Daffodil International University

Bangladesh => Heritage/Culture => Topic started by: Lazminur Alam on July 12, 2016, 07:46:07 PM

Title: রুপাচিল
Post by: Lazminur Alam on July 12, 2016, 07:46:07 PM
সরষেখেতের মাথা ছুঁই ছুঁই করে সরলরেখায় উড়ে চলেছে পাখিটি। হলুদ কার্পেটের ওপর দিয়ে যেন উড়ে যাচ্ছে একটি খেলনা বিমান। পাখিটি চলেছে বাতাসের অনুকূলে, লেজটা তাই বাতাসের ঝাপটায় উল্টে যেতে চাইছে মাঝেমধ্যে। পাখিটির নজর নিচের দিকে। হঠাৎ শূন্যেই পাখার ব্রেক কষল, ছিটকে ওপরে উঠেই মোহনীয় ভঙ্গিতে একটা পাক খেয়ে মাটিতে নামল তিরবেগে। নখরে গেঁথে গেল গর্ত থেকে রোদ পোহাতে বেরোনো দুটি ধেনো ইঁদুরের পিচ্চি ছানা। খুশিতে পাখিটি ডেকে উঠল একবার। মাটিতে বসেই পুঁচকে ইঁদুর ছানা দুটি গিলে পাখিটি আবারও দিল উড়াল। চলতে চলতেই আবারও শূন্যে ব্রেক। পাক দিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ল একটি পোষা শিকারি ঘুঘুর খাঁচার ওপর। ঘুঘুর মালিক চৌদ্দ বছরের রাখাল বালক ‘খাঁচা-ফাঁদটি’ মাটিতে পেতে রেখেছিল এই আশায় যে, রোজ ভোরে ওখানে ঘুঘুরা নামে। এই পাখিটি খাঁচার ওপরে লাফালাফি করছে, ভেতরের ঘুঘুটা আতঙ্কে দাপাদাপি করছে। পাখিটি পা ফেলল ফাঁদে, ঝট করে জালবন্দী হয়ে গেল ওটা। বালক অদূরেই অপেক্ষায় ছিল। দৌড়ে এসে হাত দিয়ে ফাঁদ থেকে যেই না ধরেছে পাখিটিকে, অমনি বড়শি-ঠোঁটে কামড়ে ধরল ছেলেটির হাত। ভয় ও যন্ত্রণায় ছেলেটি দিল পাখিটিকে ছেড়ে। পাখিটি দ্রুত উড়ে পার হয়ে গেল সরষের মাঠ।

তুখোড় শিকারি এই পরিযায়ী পাখিটির নাম রুপাচিল, চিলেচিল, রাখাল ভুলানী। আরও স্থানীয় নাম আছে এটার। ইংরেজি নাম Pied Harrier। বৈজ্ঞানিক নাম Circus melanoleucos। শরীরের মাপ ৪০-৪৬ সেন্টিমিটার। ওজন ২৫৪ গ্রাম। শিকারি এই পাখি তাদের লম্বা পাখা দুখানা, পা ও লেজ ব্যবহার করতে পারে হাতের মতো। পলাতক শিকারকে এরা ফুটবলের মতো লাথি যেমন দিতে পারে, তেমনি মাথা দিয়ে হেড ও লেজ দিয়ে আঘাত করতে পারে। তীক্ষ দৃষ্টিশক্তি ও শিকার-কুশলতার কারণে এদের খাদ্য সংগ্রহে কষ্ট হয় না। বুকভরা সাহস এদের, চোখভরা রোষ। জাতভাই ট্যাপাচিল, নাচুনে বাজদের সঙ্গে অনেক সময় দ্বন্দ্ব লাগে এদের, একে অন্যে শিকার ছিনিয়ে নিতে চায়।

পাখিটি দেখতে সুন্দর। বিশেষ করে পুরুষটি। মাথা-গলা-ঘাড়-পিঠ চকচকে কালো, বুক-পেট-লেজের তলা ধাতব সাদা। দুই পাখার ডগার পালক কালো, উড়ন্ত অবস্থায় পাখিটিকে বেশি সুন্দর লাগে। ডানা রুপালি-ধূসর। পা কমলা-হলুদ। মূল খাদ্য এদের পোকা-পতঙ্গ-ইঁদুর-নানান প্রজাতির ঘাসফড়িং, ছোট পাখি, পাতিঘুঘুর ডিম-ছানা, তক্ষক, গিরগিটি। খোলা মাঠের এই শিকারি পাখিটিকে অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই দেখা যায়।
Title: Re: রুপাচিল
Post by: fahad.faisal on January 29, 2018, 05:57:29 PM
Thanks a lot for the informative post.