Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: khyrul on May 14, 2016, 11:35:26 AM
-
সম্প্রতি আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। সাধারণত চৈত্র মাস থেকে শুরু করে গ্রীষ্ম মৌসুম জুড়ে (চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) ও আষাঢ়ের প্রথম দিক পর্যন্ত আকাশে অসংখ্য বজ্রপাত হয়ে থাকে। এ সময় বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর হারও স্বাভাবিক কারণে বেশি। আশঙ্কার বিষয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাকৃতিক ঘটনার মধ্যে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে।
বজ্রপাত সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণার তথ্যে জানা যায়, বিশ্বে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪০ বার বজ্রপাত হয়।
বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত এবং কী উচিৎ নয় এ বিষয়ে ধারণা থাকা খুবই জরুরি। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশের আগমুহূর্তে ঘন কালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে। রাস্তায় থাকাকালীন মেঘের আওয়াজ শুনলেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। পাকা বাড়িতে আশ্রয় বেশি নিরাপদ। গাড়ির ভেতরেও আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। গাছের নিচে, টেলিফোনের খুঁটির পাশে বা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটির পাশে দাঁড়ানো মোটেও নিরাপদ নয়। ফাঁকা মাঠের মধ্যে অবস্থান সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। পানির সংস্পর্শে মোটেই যাওয়া যাবে না। বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন না থামা পর্যন্ত নিরাপদে থাকা বাঞ্ছনীয়। বজ্রপাতের আওয়াজ শোনার আগেই তা মাটি স্পর্শ করে। সোজাসোজি মানুষের গায়ে পড়লে মৃত্যু অবধারিত। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে স্পর্শ করাও বিপজ্জনক। শুকনো কাঠ দিয়ে ধাক্কা দিতে হবে। ঝড়ের পূর্বাভাস দেখলে কখনও খোলা মাঠ, পাহাড়ের চূড়া, সমুদ্র সৈকতে অবস্থান করা মোটেও ঠিক নয়। কর্ডযুক্ত কোনো ফোন ব্যবহার করা যাবে না। বাড়ি নিরাপদ রাখতে আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত পানির ফোয়ারায় গোসল করা যাবে না। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে বিদ্যুতের সব সুইচ বন্ধ রাখতে হবে এবং দরজা-জানালা ভালোমতো বন্ধ রাখতে হবে।
বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালা স্পর্শ করা যাবে না। এ সময় ধাতববস্তু যেমন : বাড়ির ধাতবকল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। বজ্রপাতের সময় এগুলো স্পর্শ করেও বহু মানুষ আহত হয়। বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র যেমন টিভি, ফ্রিজ, পানির মোটর ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরা উচিত না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। বজ্রপাতের আগ মুহূর্তের লক্ষণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত। আশপাশে বজ্রপাত হওয়ার আগের মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে তা বোঝা যেতে পারে।
যেমন : বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অক্ষুন্ন রাখার জন্য বজ্রপাত প্রাকৃতিক চার্জ হিসেবে কাজ করে। তাই বজ্রপাতকে কখনোই প্রতিরোধ করা যাবে না। তবে উপস্থিত বুদ্ধি ও কৌশল জেনে সময়মতো কাজে লাগিয়ে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি সরকারের আবহাওয়া দফতর এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অধিক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। বিদেশে যেসব গবেষণা হয়েছে তাও আমরা কাজে লাগাতে পারি।
বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে তাদের নেয়া ব্যবস্থা আমরাও গ্রহণ করতে পারি। সে সঙ্গে বজ্রপাতের সময় নিজের জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে প্রধান সহায় হলো উপস্থিত বুদ্ধি ও সচেতনতাকে কাজে লাগানো। শুধু সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
বাংলাদেশ২৪অনলাইন/এএন
-
Thanks for sharing this informative post.