Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: Tofazzal.ns on August 06, 2016, 06:12:17 PM

Title: ১০ বছরে সাকিবের সেরা ১০
Post by: Tofazzal.ns on August 06, 2016, 06:12:17 PM
৬ আগস্ট ২০০৬, হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক সাকিব আল হাসানের। এক-দুই করে আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ১০ বছর পূর্ণ করলেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। দশক পূর্তিতে সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ১০ পারফরম্যান্স-

১০৮ ও ১/৩৪, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, এপ্রিল ২০০৮, মুলতান
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ১০৯ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে ৮ উইকেট। এক প্রান্ত আগলে রাখেন সাকিব। ৯ম উইকেট জুটিতে মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে গড়েন প্রতিরোধ। এই জুটিতে তোলা ৯৭ রানের সুবাদে বাংলাদেশ ২০০ পেরোয়। সাকিব খেলেন ১০৮ রানের লড়াকু এক ইনিংস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটি তাঁর দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ম্যাচটা বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে সাকিবের হাতেই।

৭/৩৬ প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, অক্টোবর ২০০৮, চট্টগ্রাম
এই ম্যাচটি সাকিবের হৃদয়ে আলাদা জায়গা পাবে নিশ্চিত। প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। যা এখনো টেস্টে সাকিবের সেরা বোলিং। ম্যাচে ১০ উইকেট পেতে পেতে পাননি। পেয়েছিলেন ৯ উইকেট। জ্বলে উঠেছিলেন ব্যাট হাতেও। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছিলেন ৭১ রানের দারুণ এক ইনিংস। চতুর্থ ইনিংসে নিউজিল্যান্ডকে ৩১৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তখন ফেবারিট মনে হচ্ছিল বাংলাদেশকেই। কিন্তু প্রায় একাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। ওই টেস্ট ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল ‘সাকিব বনাম ভেট্টোরি’ লড়াইয়ে। শেষ পর্যন্ত যাতে জয় হয় কিউই অধিনায়কের।

৯২* প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, জানুয়ারি ২০০৯, মিরপুর
সাকিবের কোন পারফরম্যান্সটা প্রথমেই মনে পড়ে—এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছিলেন, ‘আমার কাছে ওর সেরা ইনিংস শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯২ (২০০৯ সালে মিরপুরে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে)। এর পর ও ওয়ানডেতে এক শ করেছে, টেস্টেও করেছে। তার পরও ওই ইনিংসটাকে আমার আলাদা মনে হয়। কারণ এর পর থেকেই সাকিব নিজেকে অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। অন্য খেলোয়াড় হয়ে গেছে।’ অধিনায়কের এমন বিশ্লেষণের পর সেই ইনিংস নিয়ে নিশ্চয়ই নতুন করে বলার নেই। ৩১ ওভারে ১৪৮ রান তাড়া করতে নেমে ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর তীব্র চাপে লঙ্কান বোলারদের তুলাধুনা করেন সাকিব। দল পায় স্মরণীয় এক জয়।

৯৬* ও ৮/১২৯ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জুলাই ২০০৯, সেন্ট জর্জেস
গ্রেনাডা টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটি তো বটেই, প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে কোনো দলকে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা সেবারই প্রথম। দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টটি এতটাই সাকিবময় ছিল, দলের বাকিরা হয়ে গিয়েছিলেন পার্শ্বচরিত্র। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট। ২১৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৬৭ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ৯৭ বলে ৯৬ রানের সাকিবের ঝলমলে এক ইনিংস। ছক্কা মেরে ম্যাচের সমাপ্তিরেখা টানা—স্বপ্নের ম্যাচ বুঝি একেই বলে!

৪৯, ৯৬ ও ৪/১৫৫, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, মার্চ ২০১০, মিরপুর
সাকিবের কাছে এটি আক্ষেপের টেস্ট হয়ে থাকবে নিশ্চয়ই। প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি পাননি ১ রানের জন্য, দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হন সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে থেকে। বোলিংয়েও আফসোস আছে সাকিবের। প্রথম ইনিংসে আরেকটি উইকেট পেলেই হয়ে যেত ৫ উইকেট। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের চেয়ে সাকিবের বড় আক্ষেপ হতে পারে দারুণ লড়েও ম্যাচটা হেরে যাওয়ায়।

৫/১২১, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, জুন ২০১০, ওল্ড ট্রাফোর্ড
টেস্টটা বাংলাদেশ হেরে গিয়েছিল ৩ দিনেই। তবে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট মনে রাখতে ইংল্যান্ডের মাটিতে সাকিবের ৫ উইকেটের জন্যই। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের সুযোগই পাননি তিনি।

৫৮ ও ৪/৪১ , প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, অক্টোবর ২০১০, মিরপুর
সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয়বারের মত হারায় বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সাকিবের ৫৮ রানের সুবাদে বাংলাদেশ পায় ২২৮ রানের লড়াইয়ের পুঁজি। এর পর তাঁর ঘূর্ণিজাদুতে কিউইরা ব্যর্থ লক্ষ্যটা পেরোতে। ডি-এল পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পায় ৯ রানের দুর্দান্ত জয়।

১০৬ ও ৩/৫৪, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, অক্টোবর ২০১০, মিরপুর
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ও অলরাউন্ডার সাকিবের হাত ধরেই। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডকে ২৪২ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দুরন্ত সাকিব—৩ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে দেন বিরাট ধাক্কা। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি কিউইরা। নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়।

১৪৪ ও ৭/১২৯ প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ডিসেম্বর ২০১১, মিরপুর
এই টেস্ট দিয়ে সাকিব নিজেকে নিয়ে গেলেন নতুন এক উচ্চতায়। প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানের পর বোলিংয়েও উজ্জ্বল সাকিব, নিলেন ৬ উইকেট। ম্যাচে ৭ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই দুঃস্বপ্নের সিরিজে প্রাপ্তি ছিল সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। ওই ম্যাচের পর ওয়ানডের মতো টেস্ট অলরাউন্ডারদের র‌্যাঙ্কিংয়েও শীর্ষে ওঠেন সাকিব।

১৩৭ ও ১০/১২৪ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, নভেম্বর ২০১৪, খুলনা
১০ উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় ওঠে সাকিবের নাম। সেঞ্চুরি করেছিলেন প্রথম ইনিংসে। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট—টেস্ট ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ের এই পাতায় নাম ছিল শুধু দুজনের—ইয়ান বোথাম ও ইমরান খান। অনন্য অর্জনের সংক্ষিপ্ত এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সাকিব! তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে।