাওয়া অর্থ আরসিবিসির যে কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়েছিল, ওয়ংই সেগুলো খোলার জন্য দেগুইতোকে বলেছিলেন। মুদ্রা রূপান্তরকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের সেবা নেওয়ার নির্দেশও দেন ওয়ং।
ওসমেনা আরও বলেন, সিনেট কমিটির সামনে ওয়ংকে হাজির হতে হবে এবং তিনি তখন ওই চুরির ঘটনায় নিজ ভূমিকা বর্ণনা করার সুযোগ পাবেন।
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই অর্থ আরসিবিসির মাধ্যমে চীনের কয়েকজন কম্পিউটার হ্যাকার সে দেশের একাধিক ক্যাসিনোয় স্থানান্তর করেন।
ওসমেনা বলেন, চুরির পুরো প্রক্রিয়ায় একজন সমন্বয়কারী ছিলেন। মনে হচ্ছে কিম ওয়ংই সেই ব্যক্তি। তবে তাঁকে এ বিষয়ে নিজ বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিতে হবে। তিনি ওই চুরির ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণালাভের জন্যই তাঁর কথা শুনতে হবে।
ওয়ং এখন চিকিৎসার জন্য ফিলিপাইনের বাইরে অবস্থান করছেন বলে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন। দেগুইতো কেন ওয়ংয়ের কথামতো কাজ করেছিলেন—এ প্রশ্নের জবাবে ওসমেনা বলেন, তাঁরা পরস্পরকে চিনতেন। ডলারের পাঁচটি ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য দেগুইতোকে অনুরোধ করেন ওয়ং। মিদাস হোটেলে এক বৈঠকে তিনি ওই হিসাবগুলো খোলার জন্য পাঁচ ব্যক্তির নাম ও তথ্য দেন। দেগুইতো তাঁদের পরিচয়পত্র যাচাই করেন এবং পরে তাঁর কাছে এসব ব্যাংক হিসাবের জন্য আড়াই হাজার ডলার পাঠানো হয়। বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় ওই পাঁচটি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে চারটি ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেট কমিটির শুনানিতে ওই চারটি ব্যাংক হিসাবধারী ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা উপস্থাপন করলে দেখা যায় সেগুলো ভুয়া। আরসিবিসির চারটি হিসাবে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পৌঁছার পর সেগুলো অন্যান্য ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর আগে পেসোতে রূপান্তরের জন্য ফিলরেমকে ব্যবহার করতে দেগুইতোকে নির্দেশ দেন ওয়ং।
আরসিবিসির আরও দুই কর্মকর্তা ওই চুরিতে জড়িত থাকতে পারেন বলে গত বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন সিনেটর তেওফিস্তো গিংগোনা (তৃতীয়)। তিনি বলেন, সিনেটের রুদ্ধদ্বার শুনানিতে দেগুইতো এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। স্পষ্টত একটি চক্র ওই চুরির ঘটনায় জড়িত। কোনো এক ব্যক্তির পক্ষে এটা সম্ভব হতো না।
ওসমেনা বলেন, দেগুইতো শুনানিতে বলেছেন যে আরসিবিসির জুপিটার শাখায় সরাসরি ওই অর্থ জমা হয়নি। সেগুলো প্রথমে ব্যাংকের ট্রেজারিতে গিয়েছিল। সিনেট কমিটি এখন আরসিবিসির কোনো কর্মকর্তার অব্যাহতি নয়, বরং ঘটনার পুরোটা জানতে চায়।
রুদ্ধদ্বার শুনানিতে দেগুইতো কেমন জবাব দিয়েছেন—জানতে চাইলে ওসমেনা বলেন, তাঁকে বেশ শান্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং সবগুলো প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেছেন, তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর পরোয়া না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ফিলিপাইনের বিচার বিভাগের তদন্তে দেগুইতোকে গত শুক্রবার তলব করে। আরেকটি নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ১২ ও ১৯ এপ্রিল তাঁকে প্রাথমিক শুনানিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে বিচার বিভাগ নির্ধারণ করবে, অর্থ চুরির ওই ঘটনায় দেগুইতোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা যায় কি না।
-
Thanks for sharing.