Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Topic started by: Karim Sarker(Sohel) on November 26, 2016, 09:01:12 PM
-
শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে আল্লাহতায়ালার ঘোষণা, ‘হে নবী! নিশ্চয়ই আপনি সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।’ - সূরা কলম: ৪
আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন বিশ্ব নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেছেন, সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী বলে। আল্লাহ তাকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উৎস ও সর্বোত্তম স্থান থেকে বাছাই করেছেন। তাকে শ্রেষ্ঠ গুণাবলি ও উত্তম চরিত্র দিয়ে পবিত্র করেছেন, অন্তরকে বিকশিত করেছেন, নিষ্পাপ বানিয়েছেন। সবক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন অসাধারণ।
নবী করিম (সা.)-তার নবুওয়তি জীবনে মানুষকে উল্লেখিত গুণের আলোকে গড়ে তুলতে কাজ করেছেন। কারণ, ইসলাম মনে চরিত্রবান মানুষ সে পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক, ধনী হোক কিংবা গরিব হোক তাকে দিয়ে কখনও ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা মানব সভ্যতার কোনো ক্ষতিসাধিত হয় না, হতে পারে না। সে সর্বদা মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখে।
কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, আজকের সমাজে চারিত্রিক উন্নতির ব্যাপারটিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বিত্তবৈভব আর সম্পদের উন্নতিই সমাজ উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। চারিত্রিক উন্নয়নের বিষয়টি পাঠ্যবইয়ের পাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
প্রকৃত বিষয় হলো- আজকের সমাজে যত অসঙ্গতি, অন্যায়, অবিচার চলছে তার মূলে রয়েছে মানুষের চারিত্রিক দুর্বলতা। যে মানুষটির চরিত্রে কলুষতা রয়েছে তাকে দিয়েই সমাজে নিকৃষ্ট কাজগুলো সম্পাদিত হয়। নিষ্কলুষ মানুষের মাধ্যমে কখনও এমনটি ঘটে না।
একজন সম্মানিত শিক্ষকের প্রতি ছাত্রদের শ্রদ্ধা থাকবে, ভক্তি থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানে দেখি ছাত্রদের হাতে শিক্ষকের লাঞ্ছিত হওয়ার লজ্জাজনক ঘটনা। অন্যদিকে বাবা-মার প্রতি সন্তানদের অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা-ভালোবাসা থাকারই কথা। সেখানে সন্তানের হাতে বাবা-মার নৃশংস হত্যার ঘটনায় আমরা আতংকিত হই; বিমর্ষ হই। এ ঘটনাগুলোর সূত্রপাত কিন্তু একদিনে ঘটেনি। মানব সমাজের চারিত্রিক অবক্ষয় আর নৈতিক বিপর্যয়ই মূলত এর জন্য দায়ী।
উল্লিখিত ঘটনাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমরা আমাদের সন্তানদের চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলতে যত্নবান হইনি। আমাদের বহু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। এজন্যই তো মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) চরিত্রবান মানুষের প্রশংসায় বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে চরিত্রবান মানুষই সর্বোত্তম।’ –কানজুল উম্মাল
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আর ইরশাদ করেছেন, উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে মানুষ অবিরাম নামাজি এবং রোজাদারের মর্যাদা পেয়ে থাকেন। -সুনানে আবু দাউদ
একজন চরিত্রবান মানুষ সর্বদা অন্য মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন। ছোটদের স্নেহ করেন আর জ্ঞানী-গুণীদের সম্মান করেন। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কখনও তিনি বিরূপ আচরণ করেন না। আমরা যদি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র জীবনী সামনে রাখি তাহলে সেখানে দেখতে পাব জীবনের পরতে পরতে চারিত্রিক উৎকর্ষের এক সমুজ্জল নমুনা তিনি।
তাইতো আমরা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে দেখতে পাই সমাজের সত্য, ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী একজন মূর্তপ্রতীক হিসেবে। তাকে আমরা দেখি সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত, বঞ্চিত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ত্রাণকর্তা হিসেবে।
আমরা প্রিয়নবী (সা.) কে আরও দেখতে পাই লাঞ্ছিত, অবহেলিত নারী সমাজের মুক্তির দূত হিসেবে। বাবা-মার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার শিক্ষা আমরা রাসূল (সা.)-এর পবিত্র জীবন থেকেই পাই।
আজকের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অন্যায়, অবিচার, বৈষম্য, নারী নির্যাতন, হত্যা, গুম ও মাদকের ব্যাপকতা ঝেঁকে বসেছে, সেখান থেকে সমাজকে প্রকৃত উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হলে সমাজের প্রতিটি মানুষকে সৎ চরিত্রবান হতে হবে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে চরিত্রবান নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সৎ চরিত্রবানরাই পারে একটি আদর্শ সুন্দর আলোকিত সমাজ উপহার দিতে।
Collected -
-
nice
-
চরিত্রবান মানুষকে আজকাল মর্যাদাই দেয়া হয়না। যতদিন এই কালচার চলতে থাকবে ততদিন উন্নতি আশা করা দুরুহ।