Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: Tofazzal.ns on May 08, 2016, 11:07:47 PM
-
২৩ এপ্রিল রাতে বাংলায় বলেছিলেন, ‘ভালো লাগছে।’ এদিন কী বলেন, সে প্রতীক্ষায় টিভি পর্দার দিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই। ম্যাচসেরা তো মুস্তাফিজুর রহমানই। কিন্তু পরশু আর তা হলো না, ম্যান অব দ্য ম্যাচ হিসেবে ঘোষিত হলো মুস্তাফিজের সতীর্থ ভুবনেশ্বর কুমারের নাম। যা একটু বিস্ময়ই জাগাল।
এই ম্যাচের আগে আইপিএলে মুস্তাফিজের সেরা বোলিং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে (৪-১-৯-২)। পরশুর ম্যাচের পরও ২৩ এপ্রিলের সেই পারফরম্যান্সই সেরা হয়ে থাকল। তবে পরশু সেটি নতুন করে লেখার সম্ভাবনা ভালোই জাগিয়েছিলেন। প্রথম বলেই উইকেট পেতে পারতেন, কিন্তু শিখর ধাওয়ান ক্যাচ ফেলে দেওয়ায় পেলেন না। চতুর্থ বলে কেন উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত ক্যাচে সে দুঃখ ঘুচল। মুস্তাফিজ এর পরও ধাঁধাই হয়ে থাকলেন ব্যাটসম্যানদের কাছে। কাটার, স্লোয়ার কিংবা হঠাৎ তীব্র গতি—পেস বোলিংয়ের অনুপম এক প্রদর্শনীতে প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ৯ রান। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই ফেরালেন রবীন্দ্র জাদেজাকেও। পঞ্চম বলে অ্যারন ফিঞ্চের ছক্কার পরও ওই ওভার থেকে রান এল মাত্র ৮। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট, এরপরও অন্য কেউ ম্যাচসেরা হন কী করে! ভুবনেশ্বরের ২ উইকেট যেখানে ২৮ রান খরচ করে।
ভুবনেশ্বরের পক্ষে যুক্তি হতে পারে, বোলিং ওপেন করতে এসেই মেডেন ওভার, পরের ২ ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছেন দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে অবশ্য তিনিও মুস্তাফিজের প্রশংসাতেই মাতলেন, ‘আমি বোলিং নিয়ে মুস্তাফিজকে কিছু বলতে যাই না। তাঁর স্লোয়ারগুলো ভয়ংকর। আর ওর কারণেই শেষ দিকে আমার ও নেহরার ওপর চাপ থাকে না।’
পরশু মুস্তাফিজের বাংলা শুনতে না পেলেও এ নিয়ে দারুণ মজা চলছে সানরাইজার্সের ড্রেসিংরুমে। দলের কোচ টম মুডি, অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ও মেন্টর ভিভিএস লক্ষ্মণ বাংলায় টুইট করেছেন। মুস্তাফিজের ইংরেজি বলতে না-পারা নিয়ে একটু বেশিই কথা হচ্ছে ভেবেই কি না ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুডি বলেছেন, ‘ওর ভাষা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সে ইংরেজিতে ঠিক স্বচ্ছন্দ নয়, আমরাও সেভাবে বাংলা বলতে পারি না। তবে ক্রিকেটের ভাষা সর্বজনীন, আমাদের তাই ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা হয় না।’
আইপিএল শুরুর আগেই মুডি বলেছিলেন, দলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে মুস্তাফিজের সমস্যা হবে না। প্রথম ম্যাচ থেকেই মুডির কথাকে ঠিক প্রমাণ করে যাচ্ছেন মুস্তাফিজ। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। তবে এটি খুব সামান্যই বোঝাতে পারছে মুস্তাফিজের প্রভাব। এই আইপিএলে কমপক্ষে ২০ ওভার করেছেন, এমন বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী মুস্তাফিজ (ওভারপ্রতি রান ৬.২৩)। বোলিং গড়ের বিচারে তৃতীয় (১৮.৭০)। বোলার মুস্তাফিজের আসল মহিমা অবশ্য অন্যখানে, যেভাবে ব্যাটসম্যানদের নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছেন, তা না দেখলে ঠিক বোঝানো যায় না।
বোলার মুস্তাফিজকে বিশ্ব দেখছে। মানুষ মুস্তাফিজকে দেখার সুযোগ পাচ্ছে শুধু তাঁর দলই। টম মুডি সেটিতেও মুগ্ধ, ‘মানুষ হিসেবে সে দারুণ। দলের সঙ্গে ভালো মানিয়ে নিয়েছে। খুব মজার ছেলে, রসবোধও দারুণ। সহজেই সবার সঙ্গে মিশে যায়। মাঠে সে যা করেছে, সেটা এরই মধ্যে সবার নজর কেড়েছে। আর মাঠের বাইরে সে যা করছে, সেটাও দলের জন্য দারুণ।’