Daffodil International University

Faculties and Departments => Business & Entrepreneurship => Real Estate => Topic started by: BRE SALAM SONY on April 20, 2016, 11:47:56 AM

Title: ভূমিকম্পের আশঙ্কা : জনসচেতনতা বাড়াতে হবে
Post by: BRE SALAM SONY on April 20, 2016, 11:47:56 AM
ভূমিকম্পের আশঙ্কা : জনসচেতনতা বাড়াতে হবে

গত ১৬ এপ্রিল ভয়াবহ ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে গোটা দেশ তছনছ হয়ে গেছে। প্রাথমিক হিসাবে মারা গেছে ২৩৫ জন। আহত হয়েছে কয়েক হাজার। অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। যোগাযোগ ও বিদ্যুৎব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। সরকার ৬টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে উপকূলীয় এলাকায় ও প্রতিবেশী দেশ পেরুতে। জানা গেছে, ১৯৭৯ সালের পর এটিই ইকুয়েডরের সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প। গত ৪ ও ৫ এপ্রিল ভূমিকম্পপ্রবণ জাপানের দক্ষিণাঞ্চলে যথাক্রমে ৬ ও ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। একই সময়ে কম মাত্রার ভূমিকম্প আরো কয়েক দফা হয়েছে। প্রাণহানি খুব বেশি না হলেও বাড়িঘর ও সহায়-সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পে পুরো বাংলাদেশই প্রবল ঝাঁকুনি খেয়েছে। ৬ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে প্রাণহানি না ঘটলেও বেশ কিছু লোক আহত হয়েছে। চট্টগ্রামে বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হেলে পড়েছে বেশ কিছু ভবন। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দূরে মিয়ানমারে। এলাকাটি বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন। উৎপত্তিস্থল দূরে ও গভীরে থাকায় মিয়ানমারে ও বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ব্যতিক্রম হলে কী হতো বা হতে পারত জাপান ও ইকুয়েডরের ধ্বংসচিত্র থেকেই তা অনুমান করা যায়। মহান আল্লাহপাকের অশেষ করুণা ও রহমত এই যে, তিনি বড় ধরনের মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন। এ প্রসঙ্গে আমরা স্মরণ করতে পারি, গত বছর ২৫ এপ্রিল নেপালে ঘটে যাওয়া ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের কথা। ৭ দশমিক ৯ মাত্রায় ওই ভূমিকম্পে নেপাল ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ৯ হাজার মানুষ নিহত হয়। আহত হয় হাজার হাজার মানুষ। বাড়িঘর, স্থাপনা ও সম্পদের বেশুমার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য করছি, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প হচ্ছে। জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক বিন্যাসে অনাকাক্সিক্ষত পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত থাকার কারণে আগামীতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে অধিক ভূমিকম্পপ্রবণ স্থান ও এলাকায় ঘন ঘন ছোট-বড় ভূমিকম্প হতে পারে। তারা মনে করেন, ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের আভাস দেয়। তাদের বিবেচনায়, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আগামীতে ব্যাপক প্রাণ ও সম্পদহানিকর ভূমিকম্পের শিকারে পরিণত হতে পারে। এসব দেশে একের পর এক ছোট মাত্রার ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের সংকেত দিচ্ছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বিশ্বের অধিক ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার মধ্যে ভারতের উত্তর-পূবাঞ্চল, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অন্তর্ভুক্ত। অতীতে এই অঞ্চলে বহু বিপর্যয়কর ভূমিকম্প হয়েছে। ভবিষ্যতেও যে হতে পারে, তাতে এতটুকু দ্বিমত নেই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তাদের মতে, বাংলাদেশে ভূমিকম্প ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। যেকোনো মুহূর্তে এখানে ভূমিকম্পে মহাবিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। তারা মনে করেন, এর কারণ তিনটি টেকনোটিক প্লেট। ইন্ডিয়ান ও বার্মিজ মাইক্রোপ্লেটের মাঝখানে বাংলাদেশের অবস্থান। আর ইন্ডিয়ান প্লেটের পাশেই রয়েছে ইউরেশিয়ান প্লেট। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইন্ডিয়ান প্লেটটি উত্তর-পূর্ব দিকে বছরে ৬ সেন্টিমিটার করে সরে যাচ্ছে এবং ইউরেশিয়া প্লেটের মধ্যে ৪৫ মিলিমিটার করে ঢুকে যাচ্ছে। ওদিকে বার্মিজ প্লেটটি বছরে ৩৫ মিলিমিটার করে উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। তিন প্লেটের এই নড়চড়ার কারণে ফল্টগুলোর সক্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঞ্চলিকভাবে সক্রিয় এ ফল্টগুলো বাংলাদেশ ও তার সীমানার বাইরে মাঝারি থেকে বড় ভূমিকম্পের সৃষ্টি করতে পারে। বুয়েটের একজন অধ্যাপক পত্রিকান্তরে বলেছেন, হিমালয় ভূকম্পন বলয়ে উত্থান প্রক্রিয়া এখনো সক্রিয়। এ কারণে বাংলাদেশ ভূকম্পনপ্রবণ এলাকা হিসেবে গণ্য। ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকার ভূমির গঠন অস্থিতিশীল। এ মহানগরের পাশেই রয়েছে বেশ কয়েকটি অস্থিতিশীল ভূতাত্ত্বিক অঞ্চল। রয়েছে বেশ কয়েকটি ফল্ট। এগুলো থেকেই হতে পারে ভূমিকম্প। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলো, বলাই বাহুল্য, বাড়িঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে অত্যন্ত সতর্ক। ভূমিকম্পপরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায়ও তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট। এই উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তাও লক্ষ্যযোগ্য। এ দেশ কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্পের কবলে পড়লে কী যে বিপর্যয় ঘটবে, তা কল্পনাও করা যায় না। গত ১৩ তারিখের ভূমিকম্পে চট্টগ্রামে হাইরাইজ বিল্ডিংগুলো যেভাবে প্রবল ঝাঁকুনি খেয়েছে এবং কিছু বিল্ডিং যেভাবে হেলে পড়েছে তাতে এ আশঙ্কা প্রবল যে, উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হলে এগুলো ভূমিসাৎ, ধূলিসাৎ হতে সময় নেবে না। দেশের মহানগর ও বড় শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ঢাকা মহানগর। এর অবস্থা কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতের অভাব নেই। অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং যথাযথভাবে ভবন নির্মাণ না করায় হাজার হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। কারো মতে, ঢাকার ৭৮ হাজার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে এসব ভবন থাকবে না। কারো মতে, অন্তত ১০ শতাংশ ভবন ধসে যাবে। এত ভবন ধসে প্রাণহানি ঘটবে ব্যাপক। কারো মতে, তা ৮৮ হাজার। কারো মতে, দুই লাখ। কারো মতে, ঢাকা অগ্নিকু-ে পরিণত হবে। হয়ে যাবে জাপানের কোবে নগরের মতো। এসব মারাত্মক আশঙ্কার পরও আমাদের মধ্যে কোনো সচেতনতা জাগছে না। নগরকে ভারমুক্ত ও ভবনগুলোকে টেকসই করার কোনো উদ্যোগ নেই। কিভাবে নতুন নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে, তা উপযুক্ত উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কি না কিংবা ভূমিকম্পসহনীয় কি না তা দেখা হচ্ছে না। একই সঙ্গে দেশজুড়ে চলছে নানা অনাচার। নির্বিচারে পাহাড় ও বন ধ্বংস করা হচ্ছে। ভূগর্ভ থেকে যথেচ্ছ পানি তোলা হচ্ছে যাতে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। ভূমিকম্পের পর সুনামি প্রধান অনুষঙ্গ। ভূমিকম্পের পর সুনামি হলে সবকিছুই সাফ হয়ে যাবে। ভূমিকম্পের কারণ যেমন অজানা, তেমনি কখন কী মাত্রায় তা আপতিত হবে, তাও অজানা। এমতাবস্থায়, ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সে বিবেচনা থেকেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেয়া আবশ্যক। উপযুক্তভাবে বাড়িঘর নির্মাণ, উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা, আত্মরক্ষার উপায় ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা দরকার। একই সঙ্গে ভূমিকম্পপরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকা দরকার। সুনামি মোকাবিলার বিষয়টিও গুরুত্বে রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। জনগণকে সতর্ক ও সচেতন করে তোলা হলে ভূমিকম্প ও ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে অনেক কম হতে পারে। সরকারকে এসব বিষয়ে আরো সক্রিয় ও তৎপর হতে হবে।

www.hajjnews.com.bd
Title: Re: ভূমিকম্পের আশঙ্কা : জনসচেতনতা বাড়াতে হবে
Post by: Nujhat Anjum on May 04, 2016, 03:46:32 PM
Good post.