Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Football => Topic started by: Anuz on April 18, 2016, 11:24:26 AM

Title: বার্সেলোনার দুর্দশা চলছেই
Post by: Anuz on April 18, 2016, 11:24:26 AM
ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টাতেই বার্সেলোনারও সবকিছু যে উল্টে যাবে, কে জানত! যে দলটা প্রায় ছয় মাস ধরে অপরাজিত ছিল, তাদের কাছেই এখন জয় যেন দূর আকাশের তারা। যে দলটাকে মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী পরিবার, তাদেরই মনে হচ্ছে বিশ্বজগতের দুঃখীতম মানুষ। যে দলটার মুখে সব সময়ই ছিল হাসি, তাদের চোখেমুখে ধাঁধাগ্রস্ত এক বিহ্বলতা। বার্সেলোনা কাল নিজেদের মাঠে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হেরে গেল ২-১ গোলে, যে হার তাদের গতবার জেতা ত্রিমুকুটের আরও একটি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা প্রবল করে তুলল।

জিততে থাকলে যেমন সবকিছু দারুণভাবে টায়ে টায়ে লেগে যায়, হারলেই আবার ছবিটা উল্টো। এখন যেমন কিছুই যাচ্ছে না বার্সার পক্ষে। না হলে কাল কিন্তু দল খেলেছে দারুণ। তৈরি করেছে একের পর এক গোল-সম্ভাবনা। কিন্তু ওই যে বার্সা এখন ভূতে পাওয়া এক দল। না হলে ২৬ মিনিটে ইভান রাকিতিচ কেন কাল আত্মঘাতী গোল করবেন! যে গোলটা শোধ দিতে মরিয়া বার্সা প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পাল্টা আক্রমণে খেয়ে বসবে আরও এক গোল। ২-০–তে পিছিয়ে পড়ার পর ফিরে আসা কঠিন। বার্সা সেই কঠিন চ্যালেঞ্জে নুয়ে না পড়ে উজ্জীবিত লড়াই করল। কিন্তু লড়াইটাই শেষ কথা নয়। ভাগ্যটা পাশে না থাকলে লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড়কেও কখনো কখনো বড্ড সাদামাটা লাগে।
মেসি অবশ্য অনেক দিন পর যেন ধুলো ঝেড়ে উঠতে শুরু করেছেন। ফ্রি কিকগুলো এখনো ওয়ালে গিয়ে লাগলেও কাল ৬৩ মিনিটে দারুণ এক গোলে তিনিই ২-১ বানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ‘আত্মঘাতী’ রাকিতিচের প্রায় প্রায়শ্চিত্ত করে ফেলা দুর্দান্ত শটটা ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক ডিয়েগো আলভেস ​অমন অবিশ্বাস্যভাবে সেভ না করলে, গোলমুখের এক গজ সামনে থেকে শট নিয়েও জেরার্ড পিকে অবিশ্বাস্য মিসটা না করলে ফল অন্য রকম হতো। কিংবা প্রথমার্ধে মেসির বিরল হেডারটাও খুঁজে পেতে পারত ঠিকানা। কিন্তু এখন যে বার্সার কোনো কিছুই ঠিকমতো হবে না!
লিগে এর আগে টানা ২৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকা বার্সাই এবার হারল টানা ম্যাচে। শেষ কবে বার্সা টানা তিন ম্যাচ হেরেছে বলা মুশকিল। লিগে সর্বশেষ চার ম্যাচে জয় নেই। রেকর্ড টানা ৩৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকার পর ২ এপ্রিল এল ক্লাসিকো হেরেছে। তখন থেকেই শুরু বার্সার এই পরাজয়ের বৃত্তে আটকে থাকা। এর মাঝে চ্যাম্পিয়নস লিগে এক ম্যাচে ১০ জনের দলের অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় পেলেও ফিরতি লেগে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে চ্যাম্পিয়নদের বিদায়। লিগ শিরোপাও তারা ধরে রাখতে পারবে কি না, সেটি বোঝা যাবে সামনের কয় ম্যাচে।
বার্সা এখনো শীর্ষেই আছে। তাদের সমান ৭৬ পয়েন্ট অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের, স্প্যানিশ লিগের নিয়ম অনুযায়ী মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাবে এগিয়ে থাকায় সমান পয়েন্ট নিয়েও একে বার্সা। তিনে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭৫। লা লিগার রেসকে বলা হচ্ছিল ‘ওপেন’। এখন বলা হচ্ছে ‘ওয়াইড ওপেন’। অথচ মাদ্রিদের দুই দলের বিপক্ষে গত মাসেও বার্সা এমন ব্যবধানে এগিয়ে ছিল, পারলে যেন অনেকেই তখনই কাতালান ক্লাবটির হাতে লা লিগার ট্রফি ধরিয়ে দেয়! কিন্তু সিনেমার ক্লাইম্যাক্স যে তখনো বাকি!
এখন শেষ দৃশ্যে গুলিটা কার বুকে লাগে, সেটাই দেখার!